কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব চৌদ্দ
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। প্রথম পর্ব
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব দুই
- ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব তিন
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব চার
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পাঁচ পর্ব
- ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব ছয়
- ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব সাত
- ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব আট
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব নয়
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। দশ পর্ব
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব এগারো
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। বারো
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব তেরো
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। পর্ব চৌদ্দ
- কিশোর উপন্যাস।। আলোর পথিক।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী।। শেষ পর্ব
ড্রাইভারও গাড়িটি নিয়ে এগিয়ে গেল। মেজর আতিক মিনি কম্পিউটারে ম্যাপ ও জঙ্গলের বাগান বাড়িটি ভালো করে দেখে নিচ্ছেন। কোন পথ দিয়ে ঢুকলে কীভাবে ঝুঁকি এড়িয়ে জঙ্গলে ঢোকা যায় তার একটি পরিকল্পনা করে ফেললেন। সঙ্গে থাকা অন্যান্য সৈনিকে কিছুই বুঝতে দেননি। শুধু বললেন, গাড়ি থেকে নেমে তোমরা শুধু আমাকে অনুসরণ করবে। কাশেম পাটোয়ারীর দিকে তাকিয়ে মেজর আতিক বললেন, আপনি ইচ্ছে করলে অপারেশন অংশ নিতে পারেন। আর ভয় পেলে গাড়িতেই বসে থাকতে পারেন। দু’ঘণ্টার মধ্যে আমরা সফলভাবে ফিরে আসব। কাশেম পাটোয়ারী বললেন, না, গাড়িতে থাকব না। আমি আপনাদের সঙ্গেই থাকব। আমার লাইসেন্স করা পিস্তলটা প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারব?যদি মনে করেন আপনার জীবন বিপন্ন এবং মনে করেন জীবন বাঁচানোর জন্য ব্যবহার করা দরকার তখন ব্যবহার করবেন। তবে সে দায়িত্ব আপনার। আপনার পিস্তলের গুলিতে কেউ মারা গেলে আমরা সে দায়িত্ব নেব না। জি, আচ্ছা। গাড়ি থেকে মেজর আতিক বললেন, ফলো মি। দলের সবাই তাকে অনুসরণ করে জঙ্গলের ভিতরে গিয়ে ঢুকল। চোখের আলোয় কোনো কাজ হচ্ছে না। হিম আর অন্ধকারে চোখের আলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মেজর আতিক একটা মাইক্রো টর্চ জ্বালিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছেন। পথটা বেশ বিপদসংকুল। মাঝে মাঝে শিয়ালের ডাক শোনা যায়। পেঁচারাও জেগে আছে—বোঝা যাচ্ছে তাদের হঠাৎ হঠাৎ ডাক শুনে। ঘণ্টাখানেক পায়ে হাঁটার পর বাগান বাড়িটি তাদের নজরে আসে। কে জানে, অন্ধকারে হয়তো মেজর আতিকের চোখ আনন্দে নেচে উঠেছিল। বাড়িটির পুব দিকে গিয়ে দাঁড়ায় মেজর আতিক। প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বাড়িটি। একমাত্র প্রবেশপথ দিয়ে বাড়িতে ঢোকা সম্ভব। এছাড়া বাড়িতে ঢোকা সম্ভব নয়। প্রাচীরটি বেশ উঁচু। তারপর দেয়ালের উপরে কাচের টুকরো বসানো। কাচের টুকরোতে শরীর কেটে কুটি কুটি হওয়ার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। মেজর আতিক এক জোয়ানকে বললেন, তুমি কি কম্বলগুলো সঙ্গে এনেছো?জি স্যার, এনেছি।ভিজানো আছে তো?না, স্যার ভিজানো নেই। পাশে কোথাও পানি আছে কিনা দেখো। পানি পেলে ভিজিয়ে নিয়ে এসো। একটু সামান্য দূরেই একটি খাদের সন্ধান পাওয়া যায়, সেখান থেকে কম্বল দুটি ভিজিয়ে আনা হলো। মেজর আতিক বললেন, এখন কম্বল দুটি প্রাচীরের ওপর ফেলো, যেন দুপাশেই যেন কিছুটা কম্বল ঝুলে থাকে। জোয়ান তাই করল। কম্বল দুটি প্রাচীরে ফেলে দিল। সঙ্গে সঙ্গে আতিক কম্বলের ঝুল ধরে লাফ দিয়ে প্রাচীর টপকালো। অন্যরাও মেজর আতিককে অনুসরণ করে প্রাচীর টপকালো। ভূড়ি, শক্তি আর সাহসের অভাবের কারণে কাশেম পাটোয়ারী প্রাচীরে এপাশেই দাঁড়িয়ে আফসোস করতে লাগলেন। আসলে তাঁর কিছুই করার ছিল না। এই উঁচু প্রাচীর টপকানো ওনার পক্ষে সম্ভব নয়। বাগান বাড়িতেও গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ। তারা খুব সাবধানে এগিয়ে গেলেন। ঘরের ভিতরে কিছু মানুষ আছে। গেটে দারোয়ান। পিছন দিক থেকে দারোয়ানকে ঘাড়ে একটা আঘাত করলেন মেজর আতিক। সঙ্গে সঙ্গে বেহুঁস হয়ে পড়ে দারোয়ান। তার অস্ত্রটা কেড়ে নেয় এক জোয়ান। যে রুমে কয়েকজন মানুষের কলরব, হাসাহাসি শোনা যাচ্ছিল সে রুমের ভিতরে একটা গ্যাস বোমা ফেলা হলো। এই বোমায় ক্লোরিন গ্যাস থাকে। তাই কেউ মারা যায়নি। সবাই দশ মিনিটের জন্য অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তারা নিশ্চিত হয় বোমার গ্যাসে ভিতরের মানুষগুলো অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। দরজা ভেঙে ওরা ভিতরে ঢুকে।ভিতরে ছয়জন সশস্ত্র যুবক ছিল। তারা অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে আছে। মেজর আতিকের নির্দেশে তাদের অস্ত্র কেড়ে নেয়া হয়। বেশ আধুনিক অস্ত্র। যুবকদের হাত বেঁধে ফেলা হয়। তারা এখন নিরাপদ প্রাণী। মেজর আতিক দশ মিনিট সময় অপেক্ষা করে। দশ মিনিট পর যুবকদের হুঁস ফিরে এলে মেজর আতিক জিজ্ঞেস করে, তোমরা এখন বন্দি। আশা করি কোনোরূপ বাড়াবাড়ি করবে না। বাড়াবাড়ি করলে ক্রস ফায়ার। একজন বলল, স্যার বাড়াবাড়ি করব না। আপনার কী আর্জি বলুন। বিজ্ঞানী কান্টিবান্টিকে কোথায়?বিজ্ঞানী কান্টিবান্টি মাটির নিচের ঘরে। চলেন, আপনাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। সবার হাতে হাতকড়া। তাই ওদের কিছুই করার নেই। নাচের পুতুলের মতো। তবে এতো সহজে রাজি হওয়ার মধ্যে কোনো মতলব আছে কিনা মেজর আতিক ভাবছেন। কারণ, দুষ্কৃতিকারীদের সহজে রাজি হয়ে যাওয়ার মধ্যে জবরদস্ত ষড়যন্ত্র থাকে। তবে যেহেতু হাতকড়া পরা তাই এদের দিনে চিন্তা নেই। চিন্তা হলো এদের অন্য কোনো দল থাকতে পারে, যারা আক্রমণ করতে পারে। তবে নাও থাকতে পারে। আবার এও হতে পারে, সে কান্টিবান্টির রুম না দেখিয়ে আরও শক্তিশালী দলের মুখোমুখি আমাদের করিয়ে দিতে পারে। যাক, এসব ভাবনা কোনো কাজে লাগেনি। আসলে ধৃত অপহরণকারী মাটির নিচে নিয়ে যায়। কান্টিবান্টির সুদৃশ্য প্রাসাদের ভিতর গিয়ে ঢোকে। কান্টিবান্টি চেয়ারে বসে বসে ঝিমুচ্ছে। মেজর আতিক ও ধৃতদের দেখে আনন্দে লাফিয়ে ওঠে। মেজর আতিক মনে মনে বলে, অপারেশন সাকসেস। কান্টিবান্টিকে নিয়ে বের হয়। সঙ্গে ছয়জন অপহরণকারীও।