মেহেরুন্নেছা ভূঁইয়া- কবিতা

মেঘনা

মেঘনার বুকে চরে আজ জেনেছি শরৎ এসেছে
দুপাড়ের সবুজ ঘাসের বুক ছিরে হেসেছে
সাদা সাদা কাশফুল।
কাছে গিয়ে ইকটু ছোঁয়ে দিতে মন আমার হয়েছে ব্যাকুল।
হাওয়ায় হাওয়ায় যখন মেঘনার বুকে ভেসে চলে তরী
চেয়ে দেখি দিগন্তে, বিস্তৃত আকাশ, সীমাহীন জ্বলরাশি
মিলেমিশে হয়েছে একাকার!
মাঝখানে যেন তার সবুজ পাহাড়।
ঐদিকে ব্যস্ত পানকৌড়ি-মাছরাঙ্গা খোঁজে আহার।
ঢেউ এর তালে তালে কচুরিপানা ও দোলে।
চেয়ে দেখি পশ্চিম আকাশে শেষ বিকেলের সূর্যটাও নুয়ে পড়েছে।
চারপাশ হয়েছে আঁধার।
অবশেষে তীরে এসে যখন তরী থামলো।
মেঘনাকে জানিয়ে বিদায়, আমার গন্তব্যে দিয়েছি পাড়ি।

আর কতো আর কতো

স্বপ্নকে যতোবার ছুঁয়েছি
হতাশার আগুনেই শুধু পুড়েছি!
স্বার্থপরের মতো বার বার গ্রাস করেছে
আমাকে স্বপ্নহীন হাহাকার!
অবহেলার বিষাক্ত বাতাসে
সে কবেই তো হয়েছে খন্ড খন্ড
অনুভূতিহীন এই হ্দপীন্ড!
তবু ও কেন? আঘাতের এই খেলা।
ইচ্ছে করে বর্নিল বিয়ারের গ্লাসে
চুমুকে চুমুকে নিঃশ্বেষ করে দেই নিজেকে!
নেশায় নেশায় মাতাল হয়ে
ঠিকানাহীন এ জীবনে পাই না খোঁজে তাল!
ব্যর্থতার আশকারায় আজ বেহাল!
তবুও অনুভূতির নেই কোন খেয়াল!
অস্থির রাত পার হয়ে যায়
তবুও কাটেনা হায় অভিমানেরর ঘোর
আজ কাল সেল ফোনে ও বাজে বিষাদের সুর!
আর কতো আর কতো? হবে ক্ষত?
অনেক তো কেঁদেছি
অবশেষে কাঁন্নার কাছেই হেরেছি!
অনুভূতির নেই তো জানা গন্তব্য
ভালোবাসার অনাহারে
কতো কাচের চুড়ি ভেঙে গেছে
ভাঙ্গনের সাথে ভেঙে গেছে ইচ্ছে যত।
কেউ কী তখন শুনেছিলো ভাঙ্গনের সুর?
সবাই তো চলে যায় অবেলায়
পাশ কাটিয়ে একলা ফেলে
একটা সুখের ঘর বানাবো এই বলে!
অক্ষয় উৎসাহে তবুও আছি পথচেয়ে
অযৌক্তিক শান্তনা নিয়ে আর কতো
আর কতো আর কতো—

যে দিন বাজবে স্লোগান

মিছে সব আশা মিছে সব ভালোবাসা
মিছে আজ হ্দয়ে হ্দয়ের বন্ধন,
মিছে বেদনার সব কন্দন,
মিছে জীবনের প্রতিটি যুদ্ধ
বৃথায় চলার পথ হয় কেন অবরোদ্ধ?
মিছে দেহের দহনের প্রতিটি নিঃশ্বাস
সব মিথ্যের আড়ালে অবাঞ্ছিত
মনে প্রাণে তাই বিশ্বাস!
মিছে সব মোহের মায়া
অসময়ে হয় না যে কেউ ছায়া!
বৃথা এই পৃথিবী মিছে সব স্মৃতি
মিছে সব মিছে, কেউ তো কারও নয়
সমাপ্তির লগ্নে সব অভিনয়!
সেইতো যাবে মাটি দেহ মাটিতেই মিশে
তবে কিসের অহংকার।
অসাড়ের দেহ হবে নিষ্প্রান
যে দিন বাজবে স্লোগান!

আর তো কদিন পরেই আসবে শ্রাবণ

জৈষ্ঠৈর শেষে আষাঢ়ের হলো আগমন
আর তো কদিন পরেই আসবে শ্রাবণ।
শ্রাবণের বৃষ্টিতে ভিজে হয়ে যাবো
একাকার, মানবো না কোন বারণ।
আর তো কদিন পরেই আসবে শ্রাবণ।
ফোটবে শিউলি কদম্ব আরও কতো ফুল
গন্ধে হবো আমি আকুল।
মেঘে মেঘে ডেকে যাবে আকাশ
চার পাশে বইবে মাতাল বাতাস।
লোকুচুরি করবে সুনালি রৌদ্দোর
যখন বাজবে আমার পায়ে নূপুর।
আধাঁরে হারাবে অভিমানে দুপুর।
যখন বৃষ্টির নৃত্যে বেজে উঠবে
রিনিঝিনি সুর।
বৃষ্টিতে ভিজে হারিয়ে যাবো নিজে।
শ্রাবণের স্পর্শেই কাটবে ঘোর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *