মামুন মুস্তাফা’র কবিতা

শনিবার ও হাওয়া ঘুড়ি

আদি পর্ব : ৪
মধ্য পর্ব : ১৮
অন্ত্য পর্ব : ৩১

নিশিযাপনের অন্তঃপুরে ছিলো অগণিত আলোকের ঢেউ। তাহাদের
মনোজলোকে উন্মোচিত হলো সত্যের স্বরূপ! কামাখ্যানগরে কারা
যেন বিষ ঢালে ছলনার;– গহীনের গভীরতা নিয়ে তবুও জেগে ওঠে
বিশ্বাসী ভোর… কেবল আমার পাশে অন্ধকার কাঁপে! দয়িতা খুলে
দিয়েছে নেশাগ্রস্ত চুল, সেই বিস্রস্ত চুলে পথ হারায় গোপন পৃথিবী।
মেঘবালিকা, তুমিও সেই নিপুণ সহোদরা, চৈত্রদাহ ভুলে মন্দির
ভালবাসায় পথ হাঁটো গার্হস্থ্যদিবসে… অথচ জগতসংসার জানে
জন্মলগ্ন থেকে পুরুষেরাই আসন্ন আততায়ী…

চার

মেঘবালিকা দাঁড়ায় এসে মৌন প্রহরে। প্রহর নামতা গুণে পৌঁছে
যায় দিনের শেষ ভাগে। তবুও মেঘবালিকা অস্তিত্বের পাঁজর ভাঙে। জাগরণে… নিদ্রার ভেতরে গোপন মুহূর্তগুলো খেলা করে।
কারা যেন সুন্দরের নখে বোনে মায়াজাল… মেঘবালিকা পৌঁছে যায়
গেরস্থালির খুব কাছে… হাওয়া ঘুড়ির গল্প একাগ্র মৌনতায় গাঁথে
তাহাদের দুপুর…আর দড়াটানার সরল স্রোতে কাঁপে মাটির
কলস…দিন যাপনের পিপাসা…ঘুমক্লান্ত মানুষের ছায়াছবি।
মেঘবালিকা চেয়ে দেখে কবরের মাটিতে হয়েছে জুমচাষ…

একত্রিশ

আভূমি নত এই নগরের কাছে এসে টের পাই মধ্য যামে কুয়াশারা
নামে, প্রান্তরের নীরবতা ভাঙে দূরাগত শিশির। কেবল মনের ঘরে
পীত পাতা ঝরে। কিছু কিছু হেমন্তকালীন অভ্যেস বাসা বাঁধে
দয়িতার খোলা চুলে…কার্তিকের নরোম রোদে ওম নেয় আঙুরের
গুচ্ছ বেদনা…হাওয়া ঘুড়ি বড় বড় বেশি দাগ কাটে জলটুঙি সংসারে;–
এ আমাদের নিয়তি লেপা হিমফাঁস। উঠোনে ছড়ানো শুকনো
পাতা। মর্ মর্ ভেঙে পড়ে, কোন্ সে পদযুগলে ওই কৃতাঞ্জলি!
ঝলসে ওঠে দুর্বোধ্য সময়;– আমাদের যুগল সন্ধি উন্মূল অনিদ্র
কষ্টকীট, হেমন্তের অভ্যেস এ সব। …. ভোরের ভেজা বাতাসে
জলকাঁপা থেমে যেতে যেতে ধূলি ও মেঘের মৃত্যু রচিত হলো এই
শনিবারে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *