সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব সাত
- কল্পবিজ্ঞান কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব এক
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব দুই
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব তিন
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব চার
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব পাঁচ
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব ছয়
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব সাত
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব আট
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।শেষ পর্ব
সায়েন্স ফিকশন “পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স’’ আহমেদ রিয়াজ
৭
নিজের ঘরে ঢুকতেই বাবার সেই রাগটা আবার উস্কে উঠেছে। রাগের চোটে এবার ছটফট শুরু করে দিয়েছেন। কি করবেন বুঝতে পারছেন না। রাগ আর দুশ্চিন্তা মিলে ফালা ফালা করছে তাঁকে। মনে হচ্ছে এই বুঝি সবকিছু বালির ঢিবির মতো ভেঙে পড়ল।
‘স্যার কিছু লাগবে?’
বাবা চমকে ওঠেন। মিস পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স এর গলা। রিনরিন শব্দে বাবার মেজাজ আরো অনেকখানি চড়ে গেল। কোনো রকমে নিজেকে সামলে নিলেন। ঠাণ্ডা গলায় বললেন, ‘না, কিছু লাগবে না।’
‘চা স্যার? বৃষ্টিতে ভিজে এসেছেন। চা খেলে ভালো লাগবে।’
চায়ের কথা শুনে বাবার রাগ অনেকখানি ঠাণ্ডা হয়ে গেল। মুখে একটুখানি হাসি ঝুলিয়ে বললেন, ‘আচ্ছা আনো।’
রোবটটা পেছন থেকে এককাপ চা ছোট টেবিলটায় রাখল। হাতদুটো পেছনে ছিল বলে এতক্ষণ দেখেননি বাবা। তবে চটপট চা পেয়ে ভীষণ খুশি হলেন। চায়ে চুমুক দিতে দিতে বললেন, ‘তুমি কি জানো আমি যে চা খুব পছন্দ করি?’
‘জ্বী স্যার।’
‘আসিফ বলেছে?’
‘জ্বী স্যার।’
আর কি পছন্দ করি সে সম্পর্কে কিছু বলেছে?’
‘বলেছে স্যার।’
‘অত স্যার স্যার বলছ কেন? তোমার যা স্বর! ‘ষাঁড় ষাঁড়’ শোনাচ্ছে। ষাঁড় চেন?’
‘গরুর মতো।’
‘ঠিক। এবার বল আমার পছন্দ সম্পর্কে আসিফ কি কি বলেছে?’
‘আপনি জ্যোৎস্না খেতে পছন্দ করেন। মাঝে মাঝে স্পেসশিপ নিয়ে চলে যান পূর্ণিমার ভরা জ্যোৎস্না খেতে।’
‘ভরা পূর্ণিমায় কেন জ্যোৎস্না খেতে যাই জানো?’
‘জানি। আপনার খিদে হয়ত খুব বেশি।’
বাবা হো: হো: করে হেসে উঠলেন। ‘জ্যোৎস্না খেলে পেট ভরে এটা তোমাকে কে বলেছে?’
রোবট বলল, ‘আমি স্যার মনের খিদের কথা বলেছি।’
চা শেষ করে কাপটা নামিয়ে রেখে বাবা বললেন, ‘তোমার মাথায় খুব বুদ্ধি, তাই না?’
‘আমার মাথা নেই স্যার। বুদ্ধি থাকার তো প্রশ্নই আসে না। আমাদের সবকিছু সেলবদ্ধ থাকে। শুধু উপযুক্ত জায়গায় প্লে করতে হয়।’
বাবা এবার ভুল স্বীকার করার মতো করে বললেন, ‘ও সরি সরি মনে ছিল না। তা মিস এফ এক্স আমার সঙ্গে যে এতক্ষণ
রসিকতা করলে এটা কি তোমার ব্রেন সেলবদ্ধ আছে বলতে চাও।’
‘জ্বী স্যার।’
বাবা প্রচণ্ড আশ্চর্য হলেন। তবে আশ্চর্যের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে মানুষ সাধারণত যা করে সেরকম কিছু করলেন না। শুধু বললেন, ‘আমার গবেষণাগারে নিশ্চয়ই তুমি ঢুকেছ।’
‘জ্বী স্যার। এজন্য ক্ষমা চাচ্ছি। তবে আমি না ঢুকলে আপনার আজ চরম ক্ষতি হয়ে যেত।’
বাবা বললেন, ‘ক্ষতির কথা পরে। তোমার সঙ্গে আর কে কে ছিল?’
‘কেউ ছিল না স্যার। আমি একাই।’
‘কিন্তু আমি কমপক্ষে তিনটে রোবটের পায়ের ছাপ পেয়েছি। আমার গুরুত্বপূর্ণ ডিস্ক নিয়ে নাড়াচাড়া করা হয়েছে। আমি কি এত সহজে ছেড়ে দেব? এখন আমার সামনে থেকে যাও। আমার সামনে থাকলে যে কোনো সময় তোমার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তোমার ক্ষতি করে তোমাদের রোবট ইউনিয়নের ঝামেলায় আমি জড়াতে চাই না।’
‘জ্বী স্যার। একটা কথা।’
‘কথা! ওই রিনরিনে শব্দ যদি কথা হয়ে থাকে তাহলে আমি শুনতে চাই না।’
‘কিন্তু আমাকে যে বলতেই হবে স্যার।’
‘নিজের ঘরে গিয়ে একা একা বল। যাতে আমার কানে না আসে।’
‘কথাটা স্যার আপনার শোনা দরকার।’
‘তুমি তো ওদের চর। ওরা তোমাকে আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে। দেয়নি?’
‘জ্বী স্যার দিয়েছে।’
‘রোবট কেনার সময় সারা মার্কেট থেকে উন্নতমানের সব রোবটগুলো সরিয়ে শুধু তোমাকেই রেখেছে মরচে ধরা লোহালক্করগুলোর সঙ্গে। বল রাখে নি?’
‘জ্বী স্যার রেখেছে।’
‘সবকিছুই উদ্দেশ্যমূলক ভাবে হয়েছে। ঠিক না? আমি সব বুঝতে পারি। আমার আরো আগে সাবধান হওয়া উচিত ছিল।’
‘স্যার আপনি খুব খেপে যাচ্ছেন। নিউরন চলাচলের মাত্রা এখন পয়েন্ট সেভেন নাইন থ্রিতে আছে। আর মাত্র পয়েন্ট জিরো জিরো সেভেন হলেই আপনার সেলকড ছিঁড়ে যেতে পারে।’
‘চোপ। মানুষের সেলকড থাকে না। গর্দভ লোহালক্কর কোথাকার!’
‘স্যার আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি। আপনি বিশ্বাস করতে পারেন।’
‘বিশ্বাস!’
‘জ্বী স্যার বিশ্বাস করতে পারেন।’
‘কাকে?’
‘আমাকে স্যার।’
‘তোমাকে! ছি! আমি মানুষকেই বিশ্বাস করি না। আর তুমি তো মানুষের তৈরি সামান্য এক রোবট। রিমোর্ট কন্ট্রোলের মতো চল। এখন আমার বিরুদ্ধে গোয়ন্দাগিরিতে নেমেছ।’
‘আমি সামান্য নই স্যার।’
‘তাহলে অসামান্য?’
‘জ্বী না স্যার। তাও না।’
‘তাহলে কি তুমি?’
‘অসামান্যা স্যার।’
‘হেহ! লোহা পিটিয়ে বানানো হয়েছে যাকে সে আবার অসামান্যা। আবার এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে বলছে। এর চেয়ে আমার মরে যাওয়াও ভালো।’
‘আপনি মরবেন কেন স্যার। আমিই মরব।’
‘ওই রিনরিন গলায় মরব শব্দটা মানায় না। আমি এই শেষবারের মতো বলছি আমার সামনে থেকে যাও। নইলে কিন্তু তোমাদের ওই ইউনিয়ন, সংস্থা কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করব না।’
মিস পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স মাথা নিচু করে বাবার ঘর থেকে চলে এল।