উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব বারো

১২.

সকাল সকাল বাসে উঠে পড়েছে শফিক। স্টেশন পর্যন্ত ফারিয়া এসেছিল। বাস ছেড়ে দেওয়ার সময় পর্যন্ত হাত নেড়ে তাকে বিদায় জানিয়ে তারপর গেছে। শফিকের এই যাওয়া অন্য রকম। এত দিন সে ছাত্র ছিল। আজ তার একটা চাকরি হয়েছে। অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারটা সে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে। ব্যাগের সামনের দিকের পকেটে রেখেছে। মাঝে মাঝে সেটা সে বের করে দেখছে। তাতেও তার উত্তেজনা কমছে না। এত অভাবনীয় প্রাপ্তি যে সে বিশ্বাস করতে পারছে না সময়ে-সময়ে। তার মনে হচ্ছে সত্যিই কি সে চাকরিটা পেয়েছে? মা-বাবা দেখলে কতটা খুশি হবে সেটা কল্পনা করার চেষ্টা করছে সে। এমনিতে তার চাকরির ওপর তারা হয়তো কখনোই নির্ভর করবে না, তবু ছেলেকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে দেখলে কার না ভালো লাগে! লেটারটা বের করলেই তার মুখ হাসি হাসি হয়ে যাচ্ছে। তার সহযাত্রী বিষয়টা খেয়াল করলেও ভদ্রতাবশত নিজ থেকে কিছু জিজ্ঞেস করছে না। শফিকের মূল ভাবনা বাসায় কী করে ফারিয়ার কথাটা তুলবে। ফারিয়াকে নিয়ে অবশ্য তার পরিবারে কারও অমত নেই। বাড়িতে গেলেই ছোট বোন আদর ফারিয়া আপুর কথা তোলে। শফিক ভেবে রেখেছে মা যদি নিজ থেকে কথা তোলে, তাহলে সে ফারিয়ার কথাটা বলবে। বলবে ওর বাড়িতে প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বড় সরকারি চাকুরেদেরই বিয়ের বাজারে ডিমান্ড বেশি। ফারিয়ার মা-বাবাও চায় মেয়ের সরকারি কোনো চাকরিজীবীর সঙ্গে বিয়ে হোক। যদিও ফারিয়াকে তারা এ বিষয়ে তেমন চাপ দিতে পারে না। ওদের প্রস্তাব যদি ফারিয়ার মা-বাবা ফিরিয়ে দেয়? মনের মধ্যে নানা আশঙ্কা উঁকি দেয় শফিকের। অবশ্য ফিরিয়ে দেওয়ার কথা নয় এখন। ওই পরিবারও তো ওদের সম্পর্কের কথাটা জানে। আর বেশ ইতিবাচকও। তবে ভালো বিকল্প থাকলে তো প্রস্তাব নাকচ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকেই। দেখা যাক। ফারিয়ার সঙ্গেও ফোনে কথা বলে ওদের পরিবারকে আগেভাগে রাজি করিয়ে রাখতে হবে। শফিক বাড়িতে কথাটা তুলে তারপর ফারিয়াকে বলবে ফোন করে কনফার্ম করতে। ওপাশ থেকে গ্রিন সিগন্যাল এলেই কেবল ফাইনালি প্রস্তাবটা পাঠাবে সে।

চিঠিটা আবার ব্যাগের মধ্যে রেখে দিল সে। সে ভেবেছিল মা-বাবাকে সারপ্রাইজ দেবে, একবারে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারটাই দেখাবে। খবরটা আগেভাগে জানাবে না। কিন্তু সেটা আর হয়নি। ফোনে বাবাকে সে বলেছে চাকরির খবর। সন্ধ্যায় ফোন করে জানানো হয়েছে সে আসছে। পরীক্ষা শেষ, ছেলে কদিন থাকবে। এ জন্য শফিকের মা নানা খাবারদাবার বানানোর আয়োজন করছেন। কাল থেকে তার কোনো ক্লান্তি নেই। তাকে সাহায্য করছে মতিন। মতিনও দ্বিগুণ উত্সাহে ছোটাছুটি করছে। তার ‘ভাইজান’ শহর থেকে আসছে। চরের কোন জমিতে ঘাসের মধ্যে পাখির ডিম পাওয়া যায়, কোথায় সদ্য শালিকের বাচ্চা ফুটেছে এসব খবর সে ভাইজানকে দেবে। ভাইজানেরও এসব নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। বাড়িতে এলে মাঝে মাঝে বিকেলবেলা সে মতিনকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়। মতিনের গল্প শুনে শফিকের চোখ বড় বড় হয়ে যায়। সেবার যখন শফিক এল, মতিন তো তাকে সঙ্গে নিয়ে বক ধরা ফাঁদ বানিয়ে একটা বক প্রায় ধরেই ফেলেছিল। একটুর জন্য ফাঁদটা কাজ করেনি। কিন্তু তাতেও শফিকের উত্সাহ কমেনি। সেবার সময় ছিল না, তাই পরে আর চেষ্টা করা হয়নি। এবার ভাইজান এলেই তাকে নিয়ে আবার বক ধরার ফাঁদ পাতবে মতিন। এসব কাজ একা একা করে কোনো শান্তি নেই। সঙ্গে কেউ থাকলে খুব ভালো হয়। মতিনের অন্য বন্ধুরা অবশ্য এসব কাজে সাহায্য করতে চায়। কিন্তু মতিন ওদের এগুলো শেখাতে চায় না। তাকে তো কেউ শেখায়নি, তাহলে সে কেন ওদের শেখাবে? ওরাও তো নদীর পাড়ের গর্ত থেকে গাঙশালিকের বাচ্চা তুলে আনতে পারে। কিন্তু বুদ্ধিটা এত করে বলার পরও তাকে শেখায়নি। তার কত শখ শালিকের বাচ্চা পুষবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটাও জোগাড় করতে পারেনি। এত ভালো পোষ মানে শালিকের বাচ্চাগুলো। সে দেখেছে ইয়াসিন যখন হাঁটে তার পেছন পেছন তার পোষা শালিকটা হেঁটে বেড়ায় আর চ্যাঁও চ্যাঁও করে ডাকে। আর কদিন পরেই নাকি কথা বলতে পারবে। শালিক নাকি ময়নাপাখির মতোই কথা বলে। ইয়াসিন বলেছে, শালিক আর ময়না হইল খালাতো ভাই। মতিনও খেয়াল করে দেখেছে দুটো পাখি দেখতে একই রকম। তাহলে ময়না কথা বলতে পারলে শালিকেরও পারা উচিত। ভাইজান এলে তাকে নিয়ে সে এবার একটা শালিকের বাচ্চা জোগাড় করার চেষ্টা করবে। ভাইজানের তো অনেক বুদ্ধি, কোনো একটা কিছু করে সে মতিনকে সাহায্য করতে পারবে। মতিন বারবার রহিম মিয়ার কাছে সময় জানতে চাচ্ছে। একটু পরপর জিজ্ঞেস করছে আর পায়চারি করছে।

শফিক বাস থেকে যেখানে নেমেছে, সেখান থেকে সিএনজিতে আরও এক ঘণ্টা গেলে তারপর তার বাড়ি। বাস থেকে নেমে দুটো রাস্তা পার হয়ে সিএনজি নিতে হয়। সে সিএনজির জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। এখানে লোকের তুলনার সিএনজি কম। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করতেই হয়। কপাল ভালো থাকলে অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায়। সে এক টং দোকানে গিয়ে চা খেতে লাগল। হঠাৎ একজনকে দেখে তার পরিচিত মনে হলো। সে কাছে গিয়ে দেখল আলিমুল স্যার। শফিকের স্কুলজীবনের সবচেয়ে প্রিয় স্যার। সে সালাম দিয়ে নিচু হয়ে কদমবুচি করল স্যারের। স্যার চশমাটা চোখে লাগিয়ে চেনার চেষ্টা করলেন। না পেরে বললেন, ‘কে তুমি বাবা?’

‘স্যার, আমি শফিক। ২০০৬ ব্যাচের ছাত্র। চিনতে পারছেন?’

‘হ্যাঁ, এবার চিনেছি। বয়স হয়ে গেছে তো বাবা। মনে করতে সমস্যা হয়। তা, কেমন আছ তুমি?’

‘আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি, স্যার। আপনি কেমন আছেন?’

‘এই যে যেমন দেখতে পাচ্ছ। তা, তুমি কোথায় আছ এখন, কী করছ?’

‘স্যার, আমি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। রেজাল্ট হয়নি এখনো, তবে কয়েক দিন আগেই একটা চাকরির জন্য ডাক পেয়েছি।’

‘বাহ! এটা তো খুব ভালো খবর বাবা। দারুণ খবর! আমার একজন ছাত্র কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে এটা শুনে খুব ভালো লাগছে।’

‘দোয়া করবেন স্যার। আজ স্কুল নেই স্যার? যাবেন না?’

‘আমি তো রিটায়ার্ড করেছি শফিক। ওদিকের গাড়ির জন্য বসে আছি।’

কথা বলতে বলতেই একটা লেগুনা চলে আসে। প্রায় ভরা ছিল গাড়িটা, একজন উঠে দাঁড়িয়ে আলিমুল স্যারের জন্য জায়গা করে দেয়। গ্রামে এখনো মানুষ শিক্ষকদের বেশ সম্মান করে। শফিকের ভালো লাগল। গাড়িটা ছেড়ে দেয়। এর মধ্যে একটা সিএনজিও চলে আসে। শফিক দেখে স্যার একটা খাবারের থলে ফেলে গেছেন। স্যারকে ডাকতে গিয়ে দেখে গাড়িটা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। শফিক দ্রুত সিএনজিতে বসে লেগুনার পিছু পিছু যেতে বলে। স্যারের খাবারের থলেটা পৌঁছে দিয়ে তারপর সে যাবে। সে খাবারের থলেটা খুলে দেখে বাটিতে সামান্য একটু খাবার। ভাত, ডাল আর ভর্তা। সে বোঝে শিক্ষকদের সম্মান থাকলেও এখনো তারা বেশ কষ্টে জীবন যাপন করেন।

শফিকের সিএনজি স্যারের লেগুনার পিছু পিছু গিয়ে যেখানে থামল, সেটা যমুনা নদীর পাড়। স্যার ততক্ষণে সেই পাড়ে অপেক্ষারত একটি নৌকায় উঠে পড়েছেন। শফিকের কৌতূহল হলো। স্যার কোথায় যায়? এখান থেকে যেতে হলে কোনো একটা চরেই যেতে হবে। এতটুকু নৌকায় নিশ্চয়ই যমুনা পাড়ি দেওয়া সম্ভব নয়। সেও একটা নৌকায় করে স্যারের পিছু পিছু যেতে লাগল। স্যারের নৌকাটা শফিকের দৃষ্টিসীমার ভেতরেই রয়েছে। বেশ কিছুক্ষণ পর নৌকা একটা চরে গিয়ে ভিড়ল। আলিমুল স্যার নৌকা থেকে নেমে ধানখেতের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে লাগলেন। অপরূপ সুন্দর এই চর। চারদিকে সবুজ আর সবুজ। নদীর হালকা বাতাসে ধানের চারাগুলো দুলছে। শফিকও নৌকা থেকে নামল। এ রকম নিসর্গের ভেতরে এসে তার প্রাণ জুড়িয়ে গেল।

ঢাকা শহরে কোথায় এমন সবুজ? চারদিকে কংক্রিটের জঞ্জাল। যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই দৃষ্টি আটকে যায়। কোথায় এমন দৃষ্টির স্বাধীনতা ঢাকায়। সে যেন এতকাল এসবই মিস করছিল। প্রাণভরে শ্বাস নিল শফিক। যেন তার দুরন্ত বাল্যকাল ফিরে এল এখানে। এখানে নেমে সামান্য শ্বাস নিয়েই যেন তার সব ভ্রমণক্লান্তি কেটে গেল। অদ্ভুত সুন্দর চারপাশ। কচি কলাপাতা যেন হাত নেড়ে তাকে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছে। সে স্যারের পিছু পিছু যেতে লাগল। একটা জায়গায় সামান্য জল আছে, স্যার জুতো হাতে আর ছাতা বগলে নিয়ে সেটুকু পার হয়ে গেলেন। শফিক যখন সেই জলে নামল, কী সুন্দর ঠান্ডা, হালকা স্রোতও আছে জলে। সে দুই আঁজলাভরে পরম শান্তিতে মুখ ধুয়ে নিল। যেন এই জলের স্পর্শ সে পবিত্র হলো। এত ভালো লাগল তার! কিন্তু স্যার এত দূর পথ পাড়ি দিয়ে যাচ্ছেটা কোথায়! তার কৌতূহল ক্রমাগত বাড়তে লাগল। জলাটুকু পার হয়ে আরও বেশ কিছুটা পথ মাঠ আর চারা ধানগাছের আইলের ওপর দিয়ে শফিক যে জায়গাটায় পৌঁছাল সেখানে টিনশেডের কিছু ছোট ছোট ঘর চোখে পড়ল। এগুলো মানুষের বসতি। তারপর আরেকটু গিয়ে সে দেখল স্যার বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করছেন, তার সঙ্গে বেশ কিছু বাচ্চা। বিস্ময়ে তার চোখের পলক পড়ছে না। এ রকম দুর্গম একটা জায়গায় স্যার পড়াতে আসেন প্রতিদিন? সরকারি স্কুল থেকে রিটায়ার্ড করেছেন ঠিকই, শিক্ষকতা থেকে অবসর নেননি তাহলে? শফিক হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।

আলিমুল স্যার দূর থেকে দেখে চিনতে পারলেন এবার। তিনি ডাক দিলেন শফিককে। ‘অ্যাই শফিক, ওখানে দাঁড়িয়ে আছ কেন? এদিকে এসো।’

সংবিৎ ফিরে পেয়ে শফিকের মনে পড়ল, স্যারের খাবারের ব্যাগটা দিতেই এত দূরে আসা। সে কাছে এসে বলল, ‘স্যার, আপনি খাবারের ব্যাগটা ফেলে এসেছিলেন। এটা না নিয়ে এলে আপনাকে না খেয়েই এই বাচ্চাদের পড়াতে হতো।’

এতক্ষণে স্যারের খেয়াল হলো। তিনি বললেন, ‘ওহ, তাই তো। কিন্তু তুমি মাত্র ঢাকা থেকে এসেছ, আগে বাড়ি না গিয়ে এত দূরে চলে এসেছ!’

‘বাড়ি তো স্যার যাওয়াই যাবে। কিন্তু এই দুর্গম চরে স্কুল, তারপর আপনি এখানে, কিছুই তো বুঝতে পারছি না।’

‘তোমরা যেমন স্কুল-কলেজের সুযোগ পেয়েছ, এই চরের শিশুরা তো সেটা পায় না। এদের জন্যও আমাদের কিছু দায় আছে। তা ছাড়া আমি শিক্ষক, আমার কাছে সব ছাত্রই সমান। এই স্কুলটা আমি এখানে প্রতিষ্ঠা করেছি।’

‘বলেন কী স্যার!’

‘দেখো যমুনার বুকে এ রকম অনেক চর আছে। কয়েক শ থেকে শুরু করে এসব চরের জনসংখ্যা কয়েক হাজার পর্যন্ত। বড় চরগুলোতে তবু দু-একটা স্কুল দেখা যায়, কিন্তু এই চরটার মতো ছোট যে চরগুলো, যার লোকসংখ্যা ধরো চার শ থেকে হাজার পর্যন্ত, এই চরগুলো খুব অবহেলিত। এখানে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়াটা খুব দরকার। আর এ দেশের একজন সচেতন মানুষ হিসেবে আমারও দেশকে কিছু দেওয়ার আছে। এ জন্যই এই স্কুলটা আমি তৈরি করেছি। এই চরের ছেলেমেয়েরা যাতে পড়াশোনা করতে পারে।’

শফিক ভাবল সত্যিই তো তাই। এখানকার বাচ্চাদের যদি পড়াশোনা করতে হয়, তাহলে আট-দশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। তার আগে নদী পাড়ি দিতে হবে। সড়কপথে যেটুকু যেতে হবে তার জন্য পা-ই তাদের সম্বল। আর যানবাহনে যাবার মতো আর্থিক সংগতি এদের নেই। যদি কেন সম্পূর্ণ পথটা শুধু পায়ের ওপর ভরসা করতে চায় তাহলেও এদের স্কুলে যেতে আসতে পুরো দিন শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ, এদের আর্থসামাজিক বাস্তবতায় পড়ালেখার কোনো উপায় নেই। চরের মধ্যে স্কুল গড়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্পই আসলে নেই। সে বলল, ‘স্যার, আপনি একাই এটা করেছেন?’

‘হ্যাঁ, একাই। চরের লোকজনই জায়গা দিয়েছে। ওরা এটুকু অন্তত বোঝে, সন্তান শিক্ষিত হলে তাদের দিন ফিরবে। ভাগ্য বদল হবে।’

‘তা ঠিক স্যার।’

‘দেখো বাবা, তোমার মতো এদেরও তো কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার অধিকার আছে, তাই না?’

‘অবশ্যই স্যার।’

‘এদের মধ্যেই হয়তো তোমার মতো মেধাবী ছাত্র আছে। শুধু সুযোগের অভাবে এরা ঝরে যাচ্ছে। অন্যের জমিতে কাজ করাই হয়ে উঠছে ওদের নিয়তি। কিন্তু দেখো, আমরা চাইলেই অনেক কিছু করতে পারি।’

‘ঠিক বলেছেন স্যার।’

‘সারা দেশ ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এই মানুষগুলোর দিকে আমরা নজর দিই না। এদের জগৎ এই চরটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এদের বাইরের জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই এখন আমার যুদ্ধ।’

‘স্যার, এখানে আর কোনো টিচার নেই?’

‘না বাবা, বাইরে থেকে কাউকে নিয়ে আসার সামর্থ্য এখনো আমার নেই। তবে আমি স্বপ্ন দেখি একদিন অনেকেই এসে এই লড়াইয়ে আমার সঙ্গে শামিল হবে।’

Series Navigation<< <strong>উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব এগারো</strong><strong>উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব তেরো</strong> >>

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *