কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। বারো
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। প্রথম পর্ব
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব দুই
- ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব তিন
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব চার
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পাঁচ পর্ব
- ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব ছয়
- ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব সাত
- ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব আট
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব নয়
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। দশ পর্ব
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব এগারো
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। বারো
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব তেরো
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব চৌদ্দ
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। শেষ পর্ব
জয়িতা যে ধারণা করেছিল সেটি এখন অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল। রেড ওয়ার্ল্ডের মালিক জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে গেল। এছাড়া সে ভেবেছে যদি কান্টিবান্টিকে সে অপহরণ করতে পারে তাহলে তাকে দিয়ে অনেক কাজ করানো যেতে পারে। তাছড়া এখনও গাড়ির টেকনোলজি বিক্রি করার মতলবও আছে। যদি সে আগে বিক্রি করতে পারে তাহলে কাশেম পাটোয়ারীর গাড়িটি পাইরেসি কপি হিসেবে বিশ্ববাজারে পরিচিতি পাবে। কাশেম পাটোয়ারীকে পাইরেসির জন্য সাজাও খাটাতে পারবে। কান্টিবান্টি যে মেসে থাকে সে তথ্য রেড ওয়ার্ল্ডের মালিকের কাছে ছিল। মেসটি তেজগাঁওয়ে। কাশেম পাটোয়ারীর একটি ফ্যাক্টরির পাশেই। কান্টিবান্টি রাত দিন কাজ করে তাই অফিসের কাছেই একটা ছোট মেসে থাকে। থাকা-খাওয়া নিয়ে তার কোনো চিন্তা নেই। রাতে কান্টিবান্টি আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে ল্যাপটপটা অন করেছে। এসময় তার মায়ের কথা মনে পড়ে। সে ভাবছে মায়ের কাছে থাকতে হবে। হারিয়ে যাওয়া মাকে এতোদিন পর কীভাবে দেখা পেল। আল্লাহর ইচ্ছে বোঝা বড়ই কঠিন। দরজায় টোকা পড়ে। কান্টিবান্টি জিজ্ঞেস করল, কে? কে ওখানে? একজন লোক বলল, স্যার দরজাটা খুলেন। না, দরজা খুলব না। আগে আপনার পরিচয় দিন। স্যার, আমি পাশের মেসে থাকি। আমার খুব বিপদ। ভয়ানক বিপদ। একটু সাহায্য লাগবে। কান্টিবান্টির মন উদার। যদিও ভয় আছে তবু দরজা না খুলে পারল না। বেচারা বিপদে পড়েছে। তাকে যদি একটু সাহায্য করা যায়। দরজা খুলতেই চার জন লোক কালো রঙের প্যান্ট-শার্ট পরা, মাথাও কালো কাপড়ে বাঁধা। কান্টিবান্টিকে জড়িয়ে ধরে। একজন মুখ চেপে ধরে বলল, চিৎকার করলে শেষ করে দেব। চারজনের হাতেই আধুনিক পিস্তল। কান্টিবান্টি চিৎকার করবে কী? ভয়ে তার কাপড় ভিজে গেছে। অপহরণকারীরা হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়ে। তারপর ওদের একজন ল্যাপটপটা ছিনিয়ে নেয়। কান্টিবান্টির পকেটে মোবাইল ফোন ছিল। ওরা কান্টিবান্টির চোখ বেঁধে ফেলে। আর পিঠমোড়া করে হাত বেঁধে টানতে টানতে গাড়িতে তোলে। গাড়িতে বসে কান্টিবান্টি বলল, আমাকে কোথায় নিয়ে যান? একজন বলল, শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। শ্বশুরবাড়িতে। আমি তো বিয়ে করিনি। বিয়ের ব্যবস্থাও করা হবে। চিন্তা করো নো বাছা। গাড়িটি চলছে ধীরে ধীরে। পথে অনেক ট্র্যাফিক জ্যাম। কান্টিবান্টি ভাবছে চিৎকার করবে কিনা। আবার ভাবছে চিৎকার করলে কোনো লাভ হবে না। একদিকে গাড়িতে কালো গ্লাস আবার অন্যদিকে কাচের ভিতর দিয়ে গাড়ির ভিতরের শব্দ বাইরে যাবে না। তাই ব্যর্থ চেষ্টা না করাই ভালো। এখন জয়িতাই ভরসা। সে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ে। রাতে জয়িতা একবার ফোন করেছিল কান্টিবান্টিকে। কিন্তু রিং হলেও কান্টিবান্টি ফোন ধরেনি। এতে জয়িতাও চিন্তিত হয়ে পড়ে। ফোন না ধরার কারণ সে বুঝতে পারছে না। বারবার রিং হচ্ছে অথচ ফোন ধরছে না কেন? এদিকে গভীর রাতে কান্টিবান্টিকে একটা রুমে নিয়ে আটক করেছে অপহরণকারীরা। রেড ওয়ার্ল্ডের মালিক রাতে কান্টিবান্টির সঙ্গে দেখা করে। সে কান্টিবান্টিকে বলল, বিজ্ঞানী কি ভালো আছো?
হ্যাঁ। ভালো আছি।
তোমার কি ভয় করছে?
ভয় করছে।
কেন? ভয় করছে কেন?
আমাকে ধরে আনলেন কেন?
তুমি আমার এখানে বন্দি থাকবে।
কারণ কী? আমার অপরাধ কী?
অপরাধ করলে কেউ কাউকে অপহরণ করে না। অপরাধীরাই অপহরণ করে।
তাহলে কেন অপহরণ করলেন?
তুমি বিজ্ঞানী। তোমার মাথার মগজটা আমাদের দরকার। তোমার মগজে যে জ্ঞান আছে সে জ্ঞান আমাদের দরকার। এজন্য অপহরণ করেছি।
এটা আবার কী ধরনের কথা?
হ্যাঁ। এটা একটা ভালো কথা। আমরা তোমার মগজটা চাই।
মগজ চান?
হ্যাঁ। তুমি যে নতুন গাড়িটি বানিয়েছো তার প্রযুক্তি আমাদের দিতে হবে। আমরা আপাতত এইটুকুই চাই। এরপর ভেবে দেখব তোমার মগজে আর কী কী আছে? সেসবও তোমার কাছ থেকে ছেঁকে বের করব। আমার মগজে কী আছে তা কী করে জানবেন? ব্যবস্থা আছে। অপহরণকারীদের বুদ্ধি অনেক প্রখর। চিপা দিয়ে বের করব। চিপা দিয়ে বের করবেন? চিপা কী? হ্যাঁ, চিপা দিয়ে বের করব। চিপা না খেলে বোঝা যায় না চিপা কী? তুমি যখন চিপা খাবা তখন বুঝবা উহা কত প্রকার আর কী কী? তবে আপাতত তুমি গাড়ির প্রযুক্তি আমাদের দাও। আমি কাল সকালে একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার তোমার সঙ্গে কাজ করার জন্য দিব। একজন অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারও সঙ্গে থাকবে। তাদেরকে ব্যাখ্যা করে বলবে কীভাবে অন্ধদের গাড়ি বানাতে হয়।