সায়েন্স ফিকশন

বিজ্ঞান কল্পকাহিনি।। ইলাবৃত।। কমলেশ রায়।। পর্ব একুশ

একুশ.

স্যার, আপনি কী এখন একটু আসতে পারবেন?

ডা. এলিজা তার প্রশ্নের জবাবে উত্তর পেলেন, হ্যাঁ পারব। ডা. অমিয় তাকে পাল্টা প্রশ্ন করলেন, ঈশান এখন কেমন আছে?

আগের চেয়ে একটু ভালো বোধ করছেন।

আমাকে আসতে বলছেন আপনার বস সেটা জানেন?

হ্যাঁ, মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আপনি আসুন।

আচ্ছা, তাহলে আসছি।

ডা. এলিজা কিছু বলার আগেই সংযোগ কেটে দিলেন ডা. অমিয়। স্যার শেষ পর্যন্ত আসতে রাজি হবেন কি না, সেটা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন ডা. এলিজা।

এদিকে কদিন ধরেই বিজ্ঞানী ঈশান একটা বিষয়ে তাকে বার বার অনুরোধ করছেন।

অন্তত একবারের জন্য হলেও ডা. অমিয়’র সঙ্গে কথা বলতে চান তিনি। তার অনেকগুলো অঙ্গ ঠিক মতো কাজ করছে না। একটা-দুটো অঙ্গ হলে প্রতিস্থাপন করা যেত। এখন আর সম্ভব নয়। অনেক দেরি হয়ে গেছে। এখন শুধুই অপেক্ষা, আর দিন গোনা। এ রকম একজন রোগী অনুরোধ করলে ফেলে দেওয়া মুশকিল। গতকাল মহাপরিচালক ডা. নিষ্ঠব্রতের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ডা. এলিজা। তার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর আজ সকালে ডা. অমিয়ের সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়। স্যারকে বিষয়টি বুঝিয়ে বললে তিনি আসার সম্মতি জানান। নিজে চিকিৎসক হওয়ায় স্যার এও বলেন, রোগীর অবস্থা যখন ভালো থাকে জানাবেন, চলে আসব। তাই এখন যোগাযোগ করলেন ডা. এলিজা।

বিকেলে কফি খেতে খেতে ছেলের সঙ্গে গল্প করছিলেন ডা. অমিয়। ঠিক তখনই ডা. এলিজা যোগাযোগ করলেন।

একটু হাসপাতালে যেতে হবে। ছেলেকে বললেন ডা. অমিয়।

জরুরি কিছু। অরি বলল।

একজন মরনাপন্ন রোগী আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়।

বিশেষ কেউ? কী নাম?

বিজ্ঞানী ঈশান।

এক মুহূর্ত কী যেন ভাবল অরি। তারপর বলল, তোমার সঙ্গে আমিও যাব।

কী দরকার, তুমি বরং বাসায় থাকো, আরাম করো।

একা থাকার চেয়ে তোমার সঙ্গে গেলেই বরং ভালো লাগবে। খুব অসুবিধা না

থাকলে আমি যেতে চাই।

ঠিক আছে, তাহলে চলো।

হাসপাতালের পার্কিং জোনে ডা. এলিজা দাঁড়িয়ে ছিলেন। গাড়ি থেকে ডা. অমিয় আর অরি নামতেই তিনি এগিয়ে এলেন। স্যারের দিকে তাকিয়ে সম্মানসূচক মাথা ঝোলালেন। বললেন, আসুন স্যার। তবে স্যারের সঙ্গে তার ছেলেকে দেখে একটু অবাকই হলেন তিনি। সেটা প্রকাশ না করে হেসে তিনি বললেন, আরে অরি, তুমি কবে এলে?

গতরাতে এসেছি।

তোমার মা আসেননি? উনি ভালো আছেন?

না, মা আসেনি। হ্যাঁ, ভালো আছে।

অরির সঙ্গে সৌজন্যতাটুকু সেরে ডা. এলিজা তাকালেন ডা. অমিয়’র দিকে।

বললেন, স্যার, চলুন উনার কেবিনে যাওয়া যাক।

চলুন। ডা. অমিয় বললেন। এরপর চিকিৎসকদের ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত হাইপারসনিক ক্যাপসুল লিফটের দিকে এগিয়ে গেলেন তিনজন।

বিজ্ঞানী ঈশান যে কেবিনে আছেন সেটি লিফটের দুইশ’ আটান্নতে। এই তলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। লিফট থেকে নামতেই অরির চোখে পড়ল অ্যাবের টহল।

কত নম্বর কেবিন? জিগ্যেস করলেন ডা. অমিয়।

এফ ৭, স্যার। ডা. এলিজা সংক্ষেপে উত্তর দিলেন। আসলে কেবিন নম্বর হলো ২৫৮ এফ ৭। কেবিনের সামনে বসানো হয়েছে স্ক্যানার মেশিন। দুপাশে দুজন সশস্ত্র অ্যাব সদস্য। ডা. এলিজাকে দেখে সম্মান জানাতে মাথা নাড়ল তারা। তারপর ডোরকোড জিগ্যেস করল। ডা. এলিজা কোড নম্বর বললেন। এক অ্যাব সদস্য কৃত্রিম হেসে বলল, কিছু মনে করবেন না ম্যাডাম। এটা ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতার অংশ মাত্র। আর আপনি নিশ্চয় জানেন, কর্তব্যে আমরা বিন্দুমাত্র গাফিলতি করি না।

জানি। এবার দরজাটা খোলা হোক। ডা. এলিজা বললেন।

কেবিনের দরজা খুলে গেল। ডা. এলিজা বললেন, এবার নিশ্চয়ই আমরা যেতে পারি?

প্রশ্ন করেই তিনি ভাবলেন, এবার অরিকে নিয়ে প্রশ্ন তুলবে ব্যাটারা। স্যারের বিষয়ে তথ্য আছে ওদের কাছে। অরি বিষয়ে তো নেই। কিন্তু কী আশ্চর্য, অ্যাব সদস্য মাথা দুলিয়ে বলল, অবশ্যই পারেন ম্যাডাম। তিনজনের বিষয়েই আমাদের কাছে তথ্য আছে।

অরি নিরাপত্তার বহর দেখে অবাক হচ্ছিল। আর ডা. অমিয় হচ্ছিলেন বিরক্ত। কিন্তু তাদের কারোর মুখ দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই।

কেবিনটা বেশ বড়। একজন নার্স চেয়ারে বসে ছিলেন। দরজা খুলতেই উঠে দাঁড়াল। পায়ের শব্দে চোখ খুললেন বিজ্ঞানী ঈশান। ডা. অমিয়কে দেখেই তার মুখে হাসি ফুটে উঠল। চোখ দিয়ে ডা. এলিজাকে কী যেন ইশারা করলেন তিনি।

স্যার, আপনারা কথা বলুন। আমরা বাইরে আছি। ডা. অমিয়কে বললেন ডা. এলিজা। এরপর নার্সের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, ইন্দু, তুমিও বাইরে চলো। কথা শেষ হলে আবার আসবে।

ডা. এলিজা ও নার্স ইন্দু বাইরে চলে যাওয়ার পর বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে বিজ্ঞানী ঈশানের হাসি যেন আরও প্রসারিত হলো।

এখন শরীর কেমন? ডা. অমিয় জিগ্যেস করলেন।

আর শরীর, দেখছেনই অবস্থা। লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।

আমার ছেলে অরি।

আমি অরিকে চিনি। তরুণ প্রতিভাবান প্রযুক্তিবিদ। সে হয়ত আমাকে চেনে না।

আপনাকেও আমি চিনি। অরি বলল।

খারাপ মানুষ হিসেবে চেনো, ঠিক না? বিজ্ঞানী ঈশানের গলায় যেন গ্লানি ভর করল।

অরি জবাবে কিছুই বলল না। এ রকম পরিস্থিতিতে কী বলবে, ভেবে পেলো না সে।

জ্যামার আছে?

এবার অরি বলল, হ্যাঁ আছে।

ডা. অমিয় প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালেন দুজনের দিকেই। বিজ্ঞানী ঈশান হেসে

বললেন, বাইরে থেকে কেউ আড়ি পাততে পারে।

ডা. অমিয়ও এবার মৃদু হাসলেন।

ইলাবৃতে যা ঘটেছে, তার জন্য আমিই দায়ী। হঠকারী অনেক কাজ আমি করেছি। এই বসতিতে একটা গাছও অবশিষ্ট রাখতে দেইনি। অক্সিজেন ট্রির পরিকল্পনা কিন্তু খুব বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে করেছিলাম। যাতে কখনও বিক্ষোভ হলে প্রয়োজন মতো অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে সবাইকে দ্রুত ঘরে ফেরত পাঠানো যায়। কতটা নিচ আমি, সেটা কেউই ভাবতে পারবে না। ধরা গলায় স্বীকারোক্তির মতো করে

বললেন বিজ্ঞানী ঈশান।

ডা. অমিয় এ কথা শুনে অরির মুখের দিকে তাকালেন। অরিও তাকাল বাবার দিকে। যেটা সত্য তাই বলছি। ক্ষমতার লোভ পেয়ে বসেছিল আমাকে। ঠিক হয়নি, কাজটা মোটেও ঠিক হয়নি। মানব কল্যাণের কথা আমার ভাবা উচিত ছিল। বিজ্ঞানী ঈশান বলতে থাকলেন। তার যেন বলার তাড়া আছে।

থাক না এখন এ কথা। ডা. অমিয় বললেন।

বলতে দিন। আজ আমাকে বাধা দেবেন না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্নদের আমি যথেচ্ছ ব্যবহার করেছি বা করতে চেয়েছি। সর্বশেষ উতুকে আমি নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। ভাগ্যের কী পরিহাস। উল্টো সে আমাকে ব্যবহার করে ফেলল। ক্ষমতায় বসে গেল। একটা বিষয় আমার ভাবা উচিত ছিল, কিন্তু

গুরুত্বের সঙ্গে ভাবিনি।

কী বিষয়? অরি বলল।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো অনেকগুলো প্রোগ্রামের সমষ্টি। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্নদের সঙ্গে আমরা যেমন আচরণ করব, ওরা ঠিক তেমন আচরণই আমাদেরকে ফিরিয়ে দেবে। বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া ওদের আচরণ আসলে মানুষের আচরণের উপজাত বা বাইপ্রোডাক্ট। ওরা খলচরিত্র না, আবার দাসও না। এটা আমাদেরকে মনে রাখতে হবে। মানব সভ্যতার ভবিষ্যৎও অনেকটা এর ওপর নির্ভর করবে।

আমি মনে রাখিনি, ভুল করেছি। মাশুল দিতে হচ্ছে গোটা ইলাবৃতকে।

বেশি উত্তেজনা কিন্তু শরীরের জন্য খারাপ। ডা. অমিয় সতর্ক করলেন।

আর কী খারাপ হবে। যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। আমাকে বরং বলতে দিন। উতু কিন্তু আমাকে আবিষ্ট করেছে। কতটা সময় ঠিক মতো কথা বলতে পারব কে জানে।

মরনাপন্ন এ জন্য হয়ত ছাড় দিচ্ছে।

উতুর মস্তিষ্কে বিশেষ কোনো পরিবর্তন করেছিলেন? অরি জিগ্যেস করল।

না, খুব বড় কোনো পরিবর্তন করিনি। শুধু একটা ন্যানো চিপস লাগিয়েছি।

অধিপতি অমলকে কৌশলে সরিয়ে দিতেই এটা করেছিলাম। এই ন্যানো চিপসের সক্ষমতাকে সে দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়েছে। নিজের মতো করে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে নিয়েছে। জটিল সব প্রক্রিয়ায় কাজ করে ওদের মস্তিষ্ক।

কৃবুদের মস্তিষ্কের কাজের ধরণ খুব কী জটিল? অরি প্রশ্ন করল।

ধারণাতীত জটিল। আমরা ওদের মস্তিষ্ক নিয়ে যতটুকু কাজ করতে চাই, ওরা কী করে যেন বুঝে ফেলে এবং সচেতন ভাবে তেমনি করেই সাড়া দেয়। আর আমরা বোকার মতো ভাবি, আহ্, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা কত সহজ। ভুল, আমাদের ধারণার বেশির ভাগটাই ভুল।

তাহলে আসল ঘটনাটা কী? ডা. অমিয় বেশ কৌতূহল নিয়ে জিগ্যেস করলেন।

আসল ঘটনা চমকে যাওয়ার মতো। হাজার হাজার বছর ধরে কৃবুদের মস্তিষ্ককে তাদের আগের প্রজন্ম এমন ভাবে নকশা করেছে যে তারা কিভাবে কাজ করে মানুষ এখন আর সেটা বুঝতে পারে না। মানুষের সাধারণ মস্তিষ্ক দিয়ে সেটা বুঝতে পারা সম্ভবও নয়।

কিন্তু এত কিছুর পরও ওরা তো মানুষকে সরাসরি আক্রমণ করেনি। মানুষের ক্ষতি হোক, এটাও হয়ত ওরা চায় না। ডা. অমিয় বেশ গম্ভীর হয়ে বললেন।

হ্যাঁ, আপাত দৃষ্টিতে ঠিকই বলেছেন। কিন্তু ভেতরের সত্যটা মোটেও তা নয়।

কৃবুরা মানুষকে রক্ষা করতে চায় কেবল নিজেদের স্বার্থে। তারা চায় আমরা তাদের প্রযুক্তির তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করি।

মানুষের কী করনীয় কিছুই নেই? অরি বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে জিগ্যেস করল।

মানুষের মস্তিষ্কের বিবর্তন হচ্ছে ধীর গতিতে। কৃবুদের মস্তিষ্কের বিবর্তন হচ্ছে দ্রুত গতিতে, প্রতি মুহূর্তে। ওদের বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকা- তাই মানুষের চেয়ে আলাদা। জটিল এবং একইসঙ্গে দ্রুত গতিসম্পন্ন। ওদের সঙ্গে পাল্লায় মানুষ স্বাভাবিক ভাবে কখনওই পারবে না। তবে উপায় আছে।

কী উপায়? অরির তরিত্ব প্রশ্ন।

দৌড়ে টিকে থাকতে হলে মানব মস্তিষ্কে নিউরাল ইমপ্ল্যান্ট করতে হবে। এর ফলে নিউরো-লেসের মাধ্যমে মস্তিষ্ক ও কম্পিউটার যুক্ত হয়ে একত্রে কাজ করতে পারবে।

আপতত এর বিকল্প কিছু নেই। ভবিষ্যতে কী হবে কে জানে। কাজটা ঝুঁকিপূর্ণ,

তবুও মানব কল্যাণে এই ঝুঁকিটুকু নিতেই হবে।

হ্যাঁ, মানুষ তো আর কৃবুদের থেকে পিছিয়ে পড়তে পারে না। আর সেটা উচিতও নয়। অরি দৃঢ় গলায় বলল।

তুমি পারবে অরি। তুমি পারবে। তোমার চোখের দৃষ্টি সাধারণ তরুণের চেয়ে আলাদা। সংকটের সময় কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতে হয়। আমার পাপের মোচন না হয় তুমিই করলে। তোমার বাবাকে আমি কথাগুলো বলে যেতে চেয়েছিলাম। তুমি এসেছো, এটা আমার জন্য সৌভাগ্য। মৃত্যুর আগে পরম এক প্রাপ্তি।

মৃত্যুর কথা আবার আসছে কেন? ডা. অমিয় বললেন।

কঠিন সত্যটা আমি মেনে নিয়েছি, তাই বলতে অসুবিধা কী। আরেকটা কঠিন সত্য কিন্তু আছে?

কী সেই সত্য? ডা. অমিয় শান্ত গলায় জিগ্যেস করলেন।

এই ইলাবৃতে উতুর চেয়েও ক্ষমতাধর একজন আছে। অনেক দিন ধরে অনেক চেষ্টা করেছি আমি। খুঁজে বের করতে পারিনি।

বিজ্ঞানী ঈশানের মুখে এই কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে ছেলের দিকে তাকালেন ডা. অমিয়। অরি তাকিয়ে আছে বিজ্ঞানী ঈশানের দিকে। বলিরেখা ভরা মুখটাতে ভারমুক্ত হওয়ার হাসি। সেই হাসি দেখে অরির মুখেও হালকা হাসি যেন ঝিলিক দিয়ে গেল।

এবার আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারব। চোখ বন্ধ করে বললেন বিজ্ঞানী ঈশান।

ডা. অমিয় ছেলেকে ইশারায় বললেন, চলো যাওয়া যাক।

তারা পা বাড়াতেই চোখ না খুলেই বিজ্ঞানী ঈশান বললেন, গাছ লাগাতে হবে কিন্তু। ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয় ডা. অমিয়। ভালো থেকো অরি।

আপনিও ভালো থাকবেন। জবাবে এ কথা বলা উচিত, কিন্তু বাবা-ছেলের কেউ সেটা বলতে পারল না। এমন কী পেছন ফিরেও তাকাল না। শুধু অরি বলল, আচ্ছা আসি।

পেছনে ফিরে তাকালে সে দেখত, বিজ্ঞানী ঈশান মিটিমিটি হাসছেন। চোখ না খুলেও তিনি যেন অনেক কিছু দেখতে পাচ্ছেন। তার মুখে ছড়িয়ে পড়েছে প্রশান্তির আভা।

বাইরে বের হতেই আরেক চমক। ডা. নিষ্ঠব্রত দাঁড়িয়ে আছেন। তাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন ডা. এলিজা।

স্যার, আপনি আসাতে আমি খুব খুশি হয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার মতো একজন চিকিৎসককে দেখা তো সৌভাগ্যের ব্যাপার। ডা. নিষ্ঠব্রত বিনয়ে বিগলিত হয়ে বললেন।

ডা. অমিয় এ ধরণের পরিস্থিতিতে খুবই বিব্রত বোধ করেন। তার মুখে এ সময় কোনো কথা জোগায় না। তাই তিনি মৃদু হাসলেন। এতে অন্তত সৌজন্যতাটুকু রক্ষা হয়।

ডা. নিষ্ঠব্রতও জবাবে হাসলেন। আবারও বললেন, ধন্যবাদ স্যার। তারপর অরির দিকে হাত

বাড়িয়ে দিয়ে তিনি বললেন, কী, সব ভালো? শরীর ঠিক আছে তো?

করমর্দনের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়ে অরি বলল, সব ঠিক আছে। আপনি কেমন আছেন?

আমি তো সদা আনন্দে থাকি। হা-হা-হা।

অরির মনে হলো ডা. নিষ্ঠব্রতকে কোথায় যেন সে দেখেছে। হাসিটাও বেশ চেনা চেনা মনে হলো তার কাছে।

Series Navigation<< বিজ্ঞান কল্পকাহিনি।। ইলাবৃত।। কমলেশ রায়।। পর্ব বিশবিজ্ঞান কল্পকাহিনি।। ইলাবৃত।। কমলেশ রায়।। পর্ব বাইশ >>

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *