কিশোর উপন্যাস

কিশোর উপন্যাস।। কিডন্যাপ হলো চার গোয়েন্দা।। শামস সাইদ।। শেষ পর্ব

১৬

গ্রামের মানুষ নিয়ে কঙ্কাল বাড়ি গেলেন অয়নের বাবা। উত্তেজনায় তারা লাফিয়ে পড়তে চাচ্ছেন জ্বলন্ত আগুনে। ভাবছিলেন এখানে লুকিয়ে রাখছে ওদের। রাগে ক্ষোভে ভেঙে ফেললেন দরজা। উঠলেন ঘরের ভেতর। তন্ন তন্ন করে খুঁজলেন। কিছুই পেলেন না। একজন বললেন, বাড়িটা ভেঙে ফেলি। মাটির সাথে গুঁড়িয়ে দেই। নাহয় আবার আস্তানা গড়বে ওরা।

তাদের থামালেন অয়নের বাবা। কার বাড়ি ভাঙবেন?
এরপর পাহাড়ের দিকে গেলেন। সব একাকার করে ফেললেন। চা বাগানে খুঁজলেন। সবার কাছে জিজ্ঞেস করলেন। কোথাও নেই। অনেকটা মাতাল হয়ে গেছেন বাবা। কী করবেন বুঝতে পারছেন না। হতাশ হয়ে সন্ধ্যার খানিক আগে বাজারে এলেন। বাজারের সবাইজড়ো হলো তাকে ঘিরে। জানতে চাইল কারা কিডন্যাপ করেছে? কোথায় নিয়ে গেছে? কোনো খোঁজ পেলেন?

বাবা কিছু বলছেন না। নিস্তব্ধ হয়ে গেছেন। অনেকটা ক্লান্তও। খানিক পরেই রাত নামবে। গাঢ় হবে অন্ধকার। কোথায় খুঁজবেন। কোথায় আছে অয়ন। ওরা খেয়েছে! খাবার দেবে না ওদের। মারপিট করেছে? করতে পারে। রাতে কোথায় থাকবে? এসব ভেবে আরও বেশি ভেঙে পড়লেন। তাকে সান্তনা  দিচ্ছেন কেউ কেউ। চিন্তা করবেন না। একটু শান্ত হন। পুলিশ নেমেছে। ওসি সাহেব এসেছিলেন বিকেলে। তারাও চেষ্টা

করছেন। কাল আবার বের হব আমরা। কোথাও বাকি রাখব না। ওদের সব আস্তানা ভেঙে নিয়ে আসব অয়নদের। তবু চাঙা হচ্ছে না বাবার ভেঙে পড়া মন। আরও বেশি ঝিমিয়ে পড়লেন। দুজন তাকে বাড়িতে নিয়ে এলো। অয়নের খোঁজ পায়নি শুনে ভেঙে পড়লেন মা। বিলাপ করে কেঁদে উঠলেন।

সামি, আবির, নিলয় সবার বাড়িতে একই অবস্থা। কারো মুখে আজ ভাত ওঠেনি। চিন্তায় জমে গেছেন বাবা মা। কোথায় যাবে। কিছু বুঝতে পারছে না। তারাও বের হয়েছিলেন খুঁজতে। বাকি রাখেননি কোনো এলাকা। কোনো তথ্য পাননি।

রেজা স্যারের মাথায় একরাশ চিন্তা। জেরিনের সাথেও কথা বলেননি তারপর। খাবারও তেমন একটা মুখে তুলেননি। দুবার চা খেয়েছেন। বারবার দেখছেন অয়নের পাঠানো মেসেজ। এ নিয়ে কথা বলেছিলেন ওসি সাহেবের সঙ্গে। ওসি সাহেব বললেন, ওটা শ্রীমঙ্গল থানার আওতায়। ওই থানার সঙ্গে কথা বলব আমি। তাদের হেল্প নিয়ে অভিযানে নামব। চিন্তা করবেন না মাস্টার। চিন্তা দূর করতে পারছেন না রেজা স্যার। স্থবির হয়ে পড়েছেন। বসে আছেন অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে।

Series Navigation<< কিশোর উপন্যাস।। কিডন্যাপ হলো চার গোয়েন্দা।। শামস সাইদ।। পনেরো পর্ব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *