সৈয়দ রোকন উদ্দিন- এর ছড়া

শীতবুড়ি

হিম হিম গুলশান, তেজগাঁও রমনা
এইবার শীত দেখি ঢাকাতেও কম না।
শীতবুড়ি জানতাম, চুপ থাকে ঢাকাতে
ভয় পায়, ধরে যদি সন্ত্রাসী ডাকাতে।
ওরা ওকে বলেছিল ‘ঢাকাটাকে বাদ দে
তার চেয়ে রাজশাহী রংপুরে হাত দে।
এর পরে চট করে চলে যাবি সিলেটে
ওরা থাক ঠাণ্ডায় ঘরে ঢুকে খিল এঁটে।’
তাও বুড়ি থুত্থুরি শুনলোনা হুমকি
ঢাকা নাকি ছাড়বেনা শীতবুড়ি চুমকি।

কান ধর্

ঘরে যদি রোজ থাকে গোলমাল-
গাছে বসে জ্বিন বলে ঘোল ঢাল্।।
সেই ঘোলে পিছলায় বান্দর-
জ্বিন বলে এইবার কান ধর্।।
কান ধরে বান্দর লজ্জায়-
পড়ে থাকে ঘোলঢালা সজ্জায়।।
তাই দেখে হনুমান ফাল দেয়-
ঘরে ঢুকে ফিসফাস তাল দেয়।।
সেই তালে ঘর হয় নড়বড়
এক ঘরে সব্বাই পর-পর।।
ঘরবাসী একটুতে চমকায়
টিকটিকি ছারপোকা ধমকায়।।

অন্ত্যমিল

একটা ছড়ার পংক্তি শেষে, শব্দ দিলাম ‘দন্ত’
তারপরে তার অন্ত্যমিলে, কী দেয়া যায় কনতো?
পরের চরণ শেষে একটা, শব্দ বসাই ‘চলুন’
অন্ত্যমিলের জন্যে এখন, কোনটা মানায় বলুন।
পংক্তি এবার শেষ না হতেই, আসলো মরার ‘বন্যা’
যুতমতো এক শব্দ এখন,কোথায় পাব কননা?
পরের চরণ শেষ না হতেই,ফেঁসে গেলাম ‘পুরাই’
অন্ত্যমিলের শব্দ ছাড়া, কীকরে প্রাণ জুড়াই?
এবার শেষে হঠাৎ করেই, জুড়ে দিলাম ‘হলদি’
কী দেয়া যায় অন্ত্যমিলে, বলুন দেখি জলদি।
পরের জোড়ায়, পংক্তি শেষে, শুধুশুধু ‘ফি-দেই’
একটা খাঁটি শব্দ যে আর, পাইনা খুঁজে, কী-দেই?
এবার দেখি কোত্থেকে য্যান, বসলো এসে ‘ময়না’
মিলের কথা কইতো আগে, ইদানিং সে কয়না।
পরের চরণ শেষেই এবার, দাঁড়ায় এসে বু’জি
এখন চলুন কী দেয়া যায়, ডিকশনারী খুঁজি।
খু্ঁজে খুঁজে এবার শেষে, এসেই গেল কান্না
নাতনি এসে বললো দাদু, ক্ষ্যামা কর, ‘আন্না’।

ছড়ার ছড়া

ছড়া দিয়ে ছড়াকার
ছুঁড়ে মারে কথা তার
এক্কেরে কারো কারো,
নাক বরাবর
যার নাক লম্বাটে
তার নাকে বোম ফাটে
রেগে কয়, এক্ষুনি,
তুই ধরা পড়্।
কিছু কিছু ছড়া-টড়া
টক-টক, ঝালে ভরা
পড়েপড়ে কেউকেউ,
কুঁচকায় গাল
ছড়া যদি কড়া হয়
খুব বেশি চড়া হয়
মস্তকে পড়ে যেন,
ভাদ্দুরে তাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *