শুভ জন্মদিন শেরপুরের দাদুভাই ছড়াকার নুরুল ইসলাম মনি

আজ আমার শ্রদ্ধেয় দাদু নূরুল ইসলাম মনি ভাইয়ের জন্ম দিন। স্বভাব সিদ্ধ এই গুণি ছড়াকারকে নিয়ে কী লিখবো ভেবেই পাচ্ছি না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক একসময়ের তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা মনি ভাই ছড়ার জগতেও তুখোড়। তাঁকে স্বভাব সিদ্ধ ছড়াকার না বললে সত্যকে চাপা দেওয়া হবে। কারণ তিনি জানেন না কোনটা স্বরবৃত্ত বা মাত্রাবৃত্ত আর কোনটা অক্ষরবৃত্ত ছন্দ। তবে এই ছন্দ না জানা মানুষই যে তুখোড় ছড়াকার- এতে কারোর সন্দেহ থাকার কথা নয়। একসময় তিনি নালিতাবাড়ি শহরে অবস্থান করতেন। তাই তাঁর সাথে আমার পরিচয় ঘটে অল্প কিছু দিন আগে। শেরপুরে আমি যখন ছড়া লিখি তখন অনেকেই কবিমানস নিয়ে চলেন। সুতরাং একজন ছড়াকার হিসেবে কবিতা পাঠের আসরে আমি অতি সামান্য একজন মানুষ। ফলে আমি প্রতিনিয়ত একজন ছড়াসাথী খুঁজতেছিলাম। মনেপড়ে, ২০১৮ সালের এক মাহেন্দ্রক্ষণের কথা। সেদিন বিকেলে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান ছিল। বহুলোকের সমাবেশে সারগর্ভ আলোচনা আর কবিতা পাঠ চলছিল। তখন আমরা দুজন অনেক পিছিয়ে। সভা কিছুটা ম্লান হয়ে এলো, লোকজনও কমে গেল, অথচ আমাদের ছড়া পড়ার সুযোগ হচ্ছে না। এমনি সময়ে তাঁর হাতে একটা লম্বা কাগজ দেখে টেনে নিলাম। তাঁর সঙ্গে আনা কাগজের লেখাটা পড়ে আমি রীতিমত অবাক হয়ে গেলাম! প্রসঙ্গক্রমে জানতে পারলাম আমরাই নিয়মিত জাতীয় দৈনিকে লিখছি। অবশ্য তিনি ডাকে লেখা পাঠান আর আমি পাঠাই ইমেইলে। তো তাঁর ছড়াজ্ঞান দেখে এবার আমি কিছুটা স্বস্তি পেলাম এই ভেবে- একই শহরের একজন দক্ষ ছড়াকারের সাথে পরিচয় ঘটল। তারপর আমার মোবাইলে লেখার প্রবণতা আর ফেইসবুক আইডি দেখে তিনিও ফেইসবুক একাউন্ট খুললেন। মেসেঞ্জারে তাঁর সাথে নিয়মিত কথা চলে, মাঝেমধ্যে নিউমার্কেট আর বটতলায় বসে আড্ডা দিই। বয়সের কারণে আমি তাঁকে দাদু বলে সম্বোধন করতে লাগলাম। আজ তিনি আমাদের সবার প্রিয় দাদু। শুরুতেই দাদুর রাজনৈতিক পরিচয় এনেছি এই কারণেই যে, তিনি নিজে যেমন ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন, তেমনি তাঁর ছেলে মুজাহিদুল ইসলাম সোহাগ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। যাহোক, শ্রদ্ধেয় মনি ভাই আপাদমস্তক নিরহংকারী এবং খাঁটি রসিক ও ধার্মিক মানুষ। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ সেকশনের মতো জটিল শাখায় কাজ করেও শুধু ছড়া নয়, উপন্যাসের মতো জটিল লেখালেখিও চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে এমন একজন মানুষকে নিয়ে লেখার যোগ্যতা বা সামর্থ্য আমার নেই। তাঁকে নিয়ে দশবিশটা ছড়া লিখলেও আমার আত্মতুষ্টি ঘটবে না। আমি আজ তাঁর জন্মদিনে শুধু একটাই প্রার্থনা রাখছি- বাংলা ছড়ায় তিনি শেরপুরে যেমন প্রাণপুরুষ, তেমনি দেশে সবার মধ্যমণি হয়ে উঠুন। আমি তাঁর দীর্ঘায়ু, সুস্বাস্থ্য আর গৌরবময় জীবন প্রত্যাশা করছি। একইসাথে আগামী দিনগুলোতে যেন আমরা তাঁর ছায়ায় থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেরপুরের সাহিত্য জগতকে সুসংহত রাখতে পারি – এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

মোস্তাফিজুল হক
সিনিয়র সাব এডিটর
কাব্যশীলন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *