উপন্যাস।। কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ।। পর্ব দশ
- উপন্যাস।। কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।।এহসান মাহমুদ।।প্রথম পর্ব
- উপন্যাস ।। কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ।। পর্ব দুই
- উপন্যাস।। কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ।। পর্ব তিন
- উপন্যা।।কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ।। পর্ব চার
- উপন্যাস।।কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ।। পর্ব পাঁচ
- উপন্যাস।।কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ ।। পর্ব ছয়
- উপন্যাস।।কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ।। পর্ব সাত
- উপন্যাস।। কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ।। পর্ব আট
- উপন্যাস।। কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ।। পর্ব নয়
- উপন্যাস।। কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল।। এহসান মাহমুদ।। পর্ব দশ
১০
তিন দিন পরে মারিয়াকে কেবিনে আনা হয়েছে। পা থেকে গলা পর্যন্ত একটা নীল চাদর দিয়ে ঢাকা। হসপিটালের সাদা বিছানায় শুয়ে মারিয়া জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। মাথা বাঁকা করে আমার দিকে তাকাল একবার। আমি এগিয়ে মারিয়ার মাথার পাশে দাঁড়ালাম। ওর কপালে হাত দিয়ে বাম পাশের চুলগুলো ঠিক করে দিলাম।
কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বললাম, ‘জানালার পর্দাটা সরিয়ে দেব?’
মারিয়া কিছু বলল না। ঠোঁটের কোণে সামান্য হাসি দেখা গেল। মারিয়ার পায়ের কাছের জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিলাম। বাইরে তখনো অন্ধকার। একটু আগে ফজরের আজান হয়ে গেছে। ঢাকার রাস্তার ল্যাম্পপোস্টগুলো এখনো জ্বলে আছে। জানালার পাশেই বারান্দা। এখান থেকে নিচে তাকালে একটা কাঁঠালগাছ চোখে পড়ে। কাঁঠালগাছের পাতাগুলো গাঢ় সবুজে কালচে হয়ে আছে। মারিয়া একবার বলল, শীত লাগছে। আমি এসি বন্ধ করে দিলাম। একটু পরে আবার বলল, জানালাটা খুলে দাও। আমি মারিয়াকে বুঝিয়ে বললাম জানালাটা এখন খোলা যাবে না। মারিয়া ছোট্ট বাচ্চার মতো অভিমানে মুখ ফিরিয়ে রাখল। খানিক পরেই আবার বারান্দায় গিয়ে বসতে চেয়েছিল। কিন্তু ডাক্তারের বারণ আছে, তাই নিয়ে যাইনি। ডাক্তার বারবার সতর্ক করে বলেছেন, বাইরের কেউ যেন এখন রুমে প্রবেশ না করে। এই সময়টা বিশেষ করে, প্রথম সাতদিন ইনফেকশন সংক্রমিত হওয়ার সময়। তাই সাবধানে থাকতে হবে। গত কয়েকটা দিন আমি হাসপাতালেই আছি। অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি। জানালার পর্দাটা সরিয়ে আবার মারিয়ার মাথার পাশে এসে দাঁড়াই। মারিয়ার কাছে জানতে চাই, কিছু খাবে কিনা?
মারিয়া মাথা নাড়ে। অপারেশনের পরে ব্যথা কমাতে যে ওষুধ দেওয়া হয়েছে তার প্রভাবে টানা ঘুমিয়েছে মারিয়া। মাঝে দুবার জেগেছিল। আবার ঘুমিয়ে পড়েছে। এখন ফজরের আজানের পর থেকেই জেগে আছে। আমি ওর বিছানার কাছে চেয়ার নিয়ে বসে আছি। মারিয়া আমার দিকে মাঝে মাঝে তাকায়। আবার চোখ ফিরিয়ে জানালায় রাখে।
হাসপাতাল থেকে রাতে স্যুপ দেওয়া হয়েছিল।
মারিয়ার কাছে জানতে চাই, ‘স্যুপ খাবে?’
মারিয়া নিরুত্তর।
আমি বাটিতে স্যুপ নিয়ে পাশের টেবিলে রাখি।
মারিয়া আমার দিকে তাকিয়ে ইশারা করে বসতে বলল। চেয়ার টেনে পাশে বসলাম। ওর হাতের নাগালে আসতেই চাদরের নিচ থেকে হাতটা বের করল। হাতে ক্যানোলার সুই লাগানো জায়গাটা ফুলে আছে। আমার হাতের ওপর হাতটা রেখে চোখ বন্ধ করল। বাইরে তখন আলো ফুটতে শুরু করেছে।