উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব বাইশ
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। প্রথম পর্ব
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব দুই
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব তৃতীয়
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব চর্তুথ
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব পাঁচ
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব ছয়
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব সাত
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব আট
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব নয়
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব দশ
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব এগারো
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব বারো
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব তেরো
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব চৌদ্দ
- উপন্যাস।। সেলিনা হোসেন ।। মগ্ন চৈতন্য শিস ।। পর্ব পনেরো
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।।সেলিনা হোসেন।। পর্ব ষোল
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব সতেরো
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব আঠারো
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব উনিশ
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব বিশ
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব একুশ
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব বাইশ
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব তেইশ
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব চব্বিশ
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব পঁচিশ
- উপন্যাস।। মগ্ন চৈতন্যে শিস।। সেলিনা হোসেন।। পর্ব ছাব্বিশ
কি রে, কি ভাবছিস? চা জুড়িয়ে ঠাণ্ডা। সিগারেট টেনেছিস বলেও তাে মনে হয় না। আমি হাসলাম। রেজা আবার চা আনতে বললাে। আমার মুখটা তেতাে হয়ে গেছে। কিছু ভালাে লাগছে না। হঠাৎ রেজা বললাে, জামেরী, একটা মেয়ে দেখ না বিয়েটা সেরে ফেলি। আমার দেখায় তুই বিয়ে করবি কেন? পরস্পরের জানাশােনা না থাকলে বিয়েটা আমার ভীষণ হাস্যকর মনে হয় রেজা। তুই কি করে বুঝবি যে, যাকে তুই বিয়ে করছিস তার মন-মেজাজের সঙ্গে তাের মন-মেজাজ খাপ খাবে? সে একান্তই তাের বাধ্যগত হবে?
উঃ বক্তৃতা থামা। তাের কথা সব বুঝলাম। কিন্তু জানাশােনা করার মতাে সময় আমার কই?
সময় না থাকলে মুখে বুড়াে আঙ্গুল পুরে চুপচাপ থাক।
একদম হৃদয়হীনের মতাে কথা বলছিস। বুঝেছি, তােকে দিয়ে হবে না। অন্য কাউকে ধরতে হবে।
তাই ধর।
তাের কি খবর বল? আর কতকাল ঝুলে থাকবি?
ঝােলাঝুলি এবার শেষ করছি। সামনের মাসের দশ তারিখ বিয়ে।
কনগ্রাচুলেশন।
রেজা আমাকে জড়িয়ে ধরলাে। রেজার বুকের উত্তাপে বড় আরাম পেলাম। মাঝে মাঝে বডড হতাশ হয়ে যাই। তখন এ ধরনের অনুপ্রেরণায় উৎসাহ পাই। তাের বিয়ের খবর আমার নিজেরই খুশি লাগছে জামেরী। ভাবতে ইচ্ছে করছে। যে, খবরটা তাের নয়, আমার।
আমি হাে হাে করে হাসি। রেজার সরলতা আমাকে নির্মল আনন্দ দেয়।
চল, ওয়ার্ডে ঘুরে আসি।
ওয়ার্ডে হাঁটতে হাঁটতে আমার মনে হয়, সব রােগীর চেহারা আজ আমি অন্যরকম দেখছি। সবার মুখে যেন একটা আলগা খুশির আমেজ। এমনকি স্যালাইন দেয়া অচেতন রােগীর মুখটিও। রেজা প্রতিটি রােগীর খবরাখবর নিচ্ছে কেউ শুধু মাথা নেড়ে জবাব দিচ্ছে। কেউ ডাক্তার পেয়ে গল গল করে কথা বলতে চাচ্ছে। কষ্টের কথা। শারীরিক যন্ত্রণার কথা। কবে ছাড়া পাবে, তার কথা। আমি চেয়ে চেয়ে দেখি। কথা বলি না।বেরিয়ে এসে রেজা একটু অবাক হয়, তুই আজ
একটা কথাও বললি না যে?
আজ আমার দেখতেই ভালাে লাগছিলাে রেজা। সবার চেহারায় আমি যেন নতুন জন্মের আলাে দেখেছি, ওরা কেউ অসুস্থ নয়।
পাগল।
রেজা হাসলাে। ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমি যখন পথে নামলাম, তখন পড়ন্ত বিকেল। সারাদিনের গুমােটের পর এখন ফুরফুরে বাতাস বইছে। অক্টোবরের মাঝামাঝি। দিন ছােট হচ্ছে। অথচ সে তুলনায় ঠাণ্ডা পড়েনি। রিকশা নিলাম অফিসে যাবার জন্যে। আমার কথায় রেজা আমাকে পাগল বললাে। আসলে ও বুঝতে পারলাে না এমনি করেই আমরা দুঃখ থেকে পালাই। অন্ত পালাতে ভালােবাসি। এমন করে কখনাে কখনাে অন্য কোথাও আশ্রয় নিলে জীবনটা বােঝা মনে হয় না। যাদের আমি হাসপাতালে দেখে এসেছি, তারা কেউ কেউ মরে যাবে। কেউ ভালাে হবে। অথচ সবাইকে আমার সুস্থ ভাবতে ভালাে লাগলাে। এই ভালাে লাগাটাই আমার ক্ষণিকের মুক্তি। বেঁচে থাকার টুকরাে টুকরাে দ্বীপ। এই সমস্ত সবুজ দ্বীপের সমন্বয় আমাদের আলাে দেয়, হাওয়া দেয়, অলৌকিক গান শােনায়। আমরা সেই গানের আকর্ষণে পাগলের মতাে ছুটি। তখন মনে হলাে রেজা এক অর্থে পাগল শব্দটা ঠিকই ব্যবহার করেছে। কখনাে কখনাে পাগল হওয়া আমাদের জন্যে ভীষণ প্রয়ােজন।
শুক্রবার দশটার দিকে মিতুলকে নিয়ে বেরুলাম। ওকে কেমন ক্লান্ত দেখাচ্ছে। চোখ বসে গেছে। চোখের নিচে স্পষ্ট কালাে দাগ। ও যেন বহুকাল ধরে জেগে ডিউটি করছে। ও যেন অনন্তকালের হাসপাতালের নার্স। তাই চেহারায় অমন ক্লান্তির পলেস্তারা। আমার মন খারাপ হয়ে গেলাে। ও আমার দিকে তাকিয়ে কেমন ফিকে হাসলাে। রােদ-ঝকমক ভর দুপুরের ছায়া সে হাসিতে নেই। রিকশায় ও আমার সঙ্গে বেশি কথা বললাে না। আমার দু’একটা প্রশ্নের উত্তরে মাথা নাড়ালাে কেবল। বাসার সামনে রিকশা থামতেই বললাে, আমার বুকটা জানি কেমন করছে জামী।
ও কিছু না। এসাে।
জামী, আমি বুঝতে পারছি না, আমি কেন এলাম?
আঃ মিতুল, এখন ওসব ভেবাে না।
দরজার কড়া নাড়লাম। সেই ছেলােটি এসে দরজা খুলে দিলাে। আমরা দুজনে বসলাম। মিতুল ঘরের চারদিকে একটু নিস্পৃহ দৃষ্টিতে তাকালাে। ওষুধের শিশি দেখলাে, ক্যালেন্ডার দেখলাে, বিবর্ণ পর্দা দেখলাে। ভদ্রমহিলা এলেন। আমরা দুজনে উঠে দাঁড়ালাম। মিতুলকে দেখে থমকে গেলেন প্রথমে। সঙ্গে সঙ্গে সেটা কাটিয়ে সপ্রতিভ হবার চেষ্টা করলেন। আমি বললাম, ও মিতুল।
বসাে। তিনজনে বসলাম। মিতুলের দৃষ্টি বিবর্ণ পর্দার গায়ে। লক্ষ্য করলাম, ওর ঠোট কাঁপছে। ভদ্রমহিলা মিতুলকে দেখছেন। তাঁর প্রতিক্রিয়া বুঝতে পারছি না। আমি পরিবেশ হালকা করার জন্যে বললাম, আপনার সঙ্গে একবার দেখা না করলে মিতুলের সঙ্গে আমার বিয়েটা হয় না, এ জন্যে ওকে নিয়ে এলাম।
কেন?
ভদ্রমহিলা গম্ভীর মুখে ভুরু কোঁচকালেন।
এটা ওর শর্ত।
আমি একা হাসলাম। জোর করে হাসা। ওরা দুজনে আড়ষ্ট। আমি অস্বস্তিতে পড়লাম। মিতুল কেন কথা বলছে না? যাকে কেন্দ্র করে ওর এত আবেগ, তাঁকে
সামনে পেয়ে ও এমন চুপ কেন? ভদ্রমহিলা বরাবরই কম কথা বলেন। তাঁর দিক থেকে আমি তেমন উচ্ছাস আশা করি না। কিন্তু মিতুল আমাকে বিপদে ফেললাে। ও এমন নির্বিকার হয়ে যাবে, আমি ভাবতে পারিনি।
তােমরা বসাে। আমি চা নিয়ে আসি।
ভদ্রমহিলা আজ আমাকে তুমি বলছেন।
না, চা খাবাে না। জামী, চলাে যাই।
মিতুল উঠে দাঁড়ালাে।
সে কি, আর একটু বসাে না।
না। চলাে।
আঃ আর একটু বসাে না মিতুল।
আমার শরীর খারাপ লাগছে। বমি আসছে।
মিতুলের দু’চোখে ঘৃণা। ঠিক সাইকির মতাে। তখুনি ও দু’পা এগিয়ে গেলাে।
ভদ্রমহিলার মুখােমুখি দাঁড়ালাে।
তােমার কাছে আমার একটি প্রশ্ন আছে।
মিতুলের কণ্ঠে বিদ্যুতের জলক। ভদ্রমহিলা কিছু বললেন না। ঠাণ্ডা মাথায়, শান্ত চোখে মিতুলকে দেখছিলেন।
তােমার কাছে বাবার কি অপরাধ ছিলাে?
ভদ্রমহিলা চুপ। উত্তেজনায় মিতুলের চেহারা পাল্টে গেছে।
কথা বলছাে না কেন?
এসব কথা থাক মিতুল।
আমি ওকে হাত ধরে টেনে আনতে চাইলাম। ও এক ঝটকায় আমার হাত ছাড়িয়ে নিলাে। দেখলাম, ভদ্রমহিলার ঠাণ্ডা দৃষ্টি দপ করে জ্বলে উঠলাে। দুইজন ভীষণ প্রতিপক্ষ মুখােমুখি দাঁড়িয়ে। মিতুলের আচরণে আমি বিব্রত, লজ্জিত। কোনােদিন বুঝতে পারিনি, মা-র প্রতি ওর এত আক্রোশ, এত ঘৃণা। আমার মনে হলাে,
মিতুলের ভেতর একটা বাঘ বসে ভীষণ গর্জন করছে।
তুমি জবাব দেবে না?
আমি কৈফিয়তের জবাব দেই না। তাছাড়া তুমি কৈফিয়ৎ চাইতে পারাে না। কেননা তােমার ওপর আমার কোনাে দাবি নেই।
তা আমি জানি। তবে জেনাে, জোর করে ভুলতে চাইলেই ভােলা যায় না। যারা দুর্বলচিত্তের, তারা নিজের মনে কষ্ট তৈরি করে যন্ত্রণা পায়। আমার সে ধরনের বাতিক নেই।
তুমি একটা ডাইনি। ঠিক ম্যাকবেথের তিন ডাইনির একজন। মিতুল চেঁচিয়ে বললাে।
এসব কি হচ্ছে মিতুল? তুমি এমন করবে জানলে তােমাকে আমি কখনােই আনতাম না। তুমি কি এমন করে তােমার মাকে দেখতে চেয়েছিলে?
আমি রেগে গেলাম। হঠাৎ মিতুল আমার দিকে ঘুরে দাঁড়ালাে। যাকে দীর্ঘকাল ধরে খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম, তাকে তাে অন্তরের কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। ওর চোখে জল টলমল করছে। ও ছুটে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলাে। আমি অপ্রস্তুতের হাসি হেসে ভদ্রমহিলাকে বললাম, আপনি কিছু মনে করবেন না।
এ আমি জানতাম। এ জন্যে আমি আপনাকে নিষেধ করেছিলাম। আপনি কেন ওর কল্পনার জগৎ ভেঙে দিলেন?
ভদ্রমহিলার রূঢ় কণ্ঠে আমি বিমূঢ়। একটু আগে তিনি আমাকে তুমি বলেছিলেন। এখন আপনি বলছেন। কথা না বলে বেরিয়ে এলাম। মিতুল ততক্ষণে গলির মাথায় চলে গেছে। কেন জানি না, দুজনেই পেছন ফিরে তাকালাম। দেখলাম, দরজার কপাট ধরে তিনি দাঁড়িয়ে। ভেবেছিলাম, কুয়াশা ভেদ করে আমি বন্দরে পৌছুবাে। কিন্তু বন্দর আমার নাগালের বাইরে। ঐ বন্দরে আমি কোনােদিন পৌছুতে পারবাে না। তার মুখ দেখে কিছু বােঝা যায় না। নিজের ওপর ভীষণ বিশ্বাস ছিলাে। তাই ভেতর থেকে কে যেন খোঁচাচ্ছে, কি হে লেখক, খুব না অহংকার? কই, পারলে না তাে সে মুখের একটা রেখাও পড়তে! অন্তত এক জায়গায়
ঠকে গেছাে। আমি প্রসন্ন চিত্তে সে পরাজয় স্বীকার করলাম। আমার কোনাে গ্লানি হলাে না। রিকশায় মিতুল অনেক কাঁদলাে। কিছুতেই কান্না থামাতে পারলাম না। ওকে কান্নার সুযােগ দিয়ে খানিকক্ষণ এ রাস্তা ও রাস্তায় ঘুরলাম। শেষ পর্যন্ত কাফে রেস্তোরায় নিয়ে এলাম ওকে। মিতুল এখন শান্ত। কেবিনে বসে আমি ওকে রুমাল বের করে দিলাম। মুখটা মুছে নাও।
ও শান্ত মেয়ের মতাে তাই করলাে। ভেবেছিলাম, মাকে দেখার পর ওর ক্লান্তি মুছে যাবে। কিন্তু ভুল ওটা আরাে গাঢ় হয়ে চেপে বসেছে। জামী, তুমি রাগ করেছাে?
না।
টেবিলের ওপর পড়ে থাকা ওর হাতটা নিজের মুঠিতে নিলাম।
জামী, আমি কেন এসেছিলাম এখানে? না এলেই তাে পারতাম?
আর মন খারাপ করাে না। ভালােই তাে হয়েছে। তােমার মনে আর কোনাে কষ্ট থাকবে না।
মিতুল মাথা নাড়লাে।
না জামী, এ কষ্ট আমার চিরকালের।
মিতুল?
তুমি আমাকে ক্ষমা করাে জামী।
ও মুখটা নিচু করলাে।
আমি এখন থেকে সবার কথা ভুলে যাবা। বাবা-মা-তুমি-তােমার কথাও ভুলে যাবাে।
মিতুল।
তুমি কষ্ট পেয়াে না জামী। দেখছাে না, আমি যাকে খুঁজি, তাকে কোনােদিন পাই না। দেখছাে না, বাবার ভালােবাসায় আমার ঘৃণা। দেখছাে না—
চুপ করাে মিতুল।
আমি ধমকে উঠলাম। আমার মেজাজটা আগে থেকেই খারাপ ছিলাে। সেজন্যে ধমকটা একটু বেশি জোরে হয়ে গেছে। ও চমকে উঠে থমকে গেলাে। তারপর
জ্বলজ্বলে চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলাে। মাঝে মাঝে তােমার জন্যে দরকার চাবুক। নইলে তুমি ঠিক থাকবে না।
চলাে, বাড়ি ফিরবাে।
বাড়ি?
ন্যাকো, কিছু বােঝ না?
আমার সারা শরীরে বুনাে রাগের স্রোত। বেয়ারারা মুখের দিকে তাকিয়ে। আমি উপেক্ষা করে বেরিয়ে এলাম। মিতুল পিছু পিছু এলাে। ওকে রিকশায় তুলে
দিয়ে বললাম, বাসায় যাও।
তুমি যাবে না?
না।
জামী, রাগ করেছে?
বাসায় যাও বলছি।
আমার গলায় কর্তৃত্বের সুর। আর আট দিন পর মিতুল আমার বৌ হবে। সেই জোরেই আজ আমি ওকে শাসন করছি। রিকশা চলতে আরও করলে আমি সেদিকে
তাকিয়ে রইলাম। মিতুল একবারও পেছন ফিরে তাকালাে না। ওর ওপর রাগ করে বাসায় ফিরলাম না। এখন অনাবশ্যক ঘোরাঘুরি ছাড়া আমার কিছু করার নেই।