উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব পনেরো

১৫.

সকালে হইচই শুনে ঘুম ভাঙল শফিকের। গতকাল সে মতিনের সঙ্গে তার নানা প্রজেক্ট ঘুরে দেখেছে। এসবের মধ্যে ছিল পাখি ধরার ফাঁদ, মাছ ধরার বড়শি, গ্রামে নতুন হওয়া সাঁকো আর অনেক দূরে একটা মেহগনিগাছে ঘুঘুর বাসা। সে বাড়িতে বেশিক্ষণ থাকেনি। বাড়িতে সবার মন ভার হয়ে আছে। কেউ তেমন একটা কথা বলছে না। বললেও সে কথায় প্রাণ নেই। বাবাও সারা দিন বাড়িতে ছিলেন না। ফিরেছেন শফিক ঘুমিয়ে পড়ার পর। মা তাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সে-ই উল্টো রওশন আরাকে কিছুটা কনভিন্স করে ফেলেছে।

হইচই শুনে মনে হচ্ছে বাড়িতে কেউ বেড়াতে এসেছে। শফিক একটা টি-শার্ট পরে বাইরে এসে ভীষণ অবাক হলো। ফারিয়া তার মা-বাবাকে নিয়ে হাজির এই সাতসকালে! কী আশ্চর্য! ফারিয়াদের বাসায়ই তো প্রস্তাব পাঠানোর কথা ছিল তাদের। তার আগেই পাত্রীপক্ষ সশরীরে উপস্থিত! শফিক দুইয়ে-দুইয়ে চার মিলিয়ে ফেলল। শফিকের সিদ্ধান্তের কথা ফারিয়ার কানে চলে গেছে। তার আগে গেছে ফারিয়ার বাবার কানে। সে জন্যই তাদের এই আগমন। ফারিয়ার বাবা শফিককে দেখে এগিয়ে এলেন। বললেন, ‘শুনলাম তুমি অনেক বড় একটা চাকরি পেয়ে গেছ। তোমাদের বিয়ের কথাটা একটু এগিয়ে রাখতে এলাম।’

শফিক বলল, ‘কিন্তু আমি তো চাকরিটা করছি না আঙ্কেল। আমি এখানেই থাকব। এখানে শিক্ষকতা করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

ফারিয়ার বাবা হেসে বললেন, ‘তাই হয় নাকি! এত ভালো জায়গায় পড়াশোনা করে শেষে এই অজপাড়াগাঁয়ে পড়ে থাকবে তুমি? এখানে কে তোমার মূল্যায়ন করবে।’

‘হ্যাঁ আঙ্কেল। আমি সিরিয়াস।’

বৈঠকখানার ঘরে ওরা সবাই বসে কথা বলছিল। এর মধ্যে শফিকের বাবা এলেন। মেহমান দেখে তিনি অবাক হলেন না। শফিক বুঝল, সবাই জানে যে ওরা আসবে। কেবল সে-ই কিছু জানত না। কুশলবিনিময়ের পর ফারিয়ার বাবা রহিম মিয়াকে বলেন, ‘বেয়াই, আপনার ছেলে এগুলো কী বলছে শুনেছেন?’

রহিম মিয়া বললেন, ‘এসবই তো শুনছি পরশু থেকে। আমার আর ভালো লাগে না। আপনারা কথা বলেন আমি একটু আসছি।’ এই বলে তিনি বাইরে চলে গেলেন। মতিনকেও ডাক দিয়ে নিয়ে গেলেন।

ফারিয়ার বাবা শফিককে বোঝানোর চেষ্টা করতে লাগলেন। তিনি বললেন, ‘নতুন চাকরি পেয়েছে, জয়েন করে কাজ করো কিছুদিন। দেখবে ভালো লাগবে। আর তোমাদের বিয়েটা আমি যত দ্রুত সম্ভব দিয়ে দিতে চাই। ভালো একটা বাসা দেখবে ঢাকায় গিয়ে।’

‘কেন আঙ্কেল। এই বাড়ি কি খারাপ? এখানেই তো ফারিয়া দিব্যি থাকতে পারবে। আর চাকরিটা আমি সত্যিই করছি না।’

শফিকের কথার কিছু একটা ছিল যেটার কারণে ফারিয়ার বাবা বুঝল এই ছেলেকে তার সিদ্ধান্ত থেকে নড়ানো অসম্ভব। সে ফারিয়াকে নিয়ে চলে যেতে উদ্যত হলো। ফারিয়া বলল, তোমরা বাইরে অপেক্ষা করো। আমি শফিকের সঙ্গে কথা বলে আসছি। সবাই চলে গেলে ফারিয়া রাগে ফেটে পড়ল। সে বলল, ‘তুমি এসব কী শুরু করেছ শফিক? আমাদের এত দিনের প্ল্যান তুমি খামখেয়ালি করে নষ্ট করে দিতে চাও? এটা করার কোনো অধিকার তোমার নেই।’

‘আমি খামখেয়ালি করছি না ফারিয়া। আমি যা করছি জেনেবুঝে তারপর করছি।’

‘কী বললে তুমি? জেনেবুঝে করছ? তুমি আমার কথা একবারও ভাবলে না? ওই ভাঙা স্কুলে মাস্টারি করলে আমার বাবা তোমার সঙ্গে আমার বিয়ে দেবে?’

‘কেন দেবে না? আমি তো অন্যায় কিছু করছি না। মানুষের জন্য কাজ করতে চাইছি।’

‘ওহ! খুব জনদরদি হয়ে গেছ তুমি? মানুষের জন্য কাজ করতে চাইছ? আমি কি তাহলে মানুষের মধ্যে পড়ি না? আমার জন্য তুমি কী করলে?’

শফিক ফারিয়ার হাত ধরে বলল, ‘চলো না, তুমি আর আমি মিলে স্কুলটাকে সাজাই। আমাদের মাথার ওপর থাকবেন আলিমুল স্যার। আমরা এখানকার গ্রামগুলোকে ডিজিটাল গ্রাম বানাব। ছেলেমেয়েদের প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানের জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব। প্লিজ, ফারিয়া তুমি থাকো আমার সঙ্গে।’

ঝটকা মেরে হাত সরিয়ে ফারিয়া বলল, ‘তোমার পাগলামি নিয়ে তুমি থাকো। আমি কোনো পাগলের সঙ্গে থাকতে আসিনি। আমার জীবনের দাম আছে।’

শফিক একটুও না রেগে মিনতির সুরে বলল, ‘প্লি­জ, ফারিয়া, আমাকে ছেড়ে তুমি অন্তত চলে যেয়ো না।’

কিন্তু ফারিয়া তার কোনো কথাই আর শুনতে চাইল না, উঠে দরজার দিকে পা বাড়াল। শফিক তার একটা হাত চেপে ধরে বলল, ‘প্লিজ, ফারিয়া, আমাকে একা করে দিয়ো না।’

হাত ছাড়িয়ে নিয়ে সজোরে শফিককে একটা থাপ্পড় মেরে চলে গেল ফারিয়া।

১৬.

ছোট একটা ব্যাগে কয়েকটা জামাকাপড় আর প্রিয় ল্যাপটপটা কাঁধে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে শফিক। ফারিয়া তাকে ছেড়ে চলে যাবে এটা সে ভাবতে পারেনি। বাবা বলেছেন, বাড়ি ফিরে যেন শফিককে তিনি আর না দেখেন। অবাধ্য ছেলের পরিচয় তিনি দেবেন না। এরপর ওই বাড়িতে থাকা যায় না। হোক সেটা নিজের বাবার বাড়ি। একমাত্র মা তাকে নিষেধ করেছিলেন এভাবে চলে আসতে। কিন্তু বাবার মুখের ওপর তার এই কথা যে টিকবে না, সেটা শফিক ভালো করেই জানে। আসার সময় মায়ের চোখ ছলছল করছিল। ছোট বোন আদর শফিককে জড়িয়ে ধরে বলেছিল, ভাইয়া, যাস না। কিন্তু শফিক এমন এক জীবন বেছে নিয়েছে যেখানে তাকে অনেকটা পথ একাই চলতে হবে। আলিমুল স্যার ছাড়া এখন তার পাশে আর কেউ নেই। স্কুলের ওখানে থাকার তেমন কোনো ভালো ব্যবস্থা নেই। একটা খড়ের ঘর আছে, যেটা শফিক সেদিন দেখে এসেছিল। ওখানেই আপাতত আস্তানা গাড়ার শখ শফিকের। নিজের মতো করে কিছুটা ঠিকঠাক করে নিলেই হবে। তার নিজের চিন্তা বাদ দিয়ে চরের মানুষগুলো নিয়েই বেশি ভাবছে শফিক। ওখানে কী কী করবে, তার একটা  প্ল্যান সে ইতিমধ্যেই মনে মনে গুছিয়ে নিয়েছে। স্কুলে পড়ানোর পাশাপাশি এই মানুষগুলোর জীবনযাপন যদি কিছুটা উন্নত করা যায়, শফিক সেই চেষ্টা করবে।

আলিমুল স্যার তার পরিচিত ভঙ্গিতে হেঁটে আসছেন। শফিক এসেছে অনেক আগেই। সে এসে এখানকার দুই-তিনজন লোকের সঙ্গে কথা বলেছে। আসলে সে যতটা সহজসরল ভেবেছিল এখানকার মানুষদের, এরা তার চেয়েও সরল। শফিক বিশ্বাস করে প্রযুক্তির ছোঁয়া দিয়ে এই চরকে পাল্টে দেওয়া সম্ভব। আলিমুল স্যার শফিককে দেখে খুব খুশি হলেও সেটা প্রকাশ করলেন না। কেননা, তিনি তার এত বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায় জানেন শফিকের পরিবার বা কাছের মানুষ তার সিদ্ধান্তকে ভালো চোখে দেখবে না। আর তা ছাড়া নিজেন ক্যারিয়ার বাদ দিয়ে এই অজপাড়াগাঁ হয়তো শফিককে জীবনের নানা বিলাসিতা থেকে বঞ্চিত করবে। স্যার বললেন, ‘তুমি তাহলে তোমার ডিসিশন পাল্টালে না?’

‘না স্যার। আমি এই চরেই থাকব। এখন থেকে এটাই আমার ঠিকানা।’

‘সে কী! রাতে এখানে থাকতে পারবে? আর তোমার বাড়ির লোকেরাই বা কেন এটা মেনে নেবে।’

‘স্যার, আমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ ডিগ্রিটা শেষ করে এসেছি। আমার ডিসিশন তো আমাকেই নিতে হবে। পরিবারের সঙ্গে সব সময় সেটা না-ও মিলতে পারে। কিন্তু তারা আমার ওপর তাদের সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই চাপিয়ে দিতে পারে না।’

‘এটা তুমি অবশ্য ঠিকই বলেছ। প্রত্যেকেরই তার জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা আছে; বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষকে কোনোভাবেই এসব ক্ষেত্রে জোর করা উচিত নয়। আমাদের দেশের মা-বাবারা এটা বুঝতে চান না। তারা মনে করেন, সন্তানরা সব সময় তাদের কথা মেনে চলবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তারাও ডিসিশন নিতে ভুল করেন, আর সন্তানকে বাধ্য করেন তাদের সিদ্ধান্ত অনুসারে চলতে।’

‘তাহলে স্যার ওই ঘরটা আরেকটু ঠিকঠাক করে ফেলি। এখন থেকে এটাই আমার ঠিকানা।’

‘সবই তো বুঝলাম শফিক, কিন্তু এখানে থাকলেও তো তোমার চলার একটা খরচ আছে। সেটা আসবে কোথা থেকে?’

‘এটা নিয়ে ভাববেন না স্যার।’ শফিক তার ল্যাপটপটা দেখিয়ে বলল, ‘এই যন্ত্রটা যতক্ষণ আছে আমার আয়-উপার্জনের একটা ব্যবস্থা আমি করে নিতেই পারব।’

আলিমুল স্যার বেশ অবাক হলেন। ‘মানে? এটা থেকে কীভাবে আয়-উপার্জন হবে?’

‘স্যার, আমি যতটুকু পড়ালেখা আর কাজ শিখেছি তার জোরে প্রতিদিন ঘণ্টা দুয়েক আউটসোর্সিংয়ের কাজ করলেই আমার ভালোমতো দিন চলে যাবে। আর স্কুলটা যদি দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ছেলেমেয়েরা পড়তে আসবে। তখন আমরা এখান থেকে যে টাকা পাব, তা দিয়ে কিছু শিক্ষকের বেতন দিতে পারব।’

‘তোমার প্ল্যান শুনে খুব ভালো লাগছে শফিক। এই স্কুলটা আমার স্বপ্ন। আমার সবকিছু ব্যয় করেছি এই স্কুলের পেছনে। এত দিন আমার পাশে কেউ ছিল না। আজ থেকে তোমাকে পেলাম।’

খড়ের ঘরটা ঠিকঠাক করতেই সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আলিমুল স্যার ঘণ্টা দুয়েক আগে বাড়িতে চলে গেছেন। এখন সে একা। চরের জমিতে একেকটা ফসলের খেত আর ঝোপঝাড় বেশ দূরে দূরে। বাঁশঝাড়, কলার ঝাড়, ফণীমনসার ঝোপ সন্ধ্যার বাতাসে দুলছে। চারদিকে পানি, তার মধ্যখানে এই সবুজ চর। শফিকের খুব ভালো লাগছে। সে যে ঘরটায় থাকবে সেটা মাটি থেকে বেশ খানিকটা ওপরে। অনেকটা মাচার মতো করে বানানো। বাঁশের সিঁড়ির কয়েকটা ধাপ ওপরে উঠে ঘরে ঢুকতে হয়। বর্ষায় যাতে ঘরের ভেতরে পানি চলে না আসে, সে জন্যই এই ব্যবস্থা। ভালো বিছানা ছাড়া এতকাল ঘুমায়নি শফিক। আজ তাকে এ রকম একটা জায়গায় থাকতে হচ্ছে। সে জন্য অবশ্য কোনো অনুতাপ নেই তার। নিজের ইচ্ছায়ই কঠিন একটা জীবন বেছে নিয়েছে সে। দক্ষিণ দিকের জানালাটা খুলে দিলে হু হু করে নদীর বাতাস ঢুকে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। শীতল একটা প্রশান্তি অনুভব করল শফিক। ল্যাপটপটা খুলে মডেম লাগিয়ে কিছু কাজের সাইটে ঢুঁ মারল সে। একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের জন্য অনলাইনে কাজ জোগাড় করা তেমন আহামরি কোনো বিষয় নয়। তার যেহেতু অল্প হলেই চলে যাবে, এখানে জীবনযাত্রার ব্যয়ও খুব কম, সে অন্যদের তুলনায় একই কাজ কম রেটে করে দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিল। প্রথম প্রথম এতে কাজ পেতে সুবিধা হবে। তবে এই চরে একটা সমস্যা আছে। স্কুলের আশপাশে সোলার প্যানেল নেই। লোকজন মোবাইল ফোন চার্জ দিতেও চরের একমাত্র বাজারে যায়। বাজার বলতে অবশ্য চারটে ছোট ছোট মুদি দোকান, দুটো পান-সিগ্রেটের দোকান, একটা ফ্ল্যাক্সিলোডের দোকান, ওখানেই আবার অনেকগুলো মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার মতো সিস্টেম আছে। প্রতি মোবাইল ফোন ফুল চার্জ দেওয়ার জন্য দোকানদারকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হয়। শফিক প্রথমেই ঠিক করল এই স্কুলে সোলার প্যানেল বসাতে হবে। সবার আগে এটা নিশ্চিত করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান করা যাবে। তা ছাড়া তার পক্ষেও প্রতিদিন বাজারে গিয়ে ল্যাপটপ চার্জ করে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। একটা কাজ চালিয়ে নেওয়ার মতো সোলার প্যানেল বসাতে খুব বেশি খরচ হবে না। সেটা সে ম্যানেজ করতে পারবে।

শুয়ে শুয়ে এসবই ভাবছিল শফিক। ভয়ে তার গা ছমছম করছে এখন। অনেকটা রাত হয়ে গেছে। ঝিঁঝির ডাক প্রকট হয়ে উঠছে ক্রমেই। তা ছাড়া নাম না-জানা কত পোকা যে তারস্বরে ডেকে যাচ্ছে! এ রকম নির্জন একটা জায়গায় থাকার অনুভূতিটা একেবারেই অন্য রকম। স্কুলের দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বসতি নেই। শফিক নিজেকে কখনো এত অসহায় ভাবেনি। তার কেবলই মনে হচ্ছে কোনো বন্য জন্তু তাকে আক্রমণ করবে না তো! তার বিছানায় সাপ উঠে আসবে না তো? এই অনুভূতি একদম আলাদা। এত দিনের কোনো অনুভূতির সঙ্গে একে মেলানো যায় না। অশরীরী একটা বোধ যেন তার সবকিছুকে গ্রাস করছে। অদূরে ভুট্টাখেত থেকে বাতাসের শোঁ শোঁ আওয়াজ আসছে। তবে সবচেয়ে বেশি ডিস্টার্ব করছে ঝিঁঝির একটানা ধাতব আওয়াজ। শফিক মাথাটা কাঁথার ভেতরে টেনে নিল। এমনিতে সে কাঁথামুড়ি দিয়ে শুতে পারে না, তার দম বন্ধ লাগে। কিন্তু আজ তাকে ঘুমোতে হবে, এসব অতিপ্রাকৃতিক আওয়াজ উপেক্ষা করে তাকে ঘুমাতেই হবে।

রাতে ঘুম আসতে সমস্যা হলেও সকালের দিকে দারুণ এক ঝরঝরে অনুভূতি হলো শফিকের। সারা গায়ে কাজ করার নতুন শক্তি! সে অনলাইনে রাতেই সোলার প্যানেলের অর্ডার দিয়ে দিয়েছে। ওরাও দুই-তিন ঘণ্টার মধ্যে চলে আসবে। বিশ্ব যেখানে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে এই চরকেও শফিক অন্যতম একটা অগ্রসর জায়গা হিসেবে গড়ে তুলবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশপাশের এলাকার মানুষ যেন এই চরের কার্যক্রম দেখে অবাক হয়ে যায়, সেটারই ব্যবস্থা করবে শফিক। এখানকার মানুষদের নিয়ে অনেক দূরে যাওয়ার ইচ্ছা তার। প্রথমেই ক্লাসরুমগুলো ডিজিটাল করতে হবে। চক-পেনসিলের দিন শেষ হয়ে গেলেও এখানকার ছেলেমেয়ারা এখনো তা জানে না। নতুন দুনিয়ার সঙ্গে এদের পরিচয় করিয়ে দেবে শফিক। মা-বাবা আর ফারিয়া ও তার পরিবারকে সে দেখিয়ে দেবে ইচ্ছা থাকলে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়।

Series Navigation<< <strong>উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব তেরো</strong><strong>উপন্যাস।।‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’ ।। রাহিতুল ইসলাম।। পর্ব সতেরো</strong> >>

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *