ঈদসংখ্যার কবিতা ।। সোহেল হাসান গালিব

রেল

সব নারীর মধ্যে মা ও মাগির বাস—
দুটি পাত যেন রেল-লাইনের, শুয়ে থাকে পাশাপাশি;
উড়ে চলে আদিগন্ত হাত ধরে বৃশ্চিক ও মীন রাশি।
.
পুরুষেরা যায় দ্রুত পার হয়ে মালবাহী ট্রেনের মতন
ঝিক-ঝিক ঝাঁকুনিমুখর পথ এই পৃথিবীতে।
.
সে কী ধ্যানযোগ!—মনোযোগ  হারাবার
নাই তো সুযোগ কোনোটিতে।
যেকোনো অবজ্ঞা, হোক এক কণা,
যেকোনো মুহূর্তে ঘটাবেই এবং ঘটায়
শতাব্দীর ভয়াবহ ট্রেন-দুর্ঘটনা।

.

যদিওবা নেই ফিচকে-পুঁচকে পিকেটার,
কোথাও জংশন নেই, নেই কারো হাত
চেন টানবার।

 .

তবুও হুইসেল বাজে, ওড়ে কত ফ্ল্যাগ।
মনে পড়ে বসন্তখচিত মুখ?—
স্টেশন-মাস্টার এক…

চুমু

পাখিরা কী চুমু খায়
এত সরু, কঠিন চঞ্চুতে!
তাদেরও কি সাধ হয়
পালকে আড়াল মন ছুঁতে?
 .

আমরা তো পাখি নই,
ডালে-বসা নির্জন বিকেলে।
—বলেই ফেরালে মুখ
মুখর চঞ্চুটি ছুড়ে ফেলে।

 .

অমনি ভাঙল ডাল,
ঝরল সবুজ-কচি পাতা।
এখন ঘাসের ‘পরে
কেবল ঘুঘুর ফাঁদ পাতা।

.

ফুরালো পাখির গল্প,
ছড়ালো চঞ্চুর ইতিহাস।
যেখানে শ্রাবণ নেই
সেখানেও বৃষ্টি বারোমাস।

পুরুষ

পুরুষ মাত্রেই আস্ত লম্পট—

অশোকবনে খোঁজে অরক্ষিত সীতা।

যদি সে ধরা পড়ে, না দিতে চম্পট—
তখনই প্রেমময়—তখনই স্বামী, পিতা…

.
সে দুশমন—দুষ্মন্ত যেন এক—
কাটাবে যৌবন মধুর মৃগয়ায়।
হরিণী হবে বধ, না ক’রে প্রাণত্যাগ—
শকুন্তলা ক্র্যাক—প্রসূতি-শয্যায়।

 .

শেখে নি পরাজয়, হারে সে পদে পদে;
উপড়ে ফ্যালে কাঁটা অন্য কাঁটা এসে।
লুটেরা মরে তাই লুটেরই সম্পদে—
এখানে পাশাখেলা ছলনা ভালোবেসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *