খান মুহাম্মদ রুমেল এর কবিতা

প্রগতিশীলতা

ঝুল বারান্দায় ঝুলে থাকে রোদ
উচ্ছিষ্ট ভোগী বুদ্ধিজীবীর মতো।

ডানে বাঁয়ে কোথাও না গিয়ে
মাঝ বরাবর আটকে থেকে
সব দরোজা খোলা রেখে
দুয়েক লাইন বলে ফেলা
গলার শিরা টানটান করে
প্রগতিশীলতা এরই নাম!

হাওয়াই মিঠাই বেচা লোকটা আজ-
বক্তৃতা বেচে খায়।
টেন্ডার বেচা লোকটা আজ-
ইজারা নিয়েছে দেশপ্রেমের।
বুদ্ধিতে শক্তিতে শান শওকতে
এগিয়ে যাওয়া সমাজে
একাত্তরের সগির আলী দেখে
কোথাও নেই ঠাঁই তার।
বয়সের সঙ্গে মরিচা পড়েছে
হাতিয়ারে এবং হাতিয়ারে।

জানো নিশ্চয়ই
শীত মানে উষ্ণতা
শীত মানে প্রগতিশীলতা।

ফুল ছড়িয়ে

খুব ছেলেবেলায় পাঠশালার পথে
তেড়ে আসতো পাগল বুড়ো এক
বইখাতা ফেলে কাদাজলে পালিয়েছি
আতঙ্ক নীলে জমে গেছি কতোদিন!
মনে মনে ভেবেছি-
শোধ নেবো বড় হলে!

শীতের শুরুতে আসতো নুলো বুড়ি
চোখহীন ভিখিরির ভয়ে আড়ালে লুকোই
ফোকলা দাঁতে তবুও আমায় ডাকে
তীব্র ঘৃণায় নিজের ধিক্কার দিয়েছি
থরথর কেঁপেছি ধূসর ঝোলার ভয়ে।
মনে মনে ভেবেছি-
শোধ নেবো বড় হলে।

পদ্মের খোঁজে চষে বেড়িয়েছি এমাথা ওমাথা।
সবার যখন পূর্ন ডালি আমার কেবল শূন্য খালি
মন খারাপের তীব্র ব্যথায় অভিশাপ দিয়েছি।
মনে মনে ভেবেছি-
শোধ নেবো বড় হলে।

বড় হতে হতে, পারিনি হতে
কেবল চুলগুলো গেছে পেকে!

সবাইকে তখন-
ভালোবেসে ফেলেছি!
আমি এসেছিতো কেবল-
ভালোবাসা ছড়াতে!

প্রত্যয় আমার

আমি আগলে থাকি ভালোবাসা
আমি চাই ফুল হয়ে ফুটুক
বুকের পাঁজরে লেগে থাকা কষ্টগুলো।

কেউ পাশে এসে বসুক
হাত বুলিয়ে দিক মাথার চুলে
বুকের মাঝখানে হাত রেখে বলুক-
কিসের এতো ব্যথা তোমার!
আমি আছিতো!

যদি এমন কেউ না আসে
আপত্তি নেই
আমি পূর্ণতা নেবো
আকাশের শূন্যতা থেকে
বাতাসকে বলবো আমাকে নাও
তোমার স্পর্শে উড়ে যাবে বেদনারা
বৃষ্টিজলে ধুয়ে নেবো সকল নীল।
নীলকন্ঠ হয়ে গাইবো অবিরল!

আমাকে দুঃখের ভয় দেখিও না।
বেদনারা আজীবনের সঙ্গী আমার।

বুকের আগল খুলে দাঁড়াতে শিখেছি আমি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *