অণুগল্প “প্রাপ্তি” ফখরুল হাসান

-এই ছাড়ো ছাড়ো, আমি গোছল করে এসেছি তো!

  • না, আমি তোমাকে ছাড়বো না।
  • প্লিজ সোনা। এখন নয়…
    -কেন?
    -সাহেব রাতের কাজ দিনের বেলা করতে নেই। এবার ওঠো, আটটা বেজে গেছে।’ টুম্পার কথা শুনে বাধ্য ছেলের মতো বিছানা থেকে ওঠে বাথরুমে গেল শাওন। এইফাঁকে টুম্পা এস্ট্রে সাজানো শুরু করলো – বেলি আর বকুল ফুল দিয়ে। এস্ট্রের মাঝে রাখলো একটা লাইটার ও বেনসন সিগারেটের এর প্যাকেট। তারপর সেগুলো ফুল দিয়ে ডেকে দিলো। এস্ট্রেটা খাটের উপর রেখে রান্নাঘরে চলে গেল টুম্পা। শাওন বাথরুম থেকে এসে তো অবাক! এস্ট্রের মাঝে থাকার কথা সিগারেটের ছাই; এস্ট্রে তো খাটের উপর থাকার কথা না? তাও আবার ফুলে ফুলে সাজানো এস্ট্রে! কৌতুহল হলো শাওনের। তাই এস্ট্রেটা হাতে নিলো। ফুলের ঘ্রাণের সাথে ভেসে এলো সিগারেটের গন্ধ। এস্ট্রেটা হাতে নিয়ে রীতিমতো অবাক। এও কি সম্ভব? সত্যি টুম্পা, তোমার তুলনা হয় না। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে আমার টুম্পা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক বউ।
    -চলো, নাস্তা রেডি।
    -নাস্তা তুমি বানিয়েছ!
    -কেন? আমার নাস্তা তোমার পছন্দ হবে না?
    -না, ঠিক তা বলিনি, গতকাল মাত্র বিয়ে হলো।
    -তো কি হলো? নতুন বউদের বুঝি রান্না করা নিষেধ আছে?
    -আর হ্যাঁ, এখন থেকে আমাকে দেখে সিগারেট ফেলে দিতে হবে না। আমার সামনে বসে খাবে। আমি মুগ্ধ হয়ে তোমাকে দেখবো।

শাওনের টুম্পার চোখে চোখ রেখে মনে হল,
একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র আকাশ থেকে ছিটকে পড়েছে। আর মুহূর্তেই সমস্ত ঘর ওর আলোয় আলোয় ভরে গেল! ও চোখ মায়াবী। যেন প্রেমের সাগর ওর ভেতর নাচছে। মন ভরে যায়। প্রাণের মধ্যে সবুজ কলাপাতার মতো পত্পত্ শব্দ। শাওনের মনেহয় টুম্পা সত্যি সত্যিই নারী; ও যেন চিরন্তন সর্বংসহা বাঙালি নারী।

One thought on “অণুগল্প “প্রাপ্তি” ফখরুল হাসান

  • মে ৩০, ২০২০ at ৪:৩৬ অপরাহ্ণ
    Permalink

    অসাধারণ অনুগল্প প্রপ্তি।
    পড়ে মুগ্ধ হলাম।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *