মোস্তাফিজুল হক এর গুচ্ছ ছড়া
১. গ্রীষ্মের দহন
গ্রীষ্ম এলেই চরম গরম
নেই গরমের একটু শরম
গায়ের কাপড় খুলছে!
ফলটা রঙিন দারুণ ভরম
টসটসে বেশ দেখতে পরম
গাছের শাখায় ঝুলছে!
কালচে মতন ফলটা নরম
লালচে মতোন স্বাদটা চরম
জাম-লিচু-আম দুলছে!
ভুগছে দহন খুকির মরম
গাছ বাওয়া কি খুকির ধরম?
কষ্টে দুচোখ ফুলছে!
২. কাতলের বিয়ে
কাতলের বিয়ে হবে
বাজে বাঁশি-বাদ্য,
বিয়েবাড়ি যাবে হাতি
খাবে নানাখাদ্য!
তেড়েমেরে হাতি তাই
নেমে গেল নদীতে,
ডুব দিয়ে দেখে হাতি
বর বসে গদিতে!
ফুলেভরা গদি আর
মিঠাইয়ের হাঁড়ি,
তেরেকেটে তাকধিন
ঢোলকের বাড়ি!
হাতি নাচে পুঁটি নাচে
নাচে মেয়ে শিঙ্গি,
ছোট খোকা দেখে এল
বেয়ে তার ডিঙ্গি!
৩. ছড়ার দেশে যাবো
ছড়াগুলো কেমন করে
দেয় তোমাদের ধরা?
ওসব নিয়ে ভেবে আমি
হুঁশ হারিয়ে মরা!
আচ্ছা বলো কেমন করে
মাত্রা গুণো তুমি?
কেমন করে ছড়ায় টানো
বিষণ্ন মৌসুমি?
তুমি দেখি স্বপ্নে হারাও
পাখির ডানা মেলে!
কেমন করে পাখির ডানা
ছড়া লিখেই পেলে?
আমাকে সেই পথের দিশা
দেখাও এবার হেসে,
আমারও তো সাধ জেগেছে
উড়তে ছড়ার দেশে!
আর যদি না পেলাম সেটা
এমনই ঘুম দেবো,
হাজার ডাকে উঠবো না গো
মাটিতে ঠাঁই নেবো!
৪. কলমটা দাও হাতে
আগস্ট এলে মাগো আমার
দুচোখ জলে ভাসে,
রাজা-খোকার মায়াবীমুখ
চোখজুড়ে খুব আসে!
লাল পতাকায় স্বাধীনতা
আনলো যে এই দেশে,
সেই খোকাটা শহিদ হল
কোন হায়েনার ক্লেশে?
মাগো আমার খেলার সাথী
রাসেল সোনা কই?
আগস্ট এলে এসব ভেবে
লজ্জিত খুব হই।
কোন্ বা দোষে রাসেল সোনা
খুন হল সেই রাতে?
এসব খুনের জবাবটা চাই-
কলমটা দাও হাতে।
৫. হদ্দের পদ্য
সবকাজ বাদ দিস, হেই হেই ধিন তা
বাদ দিস আজ সব উদ্ভট চিন্তা,
মন দিস আজ তাই কাব্যের সখ্যে
ছন্দের নৌকায় পৌঁছিস লক্ষ্যে।
হায় হায়! বৌঠান ওই খুব রাগলো,
ছন্দের মিল তাই হুটহাট ভাগলো!
থাম থাম ভাইসাব আর নয় পদ্য,
কান ধর আজ তুই উজবুক হদ্দ!
শোন শোন বউ মোর বউ তুই লক্ষ্ণী,
এই দ্যাখ্ এই দাস আজ তোর রক্ষী!
চাস তুই এই দ্যাখ্ ওঠবস করছি,
এই দ্যাখ দুইকান সত্যিই ধরছি!