সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব তিন
- কল্পবিজ্ঞান কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব এক
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব দুই
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব তিন
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব চার
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব পাঁচ
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব ছয়
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব সাত
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব আট
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।শেষ পর্ব
৩.
রোবটটা চলে যেতেই আবার পেপারে মনোযোগ দিলেন বাবা। রোবট গবেষণা বিষয়ক খুব চমকপ্রদ একটা নিউজ ছাপা হয়েছে। কিন্তু খুবই অল্প। ছাপ্পান্ন শব্দ। খবরটার বিস্তারিত জানা দরকার। গেজেটে খোঁজ করতে হবে। নয়ত ইন্টারনেটে। গেজেটের দিকে তাকাতেই চোখে পড়ল আসিফের দিকে। আর বাবাকে নিজের দিকে তাকাতে দেখেই আসিফ জানতে চাইল, ‘কেমন বুঝলে বাবা?’
‘কিছু একটা লুকনোর চেষ্টা চলছে। মনে হচ্ছে ভেতরে ভেতরে কোথাও কোনো ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু সেটা প্রকাশ করছে না। ষড়যন্ত্রের জাল সবগুলো মহাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছে। অনেকগুলো এজেন্ট আছে ওদের। পরিচয় গোপন রেখে কাজ করে যাচ্ছে এজেন্টগুলো। হয়ত আমাদের অতি পরিচিত ওরা। কিন্তু আমরা ওদের চিনতে পারছি না। ওদের কোনো কাজেও সন্দেহ করার মতো কিছু পাচ্ছি না। কিন্তু যতই ধুরন্দর হোক না কেন, কোথাও না কোথাও ফাঁকণ্ডফোঁকর তো আছেই। একদিন আমরা ঠিক ওদের চিনে ফেলব। একটা সুতো ধরতে পারলেই পুরো জালটা ধরতে পারব।
কী চাল চেলেছে সেটাও বুঝতে পারব। এই যে খবরটা প্রকাশ হয়েছে, এটা নিশ্চয়ই কোনো ম্যাসেজ। এজেন্টদের জন্য কোনো গোপন তথ্য।’
বলেই থামলেন বাবা। একটা মুচকি হাসি দিলেন। যেন দম নিলেন। তারপর আবার বলতে শুরু করলেন, তবে একটা জিনিস বুঝতে পারছি। এই সংবাদপত্রের গ্রাহকদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এজেন্ট। নইলে খবরটা এ সংবাদপত্রে ছাপা হতো না। তোর কি মনে হয়?
আমি কি ঠিক কথা বলেছি?’
বাবা কথা বলতে শুরু করলে ও চুপ থাকে। নইলে ভীষণ রেগে যান বাবা। এতক্ষণে কথা বলার সুযোগ পেল আসিফ। বলল, ‘আমি নতুন কেনা রোবটটার কথা জানতে চেয়েছি বাবা। রোবটটা তোমার কেমন লেগেছে?’
আসিফের কথা শুনে এবার বাবা নিজেই যেন হ্যাং হয়ে গেলেন। আসিফের দিকে কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। আসিফের চোখদুটোর দিকে তাকালেন খুব মনোযোগ দিয়ে।
দৃষ্টির শাবল দিয়ে আসিফের দুচোখের ভিতরটা যেন খুঁড়তে শুরু করলেন। আর খুঁড়তেই থাকলেন। কিন্তু কিছুই পাচ্ছেন না। তবু একটা অস্বস্তি বোধ করছেন।
কিন্তু কেন হচ্ছে অস্বস্তি?
আবারও জানতে চাইল আসিফ, ‘রোবটটা কেমন হয়েছে বাবা? তোমার পছন্দ হয়েছে?’
হঠাৎ আবার সচল হলেন বাবা। চটপট জবাব দিলেন, ‘আগেরটার মতোই প্রায়। কম কথা বলে এমন রোবট কি বাজারে নেই? চাকর বাকরের মুখে বেশি কথা শুনতে খারাপ লাগে। এদের তর্ক করাটা আমার একটুও পছন্দ নয়। হোক না রোবট।
আসিফ বলল, ‘আসলে আমার একটা গণিত জানা ভালো রোবট দরকার ছিল। এজন্যেই এটাকে অনেক ঘুরে তারপর কিনেছি। শেষ টিউটরিয়ালে আমার গণিতের নম্বর খুব খারাপ ছিল।’
বাবা বললেন, ‘ঠিক আছে। তোমার গণিতের জন্যে না হয় ওটার বকবকানির অত্যাচার সহ্য করব। সহ্যের ওপারে গেলে তখন ব্যবস্থা নেয়া যাবে। কিন্তু আমি যেন কী খুঁজছিলাম?’
তখনই ঘরে ঢুকল রোবট। বাবার শেষ কথাটা শুনতে পেয়েছে মনে হয়। ওই কথার সূত্র ধরেই রোবট বলল, ‘আপনি চা খুঁজছিলেন স্যার।’
অবাক হলেন বাবা। ‘না তো! আমি তো এসময় চা খাই না।’
‘ক্ষমা করবেন স্যার। আপনি চাণ্ডই চেয়েছিলেন।’
এবার ধমক দিলেন বাবা, ‘চুপ। আমি বললাম আমি চা চাইনি। তুমি জোর করে আমাকে চা চাপিয়ে দিলেনই হবে?’
এবার রোবটটার থেকে যে স্বর বেরুল, মনে হলো খুব দু:খ পেয়েছে। ‘আমার কাছে প্রমাণ আছে স্যার। শোনাব? চাইলে দেখাতেও পারি। তবে সে জন্য একটা ছোট্ট কাজ করতে হবে। আমার ভিডিও রেকর্ডারের ডানপাশের একটা স্ক্রু ঢিলে হয়ে গেছে। ওটা টাইট করতে হবে। তাহলেই প্রমাণ দেখতে পাবেন।’এবার হেসে ফেললেন বাবা। বললেন, ‘প্রমাণ দেখাতে হবে না। শোনাও দেখি…’ হঠাৎ রোবটের শরীরের কোথাও যেন বেজে ওঠল, ‘তোমার অনুরোধের জন্যেও ধন্যবাদ। যাও, চা নিয়ে এসো।Õ একটু আগে এই কথাই বলেছিলেন বাবা। সেটা রেকর্ড করা ছিল। রেকর্ড থেকেই আবার শোনানো হলো।
বাবা বললেন, ‘চা যখন বানিয়ে নিয়েই এসেছ, আর কী করা। দাও।’
চায়ের কাপটা বাবার হাতে ধরিয়ে দিল রোবটটা। আর বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল।
বাবা চায়ে একটা চুমুক দিলেন। চুমুক শেষ করার পর পরই রোবট জানতে চাইল, ‘চা কেমন হয়েছে স্যার?’
‘তোমাকে দিয়ে ওরা চা বানানোটা ভালোই রপ্ত করিয়েছে দেখছি। তা মিস্টার পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স…..’
বাবার কথাটাকে লুফে নিয়ে রোবটটা বলল, ‘মাফ করবেন স্যার, মিস্টার নয়, মিস। যদিও এর কোনো মূল্য নেই। তবুও…..’
‘সরি সরি মিস পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স। তবে আমি যেটা বলতে চাচ্ছিলাম,
তোমার গলার স্বরটাকে নিয়ে বোধ হয় ওরা তেমন একটা ঘষামাজা করেনি। ওই রিন রিন শব্দ শুনতে শুনতে ঘেন্না ধরে গেছে আমার। স্বর সৃষ্টিতে বিজ্ঞান এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। যদিও অনেক চমৎকার সুর সৃষ্টি করেছে বিজ্ঞান। সেসব সুরের কাছে পাখির সুর, নদীর আহ্বান,পাহাড়ের কান্না,সাগরের মূর্চ্ছনা সবকিছুকে কেমন যেন পর পর লাগে। কিন্তু রোবটদের ডেলিভারি শব্দে তেমন উন্নত করতে পারেনি কোনো প্রতিষ্ঠান। খুবই দু:খজনক আর খুবই অবাক করা ব্যাপার!’
এবার ঠাণ্ডা স্বর বেরুল মিস রোবটের গলা থেকে, ‘যেহেতু কোনো অভিযোগ নেই, কাজেই এরপর থেকে ঠিক এই মাত্রার চা পাবেন। ধন্যবাদ।Õ
বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেল মিস পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স। আসিফ তার পিছন পিছন।