ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব আট
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। প্রথম পর্ব
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব- ০২
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। তৃতীয় পর্ব
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব চার
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব পাঁচ
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব ছয়
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব সাত
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব আট
- ধারাবাহিক উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব নয়
- উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব দশ
- উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব এগারো
- উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।।পর্ব বারো
- উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব তেরো
- উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব চৌদ্দ
- উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের।। পর্ব পনেরো
- উপন্যাস।। পাথর সময়।। মঈনুল আহসান সাবের ।। পর্ব ষোল
জামান তার অপেক্ষাই ছিল। তাকে দেখে মৃদু হাসে — ‘এসেছো, বস।’ রুম্পা ব্যাগ খুলে দশটা পাঁচশাে টাকার নোট জামানের সামনে রেখে গম্ভীর গলায় বলে- ‘ধর’ তােমার টাকা। ব্লাকমেইল করলে, অলরাইট, আমি কিছু মনে করছি না। হয়তাে টাকা তোমার সত্যিই দরকার। এখন জিনিসগুলাে দাও, আমি উঠবাে।’ আস্তে বেইবী, আস্তে – জামান এক হাত ওঠায় সামান্য। ‘জিনিসগুলাে দাও, আমি উঠব। তােমার সঙ্গে সব সম্পর্ক তো তুমিই নষ্ট করে ফেললে, আমি যাব’ গলায় একটু অভিমানের প্রলেপ লাগায়, যদি কাজে দেয়। কিন্তু জামান তার ধার কাছ দিয়েও ঘেঁষে না, সে হাসে- কাম কাম রুম্পা, আমাদের জানি আরো কি কথা ছিল?
‘আমার শরীর খারাপ।’
জামান আবার হাসে—- ‘তবে সেটা তুমি গতকালই বলে যেতে।’
‘আমার খেয়াল ছিল না।’
‘ওয়েল, আমি তবে ওয়েট করতে রাজি আছি’— জামান আড়মোড়া ভাঙে— ‘তুমি না হয় দিন কয়েক পরেই নিলে ছবিগুলো।’
না, তা হয় না, জিনিসগুলাে তার আজই দরকার। সে ক্রদ্ধ চোখে তাকার জামানের দিকে— ‘ঠিক আছে, মিথ্যে বলেছি। এখন তােমার যা ইচ্ছে ক’রে আমাকে বিদায় কর।’
‘নাে’ — জামান সঙ্গে সঙ্গে মাথা নাড়ে, তা হয় না, আজ তােমার সঙ্গে আমার হোল–ডে প্রোগ্রাম।’ মানে?
‘মানে অতি সহজ- সরল। আজ আমরা ঘুরবাে – ফিরবাে। ভালাে কোনাে সিনেমা থাকলে সেটাও দেখতে পারি। দুপুরে চাইনিজে যাব। তারপর ঐ ব্যাপারটা। আফটার অল, আমাদের শেষ দিনটা সেলিব্রেট করা উচিত, তাই না?’
‘তুমি কি করে ভাবলে আমি সারাদিন থাকবাে তােমার সঙ্গে?’
‘তুমি থাকবে।’
রুম্পা চোখ তুলে তাকায়। জামান স্থির, তার চোখে বিন্দুমাত্র উত্তেজনার আভাস নেই। বড় একটা শ্বাস ফেলে রুস্পা ‘হােল- ডে?’
‘হা, হােল- ডে। আফটার অল শেষ দিন।’
‘তারপর আমি আমার জিনিসগুলাে ফেরত পাবাে তাে?’
‘অবকোর্স পাবে, তােমার ভাষ্য অনুযায়ী আমি কাউকে হয়তাে ব্লাক মেইল করতে পারি — কিন্তু এ গ্যারান্টিও দিতে পারি — আমার কথার নড়চড় হবে না। বলেছি যখন দেব, দেব।’
জামানের একটা ১৭৫ সি সি মােটর সাইকেল। তার পেছনে চাপতে হবে রুম্পাকে। ‘রিকশা নিলে হয় না’ — সে মৃদু আপত্তি জানায়। জামান মাথা নাড়ে— ‘রিকশা কেন, এতদিন তাে আমার মােটর সাইকেলের পেছনে বসে দিব্যি ঘুরে বেড়ালে। আজ রিকশা কেন?’
মােটর সাইকেলে দারুণ হাত জামানের। পেছনে বসে দারুণ লাগতাে রুম্পার। আজ ওসব থ্রীলের কিছুই সে অনুভব করে না। মনে হয় তার সঙ্গে একটা সম্পর্ক আছে এটা রাষ্ট্র করার জন্যেই জামান তাকে পেছনে বসিয়েছে।
ব্যাপারটা নিশ্চয়ই তাই, পরে রুম্পার মনে হয়। জামান খামােখাই এদিক ওদিক চকর মারছে । কোনাে নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থল নেই। কোথাও এক মুহূর্তের জন্যে সে অবশ্য থামছেও না।
ঘন্টা খানেক প্রায় এভাবে চলার পর শেষমেষ জামান থামে এক চাইনিজ রেস্তোরাঁর সামনে। রুম্পার হাত ধরে বলে— ‘এসাে, আগের মতাে হাসি মুখেই যাই … তােমার এত বিমর্ষ হওয়ার কারণ নেই, একটু না হয় কষ্ট করে হলেও মুখে হাসি ফোটাও ।’
চাইনিজে খুব একটা কথা হয় না । ঢালাও অর্ডার দেয় জামান, বলে— ‘তােমার অনারে আজকের লাঞ্চ, কিপ্টেমী করলে চলে না।’
খেতে খেতে জামান বারবার হাসে — ‘তােমার তবে বিয়ে।’ বেশ বেশ, সুপাত্র পেলে ঝুলে পড়াই ভালো।’
রুম্পা কষ্ট করে একটু হাসে – ‘হু, তাই ঝুলেই পড়ছি।’
‘তােমার সঙ্গে দিনগুলাে আমার ভালােই কাটলাে।’
আমারও ।’
‘তাই নাকি’ —জামান হাসিতে ভেঙে পড়ে— ‘শুনে খুব আনন্দ পাচ্ছি।’
খাওয়া শেষে বেশ কিছুক্ষণ রেস্তোরাঁয়ই বসে থাকে তারা। যখন ওঠে তখন আর অনির্দিষ্ট ঘােরাঘুরি নয়। মিনিট বিশেকের মধ্যে জামান এক অভিজাত এলাকার চমৎকার এক বাড়ির সামনে এসে থামে।
জামান এ বাড়িতে আগে এসেছে, তার ভাবে -সাবে বােঝা যায়। বেল টিপলে দরােজা খােলে জামানের সমবয়সী এক ছেলে। ‘আয়’ — সে ছেলে দরােজা পুরাে খুলে ধরে। একবার রুম্পার দিকে তাকায়— ‘ওয়েল, আপনিই তবে রুম্পা দি গ্রেট, আসুন।’ সামান্য কাঁধ ঝাকিয়ে হেসে সে রুম্পাকে ঢােকার জায়গা করে দেয়।
জামানের সঙ্গে তুই – তােকারী সম্পর্ক, কিন্তু এ ছেলেকে আগে কখনাে দেখিনি রুম্পা। চমৎকার চেহারা, গাঢ় নীল জীনসের সঙ্গে হাফ হাতা সাদা তুলোটে গেঞ্জি, চোখ জোড়া ভারী উদাসীন। রুম্পার বুকের ভেতরে কেমন করে ওঠে। আহা, এই শেষ মুহুর্তে কেন এ ছেলের সঙ্গে দেখা!
তারা প্রথমে ড্রয়িরুমে বসে। চমৎকার ফ্লেভারের চা যেন তৈরিই ছিল । সার্ভ করতে করতে সে ছেলে বলে— ‘আমার নাম আকবর, জামানের গুড ওল্ড ফ্রেণ্ড ।
••••গতকাল ও রিং করলাে, আজ আপনাকে নিয়ে আসবে ….
তবে কি এ ছেলেও সব জানে? রুম্পা একটু হাসে, জানুক, তার আর এখন কিছু করার নেই। সে বলে— ‘আপনি মনে হচ্ছে একা থাকেন এখানে?’
আকবর সামান্য কাধ ঝাঁকায় — ‘বলতে পারেন, মাঝে মাঝে বন্ধুরা আসে। এই আজ যেমন আপনারা এলেন।’
জামান ঘড়ি দেখে— ‘আকবর, আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে। ওকে আবার বিকেলের মধ্যে ফিরতে হবে।’
‘ওহ, নিশ্চয় নিশ্চয়’ — আকবর মুহূর্তের মধ্যে দাঁড়ায়— ‘আমি দেখছি।’
মিনিট পাঁচেরে মধ্যে সে ফিরে আসে — ‘ওয়েল, তােরা যদি নিরিবিলিতে বসে সিক্রেট আলাপ সেরে ফেলতে চাস, তবে আয় …..
প্রথমে আকবর, তারপর জামান, তাদের পেছনে পেছনে রুম্পা এগােয়।
যে ঘরে তারা ঢেকো, সে ঘর দেখে রুম্পা অবাক হয়ে যায়। তার বাবার অঢেল আছে। দু’হাতে খোলাম কুচির মতাে সে পয়সা ওড়াতে পারে। তার বন্ধুরাও তাদের স্ট্যাণ্ডার্ডের কিংবা তাদের চেয়েও বড়লােক কিন্তু এমন একটা সুন্দর ঘর তাদের কারাে বাসায় দেখেনি সে।
পুরাে ঘরে কমপক্ষে তিন ইঞ্চি পুরাে কার্পেট। দারুণ চেহারার চার পাঁচটা চেয়ার এক জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। প্রথমে মনে হয়েছিল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে, পরেই ভুল ভেঙেছে তার, ওটা আসলে সাজানোর এক ধরনের কায়দা। ঘরে এককোণে মেঝে থেকে ফুট খানেক উঁচু মেহগুনি কাঠের স্ট্যান্ডের ওপর স্টোরিও রাখা। ঘরের এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পাঁচটা স্পীকার। আরেক কোণে টেলিভিশন, ভিসিআর। দরজার মুখােমুখি বিছানা। না, খাট নয়, মেঝে থেকে ফুট দু ফুট উচু শুধু গদি। গদির মাথার দিকে ধবধবে সাদা টেবিল। টেবিলের ওপর দুটো টেলিফোন দু’ তিনটে ক্যালকুলেটর আকারের মেশিন। একটি সম্ভবতঃ টেলিভিশনের রিমােট কন্ট্রোলার, বাকী দু’টো কি সে বুঝতে পারে না। ঘরের মধ্যে এই একটা জিনিশই সাদা। বাকীগুলাের একেকটার একেক রঙ। কিন্তু সবগুলাে রঙ একটার সঙ্গে আরেকটা কি চমৎকার মানিয়ে গেছে। পুরো দেয়াল জুড়ে অদ্ভুত সুন্দর কারুকাজ করা ওয়াল পেপার।
তারা ঘরে ঢুকতেই, ‘তাহলে জামান তােরা বস’ বলে আকবর বেরিয়ে যায়। এখন চার দিক বন্ধ। জামান পায়ের জুতো আলস্য ভরে খুলে রাখে। রুম্পার হাত ধরে টানে— ‘আস।’ বিছানার ওপাশে একটা ক্যাবিনেট। ওয়াল পেপারের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে তার বাইরের রঙ। এতক্ষণ তাই চোখে পড়েনি রুম্পার। কিন্তু জামানের জানা, সে ক্যাবিনেট খুলে বােতল বের করে। দুটো ছােট গ্লাস ভর্তি করে একটা বাড়িয়ে দেয় রুম্পার দিকে। রুম্পা না না করে। সে কখনাে খায়নি এমন নয়। কিন্তু এখন সে পুরাে স্থির থাকতে চায়। জামান তার হাতে গ্লাসটা জোর করে ধরিয়ে দেয়। রুম্পা একবার রাগী চোখে জামানের দিকে তাকায়। তারপর এক ঢােকে গ্লাসটা খালি করে দেয়। সে ভেবেছিল গলা জ্বলে যাবে, পেটের ভেতরে কেমন কেমন করবে। কিন্তু ওসব কিছুই হয়না। বরং স্বাদটা খুব চমৎকার। জামান তার গ্লাসটা আবার ভরে দেয়। রুম্পা এবার না করে না।
নিজের গ্লাসে একটা চুমুকও দেয় না জামান। রুম্পা জিজ্ঞেস করলে সে মাথা নাড়ে – ‘না, তার চেয়ে বরং এখন রবিশংকর শােনা যাক। জামান টেবিলের ওপর কি এক বাটন পুশ করে। পর মুহূর্তে ঘরের সব দিকে থেকে আওয়াজ জেগে উঠে। কোথায় রবিশংকর, রুম্পা লজ্জায়ই পায়, ঘরের চারদিকে শুধু শীৎকার ধ্বনি। রুম্পার দিকে তাকিয়ে জামান একটু হাসে। মৃদু হাতে সে নিজের জামা কাপড় খুলতে আরম্ভ করে। একটা একটা করে খােলে ছুঁড়ে মারে দূরে। তারপর সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে বসে থাকে কতক্ষণ। উঠ সারা ঘর চকর খায় একবার । ততক্ষণে রুম্পার হয়ে গেছে। পানীয়ের স্বাদটা চমৎকার বৈকি, কিন্তু এখন সে টের পায় শরীরে জোর নেই। জামান সম্ভবতঃ এ সময়ের জন্যেই অপেক্ষা করছিল। সে একটু দূরে দাঁড়িয়ে রুম্পার দিকে তাকিয়ে হাসে তারপর এগিয়ে এসে তার শাড়িতে হাত রাখে। সবকিছু টের পায় রুম্পা। কিন্তু মেয়েলী স্বভাব বশেও একবারাে না করতে পারে। ঐ পানীয়ের কী গুণ। তার শরীর আর তার নেই। তাকে অনেকটা পুতুলের মত ব্যবহার করে জামান। তাকে দিয়ে যা ইচ্ছে করিয়ে নেয়, রুম্পা শুধু আচ্ছন্ন অবস্থা টের পায়।
আচ্ছন্ন অবস্থা কাটে বেশ অনেকক্ষণ পর। রুম্পা মাথা ঝাঁকিয়ে বারবার সুস্থির হতে চায়, জামান আরেকটা গ্লাস ধরিয়ে দেয় তার হাতে। এবার গলা বুক বেশ জ্বলে। মাথা নিচু করে কতক্ষণ বসে থাকে সে। ঝিমুনি কেটে যায় ক্রমশঃ। পাশে সে জামানকে দেখে সম্পূর্ণ পােশাক পল্লা। সে নিজে সম্পূর্ণ নগ্ন। তার পােশাক অবশ্য এক জায়গায় জড় করে রেখেছে জামান। রুম্পা সেদিকে হাত বাড়ালে জামান উঠে দাঁড়ায়— ‘তুমি তৈরি হও, আমি আসছি।’
জামান বেরিয়ে এসে একটা সিগারেট ধরায়। বাইরের ঘরে সােফায় বসেছিল আকবর। তাকে একটা সিগারেট অফার করে জামান জানতে চায— ‘আকবর সাহেব, আপনি আমাকে পেমেন্ট করবেন কবে?’ আকবর হাসে – জামান সাহেব, এতটা উতলা হওয়ার কিছু নেই। আগে ফিল্ম ডেভেলপ করি, কি রকম হয়েছে দেখি, পেমেন্ট তাে তারপর। তবে পেমেন্ট অবশ্যই হবে, ঘাবড়াবার কিছু নেই, আপনার সঙ্গে আগেও কাজ হয়েছে …। জামানও হাসে— ‘না না, ঘাবড়াচ্ছি না। আমি শুধু জানতে চাইলাম আর কি। আকবর উঠে দাড়ায়— ‘মেয়েটার ক্যামেরা ফেস বেশ ভালােই মনে হল, শরীরটাতাে চমৎকার, আপনি অবশ্য ওর শরীর পুরােই ঢেকে দিচ্ছিলেন ….. তাই বলে ছবি খারাপ হবে আমি মনে করি না ……… আপনারা যাচ্ছেন তা হলে? … মেয়েটা জিজ্ঞেস করলে বলবেন আমি হঠাৎ জরুরী কাজে বেরিয়ে গেছি।’ আকবর আর দাঁড়ায় না। জামান সিগারেটের শেষাংশ অ্যাশট্রেতে গুজে দেয়। ভেতরের ঘরে ফিরে গিয়ে দেখে রুম্পা রেডি। তাকে দেখেই রুম্পা হাত বাড়ায় দাও। ‘কি?’ জামান খুব অবাক হয়।’ ইয়াকী মেরাে না জামান। যা চেয়েছে পেয়েছে। অতিরিক্ত রকম নােরামাে করেছাে আমাকে নিয়ে। …. এখন আমার জিনিসগুলাে দাও। জামান হাসে— ‘ব্যস্ত হয় না, দিচ্ছি। আগে এ বাড়ি ছাড়ি, তারপর। রুম্পা অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে তার দিকে। ধীরে ধীরে ঘর থেকে বের হয়। হাঁটতে একটু অসুবিধে হয়, তা সে বুঝতে দিতে চায় না। আকবরকে দেখা যায় না কোথাও। তা নিয়ে রুম্পার অবশ্য মাথা ব্যথাও নেই এখন। তারা পটিকোয় জামানের মােটর সাইকেলের পাশে এসে দাঁড়ায়। জামান তার প্যান্টের পেছনের পকেট থেকে একটা খাম বের করে দেয়। রুম্পার আর তর সয় না। সে কামের মুখ ছিড়ে এক এক করে প্রতিটা জিনিস দেখে। শেষে বলে ‘একটা সত্যি কথা বলবে জামান, এর একটাও ফটোস্ট্যাট করে রাখনি তাে?’
জামান হাসে — পাগল, ফটোস্ট্যাট করে রাখার কি দরকার। এগুলাে এরপরও না দিলে তুমি কিইবা করতে? দেখাে, ফটোর নেগেটিভ গুলাে পর্যন্ত ফেরত দিয়েছি। রুম্পা একটু হাসে — তাহলে শােধ- বােধ হয়ে গেল জামান, ….. তুমি আসলেও ভালাে ছেলে। জামান রুম্পার বাড়ানাে হাতের সঙ্গে হাত মেলায়— ‘হ্যাঁ শােধ – বােধ হয়ে গেল, চুকেবুকে গেল। তা, মেয়ে হিসেবে তুমিও খুব ভালাে ……. জামানের মােটর সাইকেল রাস্তায় নামে। রুম্পা এদিক – ওদিক তাকায় দূরে ক্রমশঃ মিলিয়ে যাওয়া মােটর সাইকেলের দিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ মুখ খারাপ করে। তারপর নিশ্চিন্তে সে এগোয়।