ঈদসংখ্যার গল্প।। কোথায় গেল সে।। নুসরাত সুলতানা

আক্কাস খান দাঁড়িয়ে গরু কাটা দেখছে। ছোট পুত্র মনজু খান হাক দিয়ে বলে অই জসিম
আব্বারে বওনের লাই একটা চেয়ার দে। আক্কাস খান জিজ্ঞেস করে – গোসত কয় কেজি
অইব? কী মনে কয় তোর?
মুহিব বলে তা দুই মন অইবে মনে লয় বাজান।
মানুষ তো সাকুল্যে পাঁচশো জন। তাছাড়া খাসিও তো আছে একটা। খাসিতে মনে কয় কেজি
দশেক অইব।
আক্কাস আলী দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে বলেন, মানুষ খুশি মনে যেন পেট ভইরা খাইয়া
যাইতে পারে। তাইলেই আমি খুশি রে বাপ! এতদিনে মালিক মুখ তুলে তাকাইছে! আমার
পোলা-বৌ খুশি আমি আর কী চাই? কত-কী না করলাম চব্বিশ বছরে? এই কবিরাজ, হেই
কবিরাজ, পীর, গুনিন কোনডাই বা বাদ থুইছি ক!
আর বউডাও বড় লক্ষীমন্ত। যা কইছি তাই হুনছে। কোনো সময় নারাজী অয় নাই। পেছন
থেকে ছোট ছেলের শ্বশুর এসে বলে পুতেও আপনের সবুর করছে বেয়াইসাব। কত দেখলাম
পোলাপান না অইলে দ্বিতীয়বার বিয়া কইরা বসে পাঁচ বচ্ছরে। আর পুত আমাগো অপেক্ষা
করলো চব্বিশ বছর! আল্লাহর কী খেয়াল চব্বিশ বছর পর বউমা পোয়াতি অইল।
রেহানা বেগম পনের বছর বয়সে এসেছিল শ্বশুর বাড়ি। বিয়ের তিন মাসের মাথায়ই স্বামী
চলে যায় সৌদি আরব। স্বামী বলেছে আমি নবীর দ্যাশে থাইক্কা তোমগো সবার লাই
দোয়া করবার পারমু আর ইবাদত বন্দেগিও করতে পারমু। এতে পরিবারের সগলের মঙ্গল
অইব। স্বামীর খুশিকেই নিজের খুশি জেনেছে রেহানা।
শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, দেবর- ননদ নিয়ে আনন্দে দিন কাটিয়েছে স্থুল শরীরের অধিকারী
রেহানা। বাপের বাড়িতেও তেমন যায়নি। এই নিয়ে রেহানার মায়েরও আফসোস একেবারে
কম নেই।

পড়াশোনা বলতে নবম শ্রেণি পাস রেহানা। শ্বশুর – শ্বাশুড়ির সেবা যত্ন করা, সংসারের
কাজ আত্মীয় স্বজনের মেহমানদারী করা সবই খুব নিখুঁত ভাবে করেছে রেহানা
দাম্পত্যের শুরু থেকেই। তাই শ্বশুর – শ্বাশুড়ি এবং দেবর-ননদ সবাই খুব সন্তুষ্ট
রেহানা বেগমের ওপরে।
কিন্তু একটাই তার দুঃখ। গত চব্বিশ বছরে তার কোল জুড়ে কোনো সন্তানাদি আসেনি।
মোবারক প্রতি বছর দুই মাসের জন্য বাড়ি এসেছে। আর প্রতিবারই স্ত্রীর সাথে যেমন
সহবাস করেছে প্রায় প্রতি রাতে তেমনি নিয়ে গেছে রহমতুল্লাহ কবিরাজের কাছে। নিয়ে
গেছে যোগেশ্বর গুনিনের কাছে। তারা তাবিজ দিয়েছে, পানি পড়া দিয়েছে, তেল পড়া দিয়েছে
আবার গাছরা ঔষুধও দিয়েছে। সব কিছুই খুব নিষ্ঠার সাথে পালন করেছে রেহানা।
মোবারক জায়নামাযে প্রার্থনায় বরাবরই বলেছে- হে পরওয়ারদিগার আপনি তো বৃদ্ধ
বয়সে জাকারিয়া (আ:)কে বংশধর দিয়েছেন। আপনি সব পারেন মাবুদে এলাহি। আপনি এই
গুনাহগার বান্দার পানে রহমতের দৃষ্টিতে এট্টু তাকান। গুনিন আর পীরের পানি পড়া
আর মোনাজাতে চোখের পানি- এই দুয়ের ওপর সবসময়ই রেহানা-মোবারক দম্পতির
অপার আস্থা জমেছিল হৃদয়ের গহিন বন্দরে। আশা-নিরাশার দোলাচালে মহাকালের গর্ভে
বিলীন হয়েছে কোটি কোটি সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত।
খান বাড়িতে বউ হয়ে আসার পর রেহানা বিয়ে দিয়েছে দুই দেবর এবং একমাত্র ননদের।
দুই দেবরের বিয়ের সময়ই প্রথম বাসরের বিছানার চাদর ধুয়ে দিয়েছে। প্রথম শ্বশুরবাড়ি
আসার পর ছোট জায়েদের খাওয়া দাওয়া যেমন খেয়াল রেখেছে তেমনি সব কাজ-কর্মে
সাহায্য সহযোগিতা করেছে। শ্বশুর -শ্বাশুড়ি কী পছন্দ করে, কী অপছন্দ করে সেটা খুব
সুন্দর ভাবে ছোট বোনদের মতো বুঝিয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে ছোট জা শিউলি যখন গর্ভবতী
ছিল নিজ হাতে ছোট মাছ চচ্চড়ি, ডালের পিঁয়াজু, বাজে পদী শাক প্রায়শই নিজ হাতে রান্না
করে খাইয়েছে। বাড়ির সকলে তো রেহানাকে সমীহ করে, ছোট জা একেবারে মায়ের মতো
শ্রদ্ধা করে রেহানাকে। তাছাড়া যখনই দেবর-ননদদের বাচ্চা হয়েছে রেহানা আতুর ঘর
থেকেই বাচ্চার রক্ত- পানি ছেনেছে। বাচ্চার কাঁথা -কাপড় ধুয়ে দিয়েছে। প্রতিবেশীদের
মুখে শুনেছে- আতুর নাড়াচাড়া করলে নাকি বাচ্চা হয়।

মোবারক সেবার বাড়ি এসেছিল চার মাসের জন্য। বাড়ি এসেই খুব তোড়জোড় চালিয়েছিল।
স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিল বড় পীর সাহেবের কাছে। পীর সাহেবের মাজারে দিয়েছে একটা গরু,
দুইটা খাসি, একশখানা কোরান শরীফ। পীর সাহেব গ্যারান্টি দিয়ে বলছে আর কেওর ধারে
যাওন লাগব না। এই তিনমাসের মদ্যেই প্যাটে বাচ্চা আইব।
মোবারক চলে যাওয়ার পর এই সাত মাস রেহানার মাসিক বন্ধ। দুইমাস চলে গেলে
একদিন ফজরের নামাজ শেষে শ্বাশুড়িকে রেহানা জানিয়েছিল তার মাসিক বন্ধের কথা।
শ্বাশুড়ি খুব আনন্দে আজওয়া খেজুর বের করে বলেছিল- নে বউ আল্লাহু শাফী, আল্লাহু
মাফী কইয়া মুখে দিছ। শুরুতে সারাদিন ওয়াক ওয়াক করে বমি আনতো রেহানা। খেতে
পারতো না কিছুই। এরপর শ্বশুর নিয়ে যায় কবিরাজের কাছে। কবিরাজ দেখানোর পর
খাওয়া দাওয়া করতে পারছে একটু। এর ভেতর দুই দিন শ্বাশুড়ি দূর থেকে দেখেছে রেহানা
পোড়ামাটি খাচ্ছে। শ্বাশুড়ি হেসে হেসে শ্বশুর কে বলেছে- তোমার বড় পুতের বউয়ের
এক্কেলে বেশি আকা অইছে গো! বেডি দেহি পোড়ামাডি খায়। এরপর দুজনেই হেসেছে পরম
প্রশান্তির হাসি।
সাতমাসে পড়লে মোবারক বলেছে- সব আত্মীয় স্বজন এবং গ্রামের সকল মানুষকে
নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে। টাকা পাঠিয়েছে এক লাখ। ষাঁড় কিনেছে বড় একটা। খাসি
কিনেছে একটা । বাড়িতে প্রায় পাঁচশো মানুষের আয়োজন। আত্মীয় স্বজন, পাড়া –
প্রতিবেশীতে বাড়ি গিজগিজ করছে। সবার মুখে মুখে ফিরছে পীরের কেরামতি। ছাব্বিশ
বছর পর রেহানার গর্ভধারণের কাহিনি। সবাই বলছে কত কবিরাজ আর গুনিন ব্যর্থ
হয়েছে এ যাবৎ। রেহানা লাল শাড়ি উপহার পেয়েছে চারটা। রেহানার মা উপহার দিয়েছে
সোনার চেইন। মোবারক বলেছে বাচ্চা হওয়ার পর সোনার বালা বানিয়ে দেবে। ছেলে-মেয়ে
যাই হোক আগে হাফেজী পড়াবে। আল্লাহ কতদিন পর তাদের দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন।
রেহানা স্বামীকে জিজ্ঞেস করেছে- পোলাপান অইলে আমারে সেই পেথমের মতো সোহাগ
করবা তো! মোবারক আহ্লাদী কণ্ঠে উত্তর দিয়েছে – তোমারে কবে সোহাগ করি না?
আমি কোনো সময় অন্যকিছু ভাবছি কও! এমনিতেই স্থুল ছিল রেহানা। গর্ভবতী হওয়ার
পর ভাত মাছ আর বাজেপদী শাকই তার পছন্দ। তাই স্থুলতা বেড়েছে আগের চাইতে
বহুগুণ। স্থুল শরীর, চ্যাপ্টা ঠোঁট, বোচা নাক আর ডাগর চোখ বিশিষ্ট, শ্যামবর্ণা

রেহানার মুখমন্ডলে যেন পরিষ্কার স্বচ্ছ দীঘির মায়া খেলে যায় স্বামীর এমন প্রশ্রয়
মাখা উক্তিতে।
রেহানা বসেছিল চেয়ার নিয়ে দাওয়ায়। রেহানার মা এসে জিজ্ঞেস করে – কিরে প্যাটে নি
লাতিলুতি মারে?
রেহানা হাসিমুখে বলে – না, মারে না আবার! দিনে চৌদ্দবার হেতি ফুটবল খ্যালে প্যাটের
মদ্যে। রেহানার মা- খুশি খুশি মুখ করে বলে- শালার ভাই শালা আগে আইয়ুক কত ফুটবল
খ্যালবার পারে দেখুম আমি!
সেদিন সারাদিনই রেহানার বিশ্রাম নেই। বেলা চারটার দিকে মামা শ্বশুর বিদায় নিয়ে চলে
যাবেন। রেহানা কেবলই বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে। শ্বশুড়ির ডাক আসতেই উঠতে গিয়ে
মাথা ঘুরে পড়ে যায়। দৌড়ে এসে ধরে শিউলি। এরপর রেহানার যোনিপথ থেকে রক্ত পড়েছে
কয়েক ফোঁটা।
পরের দিন শিউলি এবং মুহিব রেহানাকে নিয়ে যায় নোয়াখালী সদর হাসপাতালের গাইনি
আউটডোর।
শিউলি খুব সাবধানে রেহানাকে ধরে ধরে নিয়ে এসে চেয়ারে বসায় বারবার বলতে থাকে-
ভাবী আস্তে, আস্তে…
ভাবী একদম সাবধানে…
ডাক্তার রেহানার বয়স জানতে চান। বিভিন্ন হিসেব নিকেশ করে শেষ পর্যন্ত বয়স
বেরুলো ৪১ বছর।
ডাক্তার জেবুন্নেসা রেহানাকে জিজ্ঞেস করে -কী অসুবিধা আপনার!?
শিউলি বলে-আমি বলি? ভাবীর খুব কষ্ট হচ্ছে।
ডাক্তার শিউলিকে বলে- আপনি তো উনাকে খুব ভালোবাসেন দেখছি।
শিউলি বলে জি ডাক্তার আপা উনি আমার মায়ের মত। যখন এ বাড়িতে বউ হয়ে আসি
ভাবীই আমাকে আগলায়া রাখতো।
পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি লম্বা ফর্সা তীক্ষ্ণ দৃষ্টির ডাক্তার বলে-আচ্ছা আপনিই বলুন,
কিছু বাদ পড়লে আপনার ভাবীই না হয় যোগ করবেন।

শিউলি গরগর করে বলে গেল- ২৪ বছর হইছে ওনার বিয়া হইছে…অনেক চেষ্টা কইরাও
সন্তান হয় নাই। তবিজ কবজ যে যা কইছে সবই করছে, কিন্তু আল্লাহ ফল দেন
নাই….আমার ভাসুর বিদেশ থাকেন, নবীর দ্যাশে, মানুষ ভালো, বাচ্চা না হওয়ার পরও
আর বিয়ে টিয়ে করেন নাই….
ডাক্তার জিজ্ঞেস করে-তারপর?
শিউলি বলে-আল্লহ’র কী ইশারা কে জানে! নয় মাস আগে ভাসুর আসছে বিদেশ থেইকা,
যাওনের পর ভাবীর মাসিক বন্ধ হইয়া যায়…শুরু হয় বমি, খাইতে লইতে পারে না… এই
খবরে পুরা বাড়িতে খুশির বন্যা….। আমার ভাসুর পারলে আকাশরে মাটিতে নামায়…
ডাক্তার বলে তারপর বলুন।
শিউলি বলে-এতদিন ভাবী ভালোই ছিলো। কবিরাজি কইরা খাইতে লইতে পারছিলো।
পরে…কোন সমস্যা নাই।
ডাক্তার জিজ্ঞেস করে- কোনো পাস করা ডাক্তার দেখাননি?
শিউলি উত্তর দেয় – নাহ্। কবিরাজ বললেন, লাগবে না। ওষুধপাতি সব উনিই দিছেন,
আমার শ্বাশুড়ীও বললেন, ঘরের বাইর না হইতে, মাইনষের নজর লাগতে পারে.. “
ডাক্তার জিজ্ঞেস করেন- এখন আসলেন যে?
শিউলি বলে-আসলে, পরশু দিন বাড়িতে সাত মাসের খাওয়ানি ছিল, ভাসুর বলছে, কেউ জানি
বাদ না যায়। পাঁচশ মানুষ খাইছে, ভাবীর একটু হাঁটাহাঁটি , উঁচুনিচু বসা বেশি পড়ছে, কাইল
থেইকা ওনার প্যাটে ব্যাথা। আর যোনিতে হাল্কা রক্ত দেখা যাওয়াতে আমরা ভয় পাইয়া
নিয়া আইছি।
ডাক্তার আচ্ছা বলে রোগীকে সাবধানে বিছানায় শুইয়ে দিতে বললেন। প্রয়োজনীয়
পরীক্ষা করে দেখলেন ডাক্তার। কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাক্তারের মুখ থমথমে হয়ে যায়।
শিউলি জিজ্ঞেস করে ডাক্তর আফা কী অবস্তা?
ডাক্তার বলে- একটা আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখি কী অবস্থা!
আলট্রাসনোগ্রামের মেশিনে জেল মাখিয়ে পেটে বসানোর আগ মুহূর্তে ডাক্তার ভাবে-
কিভাবে বলবো? কী বলে তাদের বুঝাবো!

কিছুক্ষণ পর রিপোর্ট নিয়ে চেম্বারে দুজনই এলেন। বসতে দিয়ে কিছুক্ষণ ডাক্তার
এদিক ওদিক কথা বললেন।
ইন্টার্ন ডাক্তারদের শেখানোর জন্য ডাক্তার জেবুন্নেসা বলেন: মেডিকেল সায়েন্সে এই
অবস্থাকে বলে pseudocyesis or phantom pregnancy, যেখানে রোগিনীর
গর্ভবতীদের মতই উপসর্গ থাকে। যেমন… বমি হওয়া, খেতে না পারা, পেট বড় হচ্ছে,
এবং বাচ্চার নড়াচড়া বোঝা যাচ্ছে বলে মনে হওয়া। গবেষনায় এর প্রধান কারণ হিসাবে
বলা হয়েছে emotional conflict & quot সাধারণত, যারা দীর্ঘ দিন মা হতে পারেননি,
কিন্তু মাতৃত্বের স্বাদ নিতে আকুল তাদের ক্ষেত্রে বেশী হয়, আবার বাচ্চা চান না, যে
কোন সময় প্রেগনেন্ট হয়ে যাবার আশংকায় ভুগেন, তাদেরও হতে পারে। প্রচণ্ড
মানসিক টানাপোড়েন এন্ডোক্রাইন সিস্টেমকে প্রভাবিত করে উপসর্গগুলো তৈরি
করতে।
এরপর রোগী এবং তার সঙ্গিনীকে ডাক্তার বলে-শোনেন, আল্লাহ যা ভাগ্যে রাখেন তাই
তো হয়, হবে। আমরা কি তাঁর ইচ্ছার বাইরে চলতে পারি?
-শিউলি জিজ্ঞেস করে -আপা, বাচ্চা কেমন আছে? ছেলে না মেয়ে?
ডাক্তার পুনরায় বলে- শান্ত হয়ে বসে শুনেন। ওনার পেটে বাচ্চা নাই, মাসিক এমনিতেই
বন্ধ ছিলো, উনি আসলে গর্ভবতীই হন নাই….
ডাক্তার কথা শেষ না করতেই – আর্ত চিৎকারে,তাদের এতদিনের সমস্ত স্বপ্ন কাচের
মত ভেঙে চুরমার হয়ে। দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো এক দুঃসময়ের আহাজারি, করুন
আর্তি!
বুকভাঙ্গা কান্নায় দুজন মানুষ একে অন্যকে শক্ত করে ধরে রাখলেন। তাদের
বিস্ফোরিত চোখ ডাক্তারকে আসামীর কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়ে দিল এক মুহূর্তে…।
পাগলের মত ডাক্তারকে বলতে লাগলেন- কী বলেন আপনি? বাচ্চা নাই মানে কী? বাচ্চা
কোথায় যাবে? প্রতিদিন আমি ওর নড়াচড়া টের পাই…ওর লাথি টের পাই… আমি ওর
জন্য কত কাঁথা সেলাই করলাম এতদিন…ছেলে মেয়ে যাই হোক, নামও মনে মনে ঠিক করে
রাখছেন উনি… আমি ওই মানুষটারে কী জবাব দিব?”

প্রবল অসহায়ত্ব নিয়ে নিজের পেটে হাত বুলাতে বুলাতে কাঁদতে লাগলেন… একটু ভালো
করে দেখেন না? কত সোহাগ কইরা কতা কয় আমার স্বামী এহন। দেখেন না আপনি…
আবার দেখেন…. আমার বাচ্চাটা কোথায় গেল?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *