উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব ছয়
- উপন্যাস।। চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব এক
- উপন্যাস।। চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব দুই
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব তিন
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব চার
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব ছয়
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব নয়
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব নয়
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব দশ
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব এগারো
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব বারো
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব তেরো
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব পনেরো
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব সতেরো
- উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব উন্নিশ
৬.
শফিক যখন অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেল তখন সে শুনল এক গ্রাম পরে আরেকটি মেয়েও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। একইভাবে ফারিয়াও শুনল পাশের গ্রাম থেকে একটা ছেলে বৃত্তি পেয়েছে। এ রকম প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কেউ ভালো রেজাল্ট করলে অনেক লোকেরই কৌতূহল থাকে, সেটা নিয়ে। চারদিকে চাউর হয়ে যায় সেটা। ভালো রেজাল্ট করলে আগে মানুষ বাড়িতে দেখতে আসত। এখন বাড়িতে লোক না এলেও দূর-দূরান্তের মানুষের কাছে খবর পৌঁছে যায়। শফিক ও ফারিয়া দুজনেরই দুজন সম্পর্কে তাই কৌতূহল হলো। ওরা একজন অন্যজনকে শুধু নামে চিনত অনেক দিন। তারপর এসএসসি পরীক্ষার সময় তাদের একবার দেখা হয়েছিল। ফারিয়কে দেখেই তার প্রতি বেশ আকর্ষণ বোধ করেছিল শফিক। এত সুন্দর একটা মেয়ে ফারিয়া। শফিক চোখ ফেরাতে পারেনি। তখন খুব একটা কথা হয়নি। সামান্য আলাপ হয়েছিল মাত্র। কিন্তু সম্ভবত দুজনই দুজনার প্রতি আকর্ষণ ধরে রেখেছিল অনেক দিন। সেটা তারা টের পেয়েছিল প্রথম দেখা হওয়ার প্রায় বছর তিনেক পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময়ে। ওই দিনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেদিন তাদের দেখা হয়, তাদের কথাবার্তা শুনে যে কেউ বলতে পারত তারা যেন অনেক দিনের চেনা এবং তাদের প্রায় প্রতিদিনই দেখা হয়। কিন্তু আসল ব্যাপার হলো, তাদের আর দেখা না হলেও দুজন দুজনার সম্পর্কে সব খোঁজখবর রাখত। ফলে পরস্পরের বেশির ভাগ খুঁটিনাটি তারা জনত। যখন তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল, দুজনেই দুজনার প্রতি আকর্ষণটা বুঝে ফেলেছিল।
ভর্তি পরীক্ষায় ফারিয়া তার পছন্দের সাবজেক্ট পেলেও শফিক যেটা চেয়েছিল, সেটা পায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য সাবজেক্টে সে ভর্তি হতে পারত। বাসা থেকেও বলেছিল অন্য কোনো একটা সাবজেক্টে ভর্তি হয়ে যেতে, কিন্তু শফিক ভর্তি হয়নি; বরং নিজের প্রিয় সাবজেক্টে ভর্তি হওয়ার জন্য একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেয়। পরে এ নিয়ে শফিক আর ফারিয়ার মধ্যে কথা হলেও ফারিয়া বুঝতে পারে শফিক ঠিক কাজটিই করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপছন্দের সাবজেক্টে ভর্তি হলে শফিক পড়ার যে আনন্দ সেটা থেকে বঞ্চিত হতো। তার জন্য বরং এটাই ভালো হয়েছে। তবে দুজনার দুই বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় তাদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ কমে গেছে। শফিক অবশ্য প্রেমিকার সঙ্গে সারা দিন লেপ্টে থাকার মতো ছেলেও না। সে তার পড়ালেখা, কাজ নিয়েই ব্যস্ত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ব্যাপারে শফিকের পরিবারের একটা চাপ ছিল। রহিম মিয়া চেয়েছিলেন ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুক। লোকের কাছে তিনি বড় মুখ করে বলতে পারবেন তাহলে। কিন্তু শফিক তার বাবাকে রাজি করিয়ে ফেলে। এখন শফিকের বাবা ছেলে ‘কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়রিংয়ে’ পড়ে বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
শফিকের সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষার পর যেদিন ফারিয়ার দেখা হলো, সেদিনই তারা অনেকক্ষণ একসঙ্গে সময় কাটিয়েছিল। হলে সিট পাওয়ার আগে পর্যন্ত ফারিয়া তার এক আত্মীয়ের বাসায় থাকত, আর শফিক থাকত কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে একই মেসে। বিকেল হলেই ফারিয়া তখন শফিককে ফোন দিত। শফিক এলে তারা একসঙ্গে ঘুরত শাহবাগ, আজিজ মার্কেট, নিউমার্কেট, টিএসসি, রমনা পার্ক। এসব জায়গা ছিল তাদের নখদর্পণে। দুজনই ঢাকা শহরে নতুন। নিজেদের আবিষ্কার করার পাশাপাশি তারা শহরটাকেও চিনে নিচ্ছিল। কিন্তু তখনো তাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বতেই সীমাবদ্ধ ছিল। এর বেশি কিছু নিয়ে যদিও তারা দুজনেই ভাবছিল, কিন্তু কেউই কথাটা তুলছিল না। তারা বুঝেছিল তাদের একসঙ্গে থাকতে ভালো লাগে। একজনকে না দেখলে অন্যজনের অস্থিরতা শুরু হয়ে যায়। কথা না বললে ভালো লাগে না। দেখা হওয়ার নির্ধারিত সময়ের আগেই তাদের অপেক্ষা দীর্ঘতর হতে থাকে। ফারিয়া অপেক্ষা করছিল শফিকের কাছ থেকে প্রস্তাবটা আসার জন্য। কয়েকজন বান্ধবীর কাছে সে বিষয়টা শেয়ারও করেছিল। কিন্তু শফিকের নীরবতা ক্রমশই অসহ্য হয়ে উঠছিল। শেষে একদিন ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় ফারিয়ার। ফারিয়ার তখনকার বান্ধবী নুসরাত বলেছিল প্রস্তাবটা যে কারও পক্ষ থেকেই আসতে পারে। সব সময়ই যে শুধু ছেলেরা প্রস্তাব দেবে সেটা ঠিক নয়। নুসরাত একেবারে অন্য রকম মেয়ে। মনে যা আছে, সেটা অকপটে মুখে বলে ফেলার পক্ষপাতী। সে বেশিক্ষণ চুপ করে থাকতে পারে না। এ জন্য অবশ্য তার অনেক শত্রু। মুখের ওপর কথা বলা লোকজন খুব একটা পছন্দ করে না। কিন্তু ফারিয়ার সঙ্গে নুসরাতের ভাব হয়ে গেল অল্পতেই। নুসরাত বলেছিল, মেয়ে হলেই যে সব সময় মেয়েদের মতো আচরণ করতে হবে সেটা ঠিক না। বরং মেয়েদের উচিত কিছু মেয়েলি কর্মকাণ্ড থেকে বের হওয়া। এই যে তুই শফিককে তোর ভাল লাগার কথা বলতে পারছিস না, এটা তোর মেয়েলি আচরণের জন্যই। এটা দূর করতে না পারলে জীবনে অনেক কিছুই করতে পারবি না। ফারিয়ার খুব মনে ধরছিল কথাগুলো। এরপরই সে সিদ্ধান্ত নেয় শফিককে তার ভালো লাগার কথা বলবে।
ফারিয়ার মনে আছে সেদিন সে একটা গাঢ় নীল শাড়ি পরেছিল। শফিকের সঙ্গে যখন দেখা হলো, শফিক মুগ্ধ হয়ে কতক্ষণ তাকিয়ে ছিল। শফিকের ওই নীরব মুগ্ধতায় অনেক কথা ছিল। ফারিয়া যেন শুনতে পেয়েছিল কথাগুলো। ফারিয়াকে ও রকম সাজে দেখে শফিক প্রথমে বুঝতে পারেনি যে সে তার জন্যই এমন আয়োজন। ভেবেছিল কোথাও কোনো প্রোগ্রাম আছে হয়তো। সে জিজ্ঞেসও করেছিল সেই কথা। ফারিয়া বলেছিল, ‘কোনো উপলক্ষ ছাড়া কি সাজগোজ করা যায় না?’
শফিক বলেছিল, ‘সেটা অবশ্য যায়। কিন্তু তোমাকে তো কখনো এ রকম দেখিনি!’
‘কেন? খুব খারাপ লাগছে দেখতে?’
‘চোখ ফেরানো যাচ্ছে না।’
‘ফেরাতে চাইছ কেন?’
শফিক হেসেছিল। ফারিয়া তাকে একগুচ্ছ টকটকে লাল গোলাপ দিয়েছিল। তারপর বলেছিল, ‘লাল গোলাপের মানে জানো?’
শফিক জানত না। সে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল ফারিয়ার দিকে। ফারিয়া মনে মনে ভেবেছিল, গাধাটাকে তো সরাসরি না বললে কিছু বুঝতে পারে না। সে তাই করবে। সরাসরিই বললে। এত ইঙ্গিত যে ছেলে বোঝে না তাকে সরাসরি না বলে আর উপায় কী!
ফারিয়া বলেছিল, ‘শফিক, তোমাকে অনেক দিন ধরেই একটা কথা বলতে চাইছি।’
ফারিয়ার গলার স্বরের পরিবর্তন শফিক বুঝতে পেরেছিল। বলেছিল, ‘বলো।’
ফারিয়া নিজ থেকেই তখন ভালোবাসার কথা বলেছিল শফিককে। শুনে শফিক বলেছিল সে-ই ফারিয়াকে কথাটা বলবে বলে ভেবেছিল। কিন্তু একধরনের দোদুল্যমানতা তাকে এই কাজ থেকে বিরত রেখেছিল। তবে সে হয়তো বলত। আজকাল করতে করতে সেই দিনটা আর আসেনি। কারণ, তার আগেই ফারিয়া শফিককে বলেছে। কিন্তু ফারিয়ার মনে হয় না শফিক কোনো দিন তাকে বলতে পারত। শফিকের মধ্যে একধরনের ইন্ট্রাভার্ট স্বভাব আছে। হয়তো তার মনে ছিল প্রত্যাখ্যানের ভয় কিংবা অন্য কোনো সংকোচ। শফিক ফারিয়াকে বলেছিল, তুমি দেশের সবচেয়ে বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ো, আর আমি পড়ি একটা বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে। আমাদের সম্পর্কটা আবার অসম হয়ে যাবে না তো? ফারিয়া তখন হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল কথাটা। তারপর থেকে প্রায় প্রতিটি দিনই ফারিয়া আর শফিক তাদের ভবিষ্যৎ সংসারের প্ল্যান সাজিয়েছে। চাকরিবাকরি, ভবিষ্যৎ, বিয়ে সবকিছুরই প্ল্যান করা তাদের। তবে ইদানীং তারা দুজনেই ফাইনাল পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত। ফরিয়ার তুলনায় শফিক একটু বেশিই ব্যস্ত সম্ভবত। ফারিয়া তো সোশ্যাল সায়েন্সের ছাত্রী, তাই তার কিছুটা কম। কিন্তু শফিকের পড়া বেশি। তা ছাড়া ল্যাব ওয়ার্কও আছে। শফিকের পড়ার কথা চিন্তা করে ফারিয়াও ইদানীং তার সঙ্গে দেখা করার জন্য জোরাজুরি করে না। তবে সে জন্য তার ইদানীং মন খারাপ থাকে। বান্ধবীদের অনেকেরই বিয়ে হয়ে গেছে এরই মধ্যে। বাকি যারা ক্লাসমেটদের সঙ্গে প্রেম করে, তাদের তো নিয়মিত দেখা হয়; বিশেষ করে সন্ধ্যাটা কাটতে চায় না ফারিয়ার। খুব বিষণ্ন লাগে।
দিনের অন্যান্য সময়ে রুমমেটরা থাকে হলে। আড্ডা দেয়, পড়ে, গান শোনে। চাইলে একটু রান্নাবান্নাও করা যায়। তখন একাকিত্বটা থাকে না। কিন্তু যারা প্রেম করে, তারা বিকেলে বেরিয়ে যায়। যারা নানা ধরনের সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তাদেরও প্রোগ্রাম থাকে বিকেলে। মেয়েদের এই হলটা তখন খুব ফাঁকা হয়ে যায়। কথা বলার মতো একটা মানুষও পাওয়া যায় না। ফারিয়ার মন খারাপ হয়, তার প্রেমিক আছে, তবু সে তার কাছে যেতে পারছে না। পড়ায়ও মন বসে না এসব সময়।
ফারিয়া তার রুমে বসেই একটা উপন্যাসে মন বসানোর চেষ্টা করছিল। কিছুতেই যেন মন লাগে না। পড়তে বসলেই তার শফিকের কথা মনে পড়ে। ছেলেটা তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। বইটার তিন নম্বর পৃষ্ঠাতেই সে আটকে আছে। আর এগোয় না কিছুতেই। কোনো না কোনো কারণে পড়া থেমে যায়। এখন আবার একই কাণ্ড হলো। খলবল করতে করতে ফারিয়ার ডিপার্টমেন্টের রায়া, নাফিসা, কুহেলি আর জাকিয়া ঢুকল। ঢুকেই জাকিয়া বলল, ‘দেখলি তোরা, আমার কথাই ঠিক হলো?’ সবাই হেসে ফেলল তার কথায়। কেবল ফারিয়া সেটা না বুঝে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। তার জিজ্ঞাসু দৃষ্টি দেখে নাফিসা বলল, ‘জাকিয়া বলেছিল তোকে রুমেই পাওয়া যাবে। তুই নাকি শফিকের বিরহে ইদানীং বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিস?’
ফারিয়া রেগে কটমট চোখে জাকিয়ার দিকে তাকাল। রায়া সেটা পাত্তাই দিল না, সে বলল, ‘কী বলিস তোরা! সে তো খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে।’
দল বেঁধে বন্ধুরা কেন এসেছে, সেটা জানা গেল বেশ কিছুক্ষণ পর। ফারিয়াকে নিয়ে তারা সিনেমায় যেতে চায়। এটাই সুযোগ। স্টার সিনেপ্লেক্সে একটা ভালো সিনেমা এসেছে। ওরা চারজন এর আগে কয়েকবার বিভিন্ন সিনেমায় গিয়েছে। কিন্তু ফারিয়াকে কখনো নিয়ে যেতে পারেনি। নানা ছলছুঁতোয় সে সটকে পড়েছে। এবার ওরা নাছোড়বান্দা, নিয়ে যাবেই। হলে গিয়ে সিনেমা দেখা খুব একটা পোষায় না ফারিয়ার। তা-ও দু-তিনবার যা গিয়েছে শফিকের সঙ্গেই। ফারিয়া সিনেমা দেখে টেনে টেনে। পছন্দের অংশ বারবার দেখা যায়। সিনেমার ফাঁকে ফাঁকে কাজ করা যায়, কিছু খেয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু হলে গিয়ে টানা বসে থাকা তার অত ভালো লাগে না। কিন্তু বান্ধবীদের পীড়াপীড়িতে তাকে রাজি হতেই হলো। ফারিয়া প্রথম যেদিন শফিকের সঙ্গে সিনেমায় যায়, সেদিন তার জীবনের গুরুত্বপর্ণ একটা দিন। শফিক আর ফারিয়া সারাটা সময় সেদিন হাত ধরাধরি করে বসেছিল। এত মানুষের সামনে তবু ফারিয়ার লজ্জা লাগেনি; বরং তার সবাইকে জানিয়ে দিতে ইচ্ছে হচ্ছিল যে এই ছেলেটা একান্তই তার।