প্রবন্ধ।। বিশুদ্ধ ও অশুদ্ধ কবিতার দ্বৈরথ।। অসীম সাহা

‘সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি’—জীবনানন্দ দাশের এই উক্তি কি সারা পৃথিবীর কবিদের জন্য প্রযােজ্য, নাকি শুধু বাংলা কবিতার ঐতিহাসিক পরম্পরার কথা মনে রেখে তিনি বাঙালি কবিদের সম্পর্কেই একথা বলেছিলেন? ভীবনানন্দের মনের কথা আমরা জানি না, কিন্তু তাঁর এই উক্তির মধ্য দিয়ে এক ধরনের আপেক্ষিকতার আভাস আমরা স্পষ্টতই লক্ষ করছি। তিনি হয়তাে এর মধ্য দিয়ে এটাই বােঝাতে চেয়েছেন, অনেকেই কবিতা লেখেন, কিন্তু সকলেই কবি হয়ে ওঠেন না, এদের মধ্যে কেউ কেউ কবি হিসেবে আত্মপ্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কিন্তু জীবনানন্দ দাশ যে – অর্থেই এ – কথা বলে থাকুন না কেন, আমাদের এখানকার কবিরা কি তা মানবেন? মানলে কবি ও অকবির পার্থক্যের সীমারেখা এমনভাবে অবলুপ্ত হয়ে যায়? আমাদের সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিক মিডিয়া। অনেকেরই হাতের মুঠোয়, সেখানে কবি হতে গেলে যে-সৃষ্টিশীলতা অনিবার্য, তার কোনাে প্রয়ােজন নেই? কবিতা যাচাই-বাছাইয়ের আগেই যেখানে কবিকে শনাক্ত করা হয়, সেখানে প্রকৃত কবির চেয়ে মিডিয়া-কবিরাই যে স্বীকৃতির শিকেয় কুলে অন্যদের অবজ্ঞা করার সুযােগ বেশি পাবেন, তাতে আর অবাক হবার কী আছে? আসলে সঙ্কটটা তাে শুধু কবি যশােপ্রার্থীদের নিয়ে নয়, তাদের যারা পৃষ্ঠপােষক তাদের নিয়েও। নিজেদের খ্যাতিকে ধরে রাখা এবং বিস্তৃত করার জন্য এইসব কবি এদেরকে লালন-পালন করেন এবং এক একজনকে দুর্যোধন হয়ে ওঠার সুযােগ করে দেন।

এখন প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন পত্রিকার সাহিত্য পাতাগুলাে খুললে থরে থরে সাজানাে কবিতার প্রবাহ দেখে ভিরমি খেতে হয়। কখনাে কখনাে মনকে প্রবােধ দেবার চেষ্টা করি, যাই হােক, বাংলাদেশে তবে কবিতার বাগান বিস্তৃত হতে হতে একেবারে প্রেইরিতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে! কিন্তু কবিতাগুলাে পাঠ করতে গেলে প্রতি পদে পদে হোঁচট খেতে হয়। কতাে কিসিমের কবিতা যে সেখানে থাকে, তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে গেলে অতি বড়াে সমালােচকেরও দাত-কপাটি লেগে যাবে। যারা এগুলাে ছাপেন, তাদের এ-ব্যাপারে প্রশ্ন করে দেখুন—আপনাকে আধুনিকতা, উত্তরাধুনিকতা, দাদাবাদ, সঙ্কেতবাদ, পরাবাস্তববাদ, অবয়ববাল, কাঠামােবাদ, কিংবা দারিদা, মিশেল ফুকো, ইহাব হাসান, এডওয়ার্ড সাঈদ থেকে শুরু করে এমন এমন সব উদাহরণ তুলে ধরে নিজেদের পক্ষে সাফাই গাইতে শুরু করবেন যে, আপনি ভড়কে গিয়ে হয় পিছটান দিতে বাধ্য হবেন, অথবা চ্যালেঞ্জ খুঁড়ে দিয়ে তাদেরকে বুঝিয়ে দেবেন—তােমাদের জারিজুরি সব বােঝা হয়ে গেছে। কিন্তু সেরকম লােকের সংখ্যা তাে হতে গােনা। সত্যি কথা বলতে গিয়ে সিংহাসনচ্যুত কে-ই বা হতে চায়? আমাদের প্রতিষ্ঠিত কবিরাই যেখানে পত্রিকার পাতায় নাম ছাপার লােভ সংবরণ করতে পারেন না, সেখানে সাম্প্রতিক সময়ের একজন তরুণকে দোষ দিয়ে কোনাে লাভ আছে? কিন্তু প্রতি সপ্তাহে শুধু পাতা ভরাবার জন্য কবিতা নামক ভূরি ভূরি অকবিতা ছেপে প্রকৃতপক্ষে কবিতারই কি ক্ষতি সাধন করা হচ্ছে না? অনেকে মনে করেন, যতাে বেশি কবিতা ছাপা হবে, কবিতা-পাঠকের সংখ্যাও ততাে বেশি বাড়তে থাকবে। কথাটা যে আদৌ সত্য নয়, এখন কবিতার পাঠকের সংখ্যা যাচাই করলেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

কেন এই পাঠক-সংকোচন? কারণটা খুবই স্পষ্ট-কবিতা ক্রমশ পাঠকের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে প্রধানত তার দুর্বোধ্যতার কারণে। এটা সত্যি, কবিতার একটি প্রধান আধার হচ্ছে তার রহস্যময়তা। এই রহস্যময়তাই কবিতাকে সুন্দর করে তােলে। আর রহস্যময়তার মধ্যেই আছে একটু আলাে আঁধারির খেলা। তাতে প্রকৃত কবিতা সাধারণ পাঠকের কাছে একটু দুর্বোধ্য মনে হতেই পারে। কিন্তু এই দুর্বোধ্যতার অভিযোগ মানতে চাননি বুদ্ধদেব বসু। সুধীন্দ্রনাথ দত্তের কবিতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি দুর্বোধ্যতাকে স্বীকার করেননি, তিনি মেনে নিয়েছেন দুরূহতাকে। তাঁর মতে, দুর্বোধ্যতাকে অতিক্রম করা কঠিন, কিন্তু একটুখানি প্রয়াস চালালেই দুরূহতাকে অতিক্রম করা সম্ভব। আর এটা অতিক্রম করতে পারলেই উন্মোচন করা সম্ভব এক সৌন্দর্যময় আলােকিত ভুবন, যার ভেতরে ঘনসংবদ্ধ হয়ে আছে কবিতার প্রকৃত আস্বাদ। কিন্তু আমাদের কবিতা কি সেই রসের জগৎকে উন্মােচন করতে সক্ষম হচ্ছে? হচ্ছে না। তার কারণ আত্ম-অহমিকাও। যে-কোনাে কবি তার সৃষ্টির জন্য আত্মগৌরব অনুভব করতেই পারেন, কিন্তু সেটাই যখন অহমিকায় পরিণত হয়, তখন তার অনিবার্য পতন নিশ্চিত হয়ে যায়। এই আত্ম-অহমিকার প্রধান কারণ, নিজেকে চিনতে না পারা। আমি কেন লিখছি, কী লিখছি, কীভাবে লিখছি, কাদের জন্য লিখছি— এ-বিষয়টি যদি কবির কাছে স্পষ্ট না হয়, তা হলেই আত্মবিমুগ্ধতার প্রতাপে কলমের ডগা থেকে বেরিয়ে আসে অসংখ্য অকবিতার জঞ্জাল। আর এই অকবিতাই জন্ম দেয় সত্যিকার দুর্বোধ্যতা।

আমি মাঝে মাঝে ভাবি, হয়তাে আমিই অজ্ঞান, আর যারা প্রতি সপ্তাহের সাময়িকী পাতাগুলাে কবিতায় কবিতায় সয়লাব করে ফেলছেন, তারা জ্ঞানীরও অধিক জ্ঞানী। কবিতা কি তা হলে এখন আর কোনাে নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে বন্দি ঐতিহাসিক প্রপঞ্চের আধার নয়? রবীন্দ্র-রােমান্টিকতার বিরুদ্ধে দ্রোহের মধ্য দিয়ে যে-আধুনিক বাংলা কবিতার যাত্রা শুরু, সেই কবিতা থেকে এখনকার কবিতা কি তা হলে অনেক দূরে সরে এসেছে? আধুনিক কবিতার ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় যে-কবিরা নতুন দিগন্ত উন্মােচনের মাধ্যমে একটি পুরনো প্রবঞ্চনাকে পরিত্যাগ করে নিজেরাই নির্মাণ করেছিলেন আরাে এক নতুন প্রপঞ্চ, সেখানে কি দিকনির্দেশনাহীন এক অসঙ্গত বিপ্লব সংগঠিত করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছিলো, নাকি তারা সঙ্গত বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই বাংলা কবিতাকে একটি নির্দিষ্ট কাঠামাের আওতায় বিন্যস্ত করার সামষ্টিক প্রয়াসে মত্ত হয়ে উঠেছিলেন? খুব সতর্কভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে, আধুনিক বাংলা কবিতা কোনাে উন্মার্গ আস্ফালনের ফলশ্রুতি নয়, বরং একটি শিল্পিত প্রতিশ্রুতির প্রতিভাস। তাই তিরিশের পাঁচজন কবি ভিন্ন ভিন্ন আবহে কবিতা রচনা করলেও তাদের মূল লক্ষ্য ছিলাে একটিই—রােমান্টিক প্রপঞ্চ থেকে বাংলা কবিতাকে মুক্তি দেয়া এবং সেকাজ তারা সফলতার সঙ্গেই সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ফলে বাংলা কবিতা যেখানে শ্রুতির কাছেই সমর্পিত ছিলাে সুদীর্ঘদিন, সেখানে তা চিন্তার গভীরতর তলদেশ স্পর্শ করার দুঃসাহস দেখাতে সক্ষম হয়েছিলাে। কেননা রােমান্টিকতার দীর্ঘকালীন আবহে অভ্যস্ত পাঠকের কাছে আধুনিকতা এসেছিলাে একটি উত্তুঙ্গ ঝড়ের মতাে। ত্রিশের কবিরা আধুনিক কবিতার নতুন আধার সৃষ্টির ক্ষেত্রে কোনাে পরম্পরাকে প্রাধান্য না দিয়ে আকস্মিক উল্লঙ্কনের মধ্য দিয়ে বাঙালি পাঠককে সজোরে একটি ধাক্কা দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ-ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের সামনে একটি দিকনির্দেশনা ছিলাে। দু দুটি বিশ্বযুদ্ধের অভিঘাত সারা পৃথিবীর মানুষের সামনে যে নিষ্ঠুর, মর্মস্পর্শী এবং আত্মঘাতী প্রবণতার দ্বার উন্মােচন করে দিলাে, সেখানে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার বাইরে এসে। সমষ্টির সৌন্দর্যচেতনার অভ্যস্ত ধারাটিকে প্রবহমান রাখার ক্ষেত্রে তারা কোনাে সক্রিয় ভূমিকা রাখার প্রয়ােজন বােধ করলেন না। নিজের ভেতরে কবি হয়ে উঠলাে একক, আত্মমগ্ন এবং মানবিক বিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণরূপে এক ভিন্নতর মানুষ। কবির কাছে হৃদয়ের চেয়ে প্রধান হয়ে উঠলাে মস্তিষ্ক; যদিও দৃষ্টি, শ্রুতি এবং হার্দিক অনুভবের মধ্য দিয়ে একজন আধুনিক কবি নির্মাণ করতে চাইলেন এমন একটি কাব্যিক প্রপঞ্চ, যা এর আগে বাংলা কবিতায় কখনাে ছিলাে না। কিন্তু এই প্রপঞ্চ নির্মাণ করতে গিয়ে কি আধুনিক কবিরা কবিতার মৌলিক উপাদান ব্যবহার থেকে সম্পূর্ণরূপে সরে এলেন এবং তারা হয়ে উঠলেন। সম্পূর্ণপে বাংলা কবিতারই প্রতিদ্বন্দ্বী? মােটেই তা নয়। অথচ এখন বাংলা কবিতার নামে যা লিখিত হচ্ছে, তাকে আমরা কোন সংজ্ঞায় চিহ্নিত করবাে?

কেউ বলতে পারেন, যার কোনাে অবয়বই নেই,

তাকে কি আসলে নির্দিষ্ট কোনাে সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা যায়? যদি তা না যায়, তা হলে এমন যে-সব কবিতা লিখিত হচ্ছে, তাকে আমরা কীভাবে বিশ্লেষণ করবাে?

মনে রাখা দরকার, যে-কোনাে নতুন প্রপক্ষ বিনির্মাণের আগে তার পূর্ববর্তী সামাজিক, রাষ্ট্রিক, অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতকে বিবেচনায় রেখেই কবিদের এগােতে হয়। একটি নতুন সাহিত্য-আন্দোলন দানা বাঁধে তখনই, যখন তার সম্পূর্ণ উপাদান সমাজদেহের অভ্যন্তরে একটু একটু করে বেড়ে উঠতে থাকে। পৃথিবীর প্রতিটি সাহিত্য-আন্দোলনের পেছনে এই সামাজিক প্রবাহটি গতিশীল থাকে বলেই কবি, শিল্পী, ঔপন্যাসিক প্রমুখ মানুষ নতুন পরম্পরা সৃষ্টি করে একটি সাহিত্যের আধারের ওপর আর একটি সাহিত্যিক আধারকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।

বিংশ শতাব্দীতে ইউরােপে যে আধুনিক চেতনার উন্মেষ ও বিস্তৃতি ঘটে, তার পেছনেও ছিলাে সেই শতকের প্রাথমিক পর্যায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ঐতিহাসিক ও দার্শনিক পরিপ্রেক্ষিত। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে যে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি হয়, তাতে মানুষের বিবেক ও মানবতা লাঞ্ছিত, অপমানিত এবং বিধ্বস্ত হয়। আর এই ধ্বংসযজ্ঞের নায়ক জার্মানির হিটলার এবং ইতালির মুসােলিনী মানবতার ধ্বংসস্তুপের মধ্য দিয়ে উগ্রজাতীয়তাবাদী আগ্রাসনের যে-ভয়াবহ ঘটনার জন্ম দেয়, তাতে স্তম্ভিত হয়ে যায় বিশ্ববিবেক। মানুষের বিরুদ্ধে মানুষের মারণাস্ত্রের ভয়াবহ প্রতিযােগিতায় তারা শিহরিত হয়ে ওঠেন। আবার বিশ্বযুদ্ধের পাশাপাশি ফরাসি বিপ্লব, মানুষের উৎপত্তি নিয়ে ভারুইনের নৃতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, নরনারীর সম্পর্ক নিয়ে ফ্রয়েডের বৈপ্লবিক তত্ত্ব, কাল মাকর্সের শােষণহীন সমাজের অঙ্গীকারসমৃদ্ধ এক নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন ও শ্রেণিবৈষম্যের দর্শন মানুষের ভেতরকার দীর্ঘস্থায়ী এবং প্রচলিত মূল্যবােধকে ভেঙে চুরমার করে দেয়। সেই সঙ্গে ১৮৫৭ সালে শার্ল বােদলেয়রের ‘ফুর দ্যু মল’ কাব্যগ্রন্থ সমাজের কতােগুলাে মৌলিক লক্ষণকে চিহ্নিত করে আধুনিকতাকে করে তােলে রােমান্টিকতার প্রতিপক্ষ। এই পরিপ্রেক্ষিতে যাদের হাত ধরে আধুনিকতা কবিতার একটি মৌলিক আধার হয়ে ওঠে, সেই জয়েস, মালার্মে, র্যাবো, ইয়েটস, এলিয়ট, পাউন্ড, লরেন্স প্রমুখ কবি আধুনিক কবিতাকে সারা পৃথিবীর সামনে এক অনিবার্য নিয়তির মতাে দাঁড় করিয়ে দেন। এঁদের মেধা, মনন, আত্মমগ্নতা, নানামুখি সফল পরীক্ষা নিরীক্ষায় আধুনিকতা একটি সময়-অতিক্রমী প্রপঞ্চ হিসেবে মানুষের কাছে গ্রহণযােগ্য হয়ে ওঠে।

আধুনিক কবিতা সম্পর্কে এ-কথা বলার অর্থ, ফরাসি সিম্বলিজম, একজিস্টেনশিয়ালিজম, ফিউচারিজম, ইম্প্রেশনিজম কিংবা স্যুররিয়ালিজমের মতাে আন্দোলনগুলাে আসলে উত্তরাধুনিকতার মতাে কোনাে দিকনির্দেশনাহীন আয়ােজন ছিলাে না, এর ভেতরে ছিলাে সময় ও কালকে এগিয়ে নিয়ে যাবার এক দৃঢ় অঙ্গীকার। কিন্তু আমরা আজ যে-কবিতা রচনা করছি, যে-আত্ম-অহমিকার আবর্তে নিজেদের সমর্পিত করে নিজেরাই নিজেদের বাধা দেবার চেষ্টা করছি, তার পেছনে কোন্ সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ঐতিহাসিক কিংবা দার্শনিক আন্দোলনের প্রভাব সঞ্চারিত হয়েছে, যা নতুকালের কবিদের নতুন সৃষ্টির উন্মলনায় বিভাের করে রাখতে সক্ষম, সেটা গভীরভাবে ভেবে দেখা অত্যন্ত জরুরি। কেউ কেউ অবশ্য এই কবিতাকে চিহ্নিত করতে চাইছেন উত্তরাধুনিক কবিতা হিসেবে। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, উত্তরাধুনিকতার কোন্ কোন্ শর্ত পূরণ নেতিবাচক হতে বাধ্য। কোনাে পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া, সামাজিক আন্দোলনের করে এইসব কবিতা রচিত হয়েছে, তা হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এর উত্তর পরিপ্রেক্ষিত ছাড়া যে এ-ধরনের একটি আন্দোলনকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, এ-সময়ের অনেক কবিই সম্ভবত এ-সত্য বিস্মৃত হয়েছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কারাে কারাে কবিতা পড়ে আমার মনে হয়েছে, এ-শুধু কতােগুলাে শব্দের সমাহার—শব্দের পর শব্দ সাজানাে। হয়তাে প্রশ্ন করলে তাদের কবিতার মৌলিক বিষয় সম্পর্কে কোনাে ধারণা দিতেই তারা সক্ষম হবেন না। তা হলে এই কবিতা রচনার উদ্দেশ্য কী? শুধু কতােগুলাে অর্থহীন শব্দের অপটু বিন্যাসে আধুনিকতার দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া? পূর্বেই বলেছি, বাংলা কবিতায় আধুনিকতার আবির্ভাব ঘটেছিলাে পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে এবং তাকে পৃথিবীর কবিতার সমান্তরাল করে তােলার দুঃসাহস নিয়ে। একশ বছরের বেশি আগে উচ্চারিত এবং সাম্প্রতিককালে অনেকটা অবসিত উত্তরাধুনিকতার ধারণাটিকে যারা আধুনিক কবিতার প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রতিস্থাপন। করতে চাইছেন, তারা কারা? বিশ্বকবিতার ইতিহাসে যারা এক একটি মহীরুহ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন, তাদেরকে প্রতিপক্ষ হিসেবে। চিহ্নিত করতে পারেন, সারা পৃথিবীতে কি এমন কোনাে উত্তরাধুনিক কবির আবির্ভাব ঘটেছে, যাকে নিয়ে আমরা উদ্ধত উচ্চারণে আধুনিকতাকে হটিয়ে দিয়ে উত্তরাধুনিকতার বিজয়বার্তা ঘােষণা করতে পারি? সারা পৃথিবীতে উত্তরাধুনিকতার তত্ত্ব নিয়ে নানা ধরনের আলােচনা চলছে বটে, কিন্তু আলােচনা-সমালােচনা, এমনকি তত্ত্বের প্রতিষ্ঠা দিয়েও প্রমাণিত হয় না, সেই ধারাটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তার ভিত্তি দৃঢ়তা লাভ করেছে। বিশেষ করে কবিতায় এর কোনাে কোনাে লক্ষণ ক্ষীণ আকারে দেখা গেলেও, যতােক্ষণ না সৃষ্টিশীল কবিদের হাতে তা একটি পূর্ণ অবয়ব পাচ্ছে, তাকে গ্রহণ করা কারাে পক্ষেই সম্ভব হবে না। আমাদের সঙ্কট আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই পাশ্চাত্যমুখি। একশ বছর আগেই যার লক্ষণগুলাে স্থাপত্যে ও কথাসাহিত্যে একটু একটু করে বিকশিত হতে শুর করেছে বলে কেউ কেউ মনে করেন, বিশেষ করে ১৯৩৯ সালের বিশ্বযুদ্ধের পরে সি রাইট মিল, অসওয়াল্ড স্পেংলার কিংবা মিশেল ফুকো প্রমুখ আধুনিকতাকে সম্পূর্ণরূপে হটিয়ে দিয়ে উত্তরাধুনিকতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন, তা বাস্তবে চূড়ান্তভাবে সম্ভব হয়নি আধুনিকতার প্রতিষ্ঠিত ভিত্তির কারণে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই সি, রাইট মিল বলেছিলেন “আধুনিকতার দিন শেষ, অসীম উত্তরাধুনিকতার সম্মুখে এসে দাঁড়িয়েছি আমরা। আলােকপ্রাপ্তির যুক্তিবােধ, শৃঙ্খলমুক্তির উদারতা এবং যে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বাস আমাদের মধ্যে অবশিষ্ট আছে, তার আর প্রয়ােজন নেই।” অসওয়াল্ড পশ্চিমী সভ্যতা ও মূল্যবােধ, দায়িত্ব আর সংস্কৃতির পচনের কথা উল্লেখ করে শুধু জীবনের বিচ্ছিন্নতা নয়, অনৈক্য এবং নিঃসঙ্গতার কথা বলেছেন। কিন্তু রাইট মিল এবং অসওয়ান্ডের এই বক্তব্যের মধ্যেও যে-বিষয়টি স্পষ্ট, তার সঙ্গে আধুনিক কবিতার জন্মলগ্নে উচ্চারিত বিভিন্ন আন্দোলনকারীর মতবাদ বা ঘােষণার তেমন পার্থক্য তব্র হয়ে ওঠে না। যে-বিচ্ছিন্নতার বােধ হিবা অনৈক্য ও নিঃসঙ্গতা উত্তরাধুনিকতার আন্দোলনকে চিহ্নিত করার জন্য যথেষ্ট, তার সঙ্গে আধুনিক কবিতার আন্দোলনের মৌলিক পার্থক্য কোথায়?

পার্থক্য অবশ্যই আছে। সেটি উত্তরাধুনিকতা প্রতিষ্ঠার মজির উগ্রতা প্রকাশের মধ্যে। এই উগ্রতা যা কিছু পুরনাে তাকেই ভেঙে গুড়িয়ে দিতে চায়। কোনাে তত্ত্ব বা দর্শন যেমন তার নেই, তেমনি অপরিকল্পিত উন্মার্গগামিতার দিকেই তার অভিসার। আধুনিকতার বিদ্রোহের মধ্যেও যেমন একটি সুনির্দিষ্ট শৃঙ্খলা লক্ষ করা যায়, উত্তরাধুনিকতা সেখানে বিশৃঙ্খলাকেই প্রাধান্য দেয়। এই তর সৃষ্টিতে বিশ্বাসী নয়, ভাঙনেই আস্থাবান। যে-কোনাে ধরনের নিয়ম তাদের প্রতিপক্ষ। ব্যক্তির চেয়ে সমষ্টিই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এগুলােকে উত্তরাধুনিকতার সংজ্ঞা হিসেবে ধরে নিই, তা হলে দেখা যাবে, ষাটের দশকে পশ্চিম বাংলার ‘হাংরি জেনারেশন’ বা ‘শ্রুতি আন্দোলন’ কিংবা বাংলাদেশের ‘স্যাড জেনারেশন’ তাদের মেনিফেস্টোতে যে-বিষয়গুলাের প্রতি গুরুত্বারােপ করেছে, সেই আধুনিকতার মধ্যে লক্ষ করা যাবে উত্তরাধুনিকতার চাইতেও ভয়াবহ আত্মঘাতী প্রবণতা এবং যারা এই ধরনের বক্তব্যের উদগাতা, তাদের অনেকেই নিজেদের অনেক কবিতায় সেই বিষয়গুলােকে সাফল্যের সঙ্গে উপস্থাপন করে প্রমাণ করছেন, তারা স্রোহী আধুনিকতার যথার্থ প্রতিনিধি।

কিন্তু আজকে যারা বাংলাদেশে উত্তরাধুনিকতাকে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নিজেদের সক্রিয় বলে দেখাতে চাইছেন, তাদের হাতে সেই মজবুত কবিতা কোথায়, যা দিয়ে তারা প্রমাণ করতে পারবেন, তাদের কবিতায় তারা উত্তরাধুনিকতাকে যথাযথভাবে প্রতিফলিত করতে পেরেছেন?

শুধু বচন-সর্বস্বতা যেখানে আমাদের অভ্যন্ত প্রবণতা, সেখানে পাশ্চাত্যের মুখরােচক ও আওড়ানাের মাধ্যমে নিজেদের জাহির করার প্রবণতা থেকে কেউ কেউ এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু নিজ সৃষ্টিশীলতার কষ্টিপাথরে তাদেরই যাচাই করে দেখিয়ে দিতে হবে, তারা যা বলছেন, তারা যা করছেন, তা কোনো অকারণ আস্ফালন নয়। বাংলাদেশের কবিতায় কি সেটা হচ্ছে? যদি হতাে তা হলে প্রতি সপ্তাহে কবিতার বদলে শুধু কিছু শব্দের অর্বাচনি ব্যবহার দেখে আমাদের চেতনা এমনভাবে অবসিত হতে পারতাে না।

তবে আমি এটা নিশ্চয়ই বলবো, অজস্র আগাছার মধ্যেও এক একটি একাকী ঘাসফুলের মতাে কারো কারো কবিতা শ্রুতিকে যেমন স্বস্তি দেয়, দৃষ্টিকে তেমনি শান্ত করে; এবং কখনাে কখনো তা মস্তিষ্কের কোষে কোষে এমনভাবে আবর্তিত হতে থাকে, যাকে কোনাে নির্দিষ্ট সংজ্ঞায় ফেলে বিবেচনা করা মুশকিল। এ-ক্ষেত্রে অবশ্যই অনেকটাই এগিয়ে আছে আমাদের লিটল ম্যাগাজিনগুলাে। সেখানে আমার চোখে পড়ে এমন সব অপরিচিত নাম, যাদের অনেকের কবিতাই আমাদের প্রতিষ্ঠিত অনেক কবিকে লজ্জা দিতে সক্ষম। এ-ধরনের কবি যারা, তারা আধুনিকতা কিংবা উত্তরাধুনিকতার সঙ্গে প্রতিযােগিতা করে কবিতা রচনা করে না, তারা লিখে যায় কেবল বিশুদ্ধ কবিতা। সেক্ষেত্রে তাদের সাফল্য দেখে মনে হয়, আসলে কবিতার কোনাে বিশেষ সংজ্ঞাই ভালাে কবিতা রচনার ক্ষেত্রে সহযােগিতা কিংবা অসহযােগিতা কোনােটাই করতে পারে না। এ-ক্ষেত্রে একজন কবিকে শুধু মনে রাখতে হয় একটি দিগদর্শন, যেটি হতে পারে সম্পূর্ণরূপে তার একান্ত নিজস্ব।

সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হলাে, প্রতিষ্ঠিত কবিদের অনেকেরই হাত থেকে প্রকাশিত অর্বাচীন কবিতার অত্যাচার আমাদের নিয়মিতই সয়ে যেতে হচ্ছে। কোনাে কোনাে সম্পাদক কিংবা সংকলক তাঁদের নামের কারণে সেই সব কবিতা বড়াে বড়াে শিরােনাম দিয়ে ছাপতে বাধ্য হন। কিন্তু যেগুলাে লেখা হয়, সেগুলাে কি কবিতা? কবিতার নামে কতােগুলাে বিবৃতি প্রচারই এখন এইসব কবির প্রধান অবলম্বন। পৃথিবীর কবিতার ইতিহাস এরা জানেন না, এমন কথা বলি কী করে? কিন্তু জানলেও তা হজম করার শক্তি এদের নেই। এরা ঈশ্বর গুপ্তের ‘স্বভাব কবিত্বের’ অনুসারী। আর একদল কবি আছেন, যারা নাম-ব্যবসায় তৎপর। কবিতার রাজ্যে তাদের আধিপত্য স্বৈরতান্ত্রিক। আর অভ্যস্ত চেতনার পাঠক ও সম্পাদকরা প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে আমাদের কবিতাকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও অনেকাংশেই দুর্বল। ফলে কবিতার জগতে এখন চলছে এক দীর্ঘস্থায়ী নৈরাজ্য।

প্রবীণ-নবীন নির্বিশেষে অনেক কবিই এখন অভ্যাসবশে কবিতা লেখেন। কবিতা এখন আর তাদের চর্চা কিংবা সাধনার বিষয় নয়। কবিতা ছাপানাের জন্য তরুণ কবিদের আকুলতার অর্থ আমি বুঝি, কিন্তু শুনতে পাই প্রবীণ কবিদের অনেকেই নাকি কবিতা ছাপার জন্য এমনকি সম্পাদককে পর্যন্ত বিরক্ত করতে দ্বিধাবােধ করেন না। ফলে বুঝতে অসুবিধা হয় না।আসলে এদের হাতে কবিতা ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে।

একদিকে ক্ষয়প্রাপ্ত কবিদের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে প্রলয়কাণ্ডে অভ্যন্ত তরুণ কবিদের অনেকেরই কবিতা হয়ে উঠছে অকবিতা। এটা বােধহয় জোর দিয়েই বলা যায়, এর একটি প্রধান কারণ, বাংলাদেশে এখন প্রকৃত সম্পাদকের অভাব। অসম্পাদিত কবিতা যে ছাপা হয়, তার কারণ সম্পাদকদের অনেকেই নিজেরাও বােঝেন না, কবিতা আসলে কী? সম্পাদক যদি কবিতা বুঝতে অক্ষম হন, তা হলে যা ছাপা হতে পারে বা এখনাে হয়, তাকে কবিতা না বলে বলা যেতে পারে কবিতার কঙ্কাল। এই কবিতা নিয়ে গবেষণা করা যেতে পারে, কিন্তু তাতে অস্থি, মজ্জা, রক্ত, মাংস দিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার কাজ যার, তিনি তা করতে অক্ষম হলে এবং একই সঙ্গে অবিবেচক সম্পাদকের হাতে পড়লে কবিতার মতাে একটি বিশুদ্ধ শিল্প কোন্ তলানিতে গিয়ে ঠেকতে পারে, আমরা এখন তা প্রতিনিয়ত পত্রিকার পাতা খুললেই দেখতে পাই। আমরা যতােই আধুনিকতা কিংবা উত্তরাধুনিকতার আন্দোলন করি না কেন, মূল কথা হলাে, একজন কবিকে অবশ্যই শিল্পের শর্ত পূরণ করেই কবিতা রচনা করতে হবে। কিন্তু এখন বিশুদ্ধ কবিতার অভাব যেমন তীব্র, তেমনি অশুদ্ধ কবিতার বিস্তৃতি ক্রমশ প্রসারিত। বিশেষভাবে আমি অবাক হই এই ভেবে যে, আমাদের কবিদের বেশিরভাগই কবিতার ছন্দের ব্যাপারে অসচেতন। ছন্দ ও মাত্রায় ভুল, ক্রমাগত অর্ধমিলের ব্যবহার, আঞ্চলিক উচ্চারণের কারণে অচ্ছুত অন্ত্য এবং অন্তঃমিল, কবিতার পর্ববিন্যাসে অক্ষমতা, স্বরবৃত্ত ও মাত্রাবৃত্তের ব্যবহার বুঝতে না পারা, অতিপর্ব এবং মধ্যখণ্ডন সম্পর্কে অজ্ঞতা, এমনকি অক্ষরবৃত্তের মাত্রাবিন্যাসে ক্রটি প্রতিষ্ঠিত কবিদের কবিতায়ও যখন লক্ষ করি, তখন বিস্ময়ের অবধি থাকে না। আধুনিক কবিতার সম্ভবত এটা একটা বড়াে ত্রুটি যে, এটি এমন সব কবির জন্যও ফাঁক-ফোকর তৈরি করে রেখেছে, যেখানে অকবিরাও অনায়াসে ‘কবি’ শিরােপা অর্জনের ক্ষেত্রে সুবিধা আদায় করে নিতে পারে। এটা কি আধুনিক কবিতার দোষ, নাকি ধারণাহীন উত্তরাধুনিক কবিতার স্বেচ্ছাচারিতার সুযােগ? এ-থেকে মুক্তি পেতে গেলে অবশ্যই কবিতাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। কবিতার কাছেই। কোনাে পাশ্চাত্য ‘ইজম’ -এর কাছে পরাভূত না হয়ে যদি প্রকৃতপক্ষেই বাংলা কবিতা বাঙালির শেকড়ের সন্ধানে নিজের ঐতিহ্যকে সারাৎসার হিসেবে গ্রহণ করতে পারে, তবে আধুনিক বাংলা কবিতা একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা পেতে পারে এবং তা পেতে হলে উত্তরাধুনিকতা নয়, আধুনিকতাকেই আরাে বিস্তৃত করে নব্য-আধুনিকতার বিনির্মাণে তৎপর হতে হবে। আর তা হলেই বাংলাদেশের কবিতা বাংলা কবিতার পরিপ্রেক্ষিতেই একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পারবে, এটা অন্তত জোরের সঙ্গেই বলা যায়।

৩ thoughts on “প্রবন্ধ।। বিশুদ্ধ ও অশুদ্ধ কবিতার দ্বৈরথ।। অসীম সাহা

  • মার্চ ১৩, ২০২১ at ৪:৩৬ অপরাহ্ণ
    Permalink

    দারুণ সৃষ্টি কবিবর

    Reply
    • মার্চ ১৩, ২০২১ at ১০:০৯ অপরাহ্ণ
      Permalink

      ধন্যবাদ অগ্রজ সময়োপোযোগী চমৎকার একটি প্রবন্ধ উপহার দেয়ার জন‍্য। কবিতা যে শুধুই কবিতা না এটা গবেষণার বিষয় তা তাঁর লেখায় স্পট। খুব সত‍্যি একটা কথা লিখেছেন বর্তমান অধিকাংশ সম্পাদক নিয়ে। আবারো ধন্যবাদ।

      Reply
  • মার্চ ১৩, ২০২১ at ৬:১৬ অপরাহ্ণ
    Permalink

    ঋদ্ধ হলাম। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তরুণদের অনেকে ভালো লিখছেন। অন্তর-শক্তির জোরে প্রকৃত কবিতা দাঁড়িয়ে যায়। অকবিতা বিলুপ্ত হয়।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *