মৌ মধুবন্তীর কবিতা

পলেস্তারা

এক রোখা দিন
উলটো করে ভাজছে
সোনামুগ ভাবনা
কাহারবা পদক
খামছে ধরেছে
জাতিস্মরের আস্তিন।
কিলবিল করছে
নিত্যদিনের বাজার দর
এমন সময় ভেতর থেকে কে এসে
চিৎকার করে বলে, থামা, এই বাজনা
আমাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে
সমুদ্র থেকে খালের দিকে– মাথায় রক্ত
উঠে বমি করে মরে যাবে
এই অবুঝ দিন। অবাধ্য
করিস না; যা কিছু নিজস্ব,
লোটা কম্বল নিয়ে সেখানেই
বসত গড়- চিৎকার শুনে
থেমেছে কি একটি ও পদক্ষেপ?

তবে কেন এইসব বাহানা?
ক্ষয়িষ্ণু এই সমাজ ধারায়
চলতে চলতে পৃথিবী ও
একদিন হাতের পিঠ
চেটেপুটে লোনা ঘামের
স্বাদ পাবে না। চারিদিকে গ্লোবাল
ওয়ার্মিং– নাচ দেখে কি
আতংক মনে হয়নি?
নুসরাত ফাতেহ আলীর
গানের মাঝে ডুবতে ডুবতে
সকাল সহ আমিও ডুবে গেছি।

কীটদংশিত সমাজ, কাদা মাখা
ভাবনা –কোথায় চলেছি ?
কার হাত ধরে?
ভেজেই যাচ্ছে মুগ,
অথচ আবহ সঙ্গীত
আবেগহীন, গন্ধহীন দিনের
বি্লাপ যেন শ্বাশত ভাবনায়
এক বিয়োগান্তিক কঠোরতা।
কুঠার যেমন কাটে,
দিন কেটে যাচ্ছে।
একরোখা!

শুয়োর খাবোনা, ধর্ম খেয়েই বাঁচি

আমি খাবো না, খাবো না, যে যা বলে
গরু কিংবা শুয়োর
আমি, পথের ধারে পড়ে থাকিব, হবো না ধনী
থাকিব কেবল পুয়োর
আমি তাকাবো না, আঁকাবো না, কোন ভাস্কর্য
বা মুর্তির ছবি
আমি হবোনা আঁতেল, বাউল মাতাল, হবো না
যুক্তিবাদী
আমি সকল কিছু পায়ে ঠেলিয়া,শিক্ষা-দীক্ষার
করিব বরবাদী
আমি নকল করিয়া, পিরীতি করিয়া ডিগ্রী
লইব ভুরি ভুরি
আমি মন্ত্রী সাজিয়া,হিসাব করিয়া, ব্যাংকের
টাকা করিব চুরি
আমি কাহারো কাছে জবাবদিহি করিব না
সজ্ঞানে
ধরা যদি পড়ি কোনিদিন,ভান করে রবো
দোষ দেব বিজ্ঞানে।

কালো ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়নি মৃত্যু হয়েছে সাদাবিবেকের

ডেরেক শোভেনের হাঁটুর ভাঁজে
অতি সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছ
একটি অভিনব মুভির।
মুভিটির নাম “৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড”।
শ্বাসরুদ্ধকর টান টান
উত্তেজনা নিয়ে গড়ে উঠেছে
মর্মান্তিক সেই মুভির কাহিনী।
মুভির নায়ক একটি সাদা হাঁটু
মুভির চিত্রকল্পে আছে এক কালো গর্দান।
খল নায়ক ছিল একখান কুড়ি ডলারের
কাগজের নোট, যার সিরিয়াল নাম্বার
নাকি ক্রমিক নাম্বারের মত
সতেজ ও উজ্জ্বল ছিল না।
তাই জর্জ ফ্লয়েডের
উজ্জ্বল জীবনের যবনিকা টেনেছিল
সেই কুড়ি ডলারের নোটের
ন্যায্য বিচার নামের চরম প্রহসন।

কোথায়? এখন সেই সৎ-নীতিবান স্টোর এমপ্লয়ী
যার একটি ফোন কল
আজ সারা আমেরিকায় সৃষ্টি করেছে
বর্ণবাদী এক প্রলয়ংকরী ঝড়ের।
জর্জ ফ্লয়েড নামের
কালো মানুষটির মৃত্যু হয়নি
মৃত্যু হয়েছে আমেরিকার
সাদা বিবেকের,
সাদা নিরাপত্তার
সাদা প্রশাসনের।

কলাবাগানে হিসসা

মৃত্যুতেও ট্রাফিক জ্যাম।
লাগুক না মরণে মড়ক।
ক্ষুধাও থাকুক কিছুকাল অনাহারে।

মেঘের গুপ্তচর এখন কলাবাগানের
নির্মলেন্দু। দুর্বাশা বাতাস মেখে চোখে
নিয়তি হাল চালায় বক্ষিলার উদম বক্ষে।

একবার শুধু ফিরে তাকিয়ে দেখে।
-যতটা পথ ফেলে এসেছে, সব নির্মুল।
হাঁটার কোন চিহ্ন নেই। কবোষ্ণ-কষ্টে
সেঁওতির বান এসে জলের গলায় ফাঁস
লাগায়। যুবতির গামছায় সকলের এমন
দোহারা দেখন- সইবে না শরীরের লোমকুপ।

দেহের ভেতরে এখন গতর
খাটায়। বামুন!তোর চোখে বাজ পড়ুক।
অভিধান থেকে বিদায় দিলাম
যুবতির চিহ্ন।
এখন তুই কি হিসসা নিবি বল!

টরন্টো, কানাডা, পৃথিবী
লেখনঃ এক যুগ আগে
যখন কালের হিসাব ছিলো না

বৃক্ষহীন বাঁচতে চাই ২

একি কাল গ্রহণ।
না ঘুম আসে,
না মন বসে,
কেবল স্মৃতি
হয়ে উঠে আসে ,
খুবই কাছে,
নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে,
বুকের ওমে,
অর্ধমৃত স্নিগ্ধরসে
ভিজিয়ে রাখি,
কষ্ট পাখি-বহুব্রীহি
কষ্ট কিনবে কেউ?
কষ্ট ঘরে ঘুম ঝোলে?
আমি ঘুম কিনতে চাই-
কাল দেখেছি ছাদে
ঘুম নেড়ে দিয়েছ ।
আজ ঘুম কলাপাতা।
আমাকে একটু ঘুম দাও,
–চোখের পাতায়

মৃত্যুর মাঝেও কিছু
শোরগোল থাকে-
ঘুমের প্রশান্ত-বালিকা
মুঠো মুঠো মৃত্যু গিলে
গোলার্ধের কনক সাহারায়
বৃক্ষহীন এই আমি আত্মার
ঘুমগন্ধ নিয়ে ফুসেফুসে–
বাঁচতে চাই
লেখনী সময়-অনাদিকাল
টরন্টো কানাডা,পৃথিবী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *