কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব চোদ্দ
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব- এক
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব- দুই
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম-পর্ব তিন
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব ছয়
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব সাত
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব আট
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব নয়
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব দশ
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব এগারো
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। শেষ পর্ব
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব বারো
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। তেরো
- কিশোর উপন্যাস।। রহস্যময় লোকটা।। সারওয়ার-উল-ইসলাম।। পর্ব চোদ্দ
১৪.
ঘুম থেকে উঠেছি একটু আগে। শেষ বিকেলের রোদ জানালার গ্রীলে। শীতের বিকেলে ঘুম থেকে উঠলে শরীর কেমন যেন ম্যাজ ম্যাজ লাগে। শোয়া থেকে উঠেও অনেকক্ষণ বিছানায় ঝিম মেরে বসেছিলাম। হাত মুখ ধুয়ে চা-আর পাঁপড় ভাঁজা খাচ্ছি। জানালার পর্দা উড়িয়ে হালকা বাতাস আসছে।
কালরাতের ঘটনা মনে হতেই শরীরের লোমগুলো দাঁড়িয়ে গেল। আমরা কোথায় গিয়েছিলাম জানি না। সকালবেলা জেগে দেখি স্কুলের পেছনে পাকা মতন জায়গায় আমরা চারজন শুয়ে আছি। সূর্যের আলো মুখে গায়ে লাগতেই ধড়মড় করে জেগে গেছি।
আমরা কাল একটা লাল রঙা টয়োটায় করে একজন অপরিচিত লোকের সঙ্গে লং ড্রাইভে গিয়েছিলাম, সেটা সত্যি। সেই লোকটা আমাদের অনেক জ্ঞানের কথা বলেছে তাও সত্যি। লোকটা তার দুঃখের কথা বলেছে তাও মিথ্যে নয়। শুধু আমরা এই স্কুলের পেছনে কিভাবে এলাম কিছুতেই মনে করতে পারছি না।
সকালবেলা আমরা যার যার বাসায় চলে এসেছি। এখনো চোখ থেকে ঘুম পুরোপুরি যায়নি। নীনাপা বলে গেল তৌফিক আজ বাসায় ফিরেছে। কথাটা শোনামাত্র কাল রাতের ওই লোকটার কথা মনে হল– লোকটা বলেছিল আজ তৌফিক বাসায় ফিরবে। তার কথাই সত্যি হল।
লোকটা একবারও তার চেহারা আমাদের দেখায়নি। খুব সচেতনভাবে নিজের মুখটা আড়াল করে রেখেছিল সারাক্ষণ। লোকটার সঙ্গে আমাদের শেষ কথা কি হয়েছিল ঠিক মনে করতে পারছি না। কিন্তু আমাদের স্কুলের পেছনে কে রেখে গেল, লোকটাই কি?
লোকটা আমাদের এই আড্ডার খবর জানলো কি করে! আমরা এখানে বসে গল্প করি সেটা কি তা হলে সে জানতো। লোকটা বলেছে সে আমাদের পাড়ায় এতদিন ছিল–আজ থেকে আর এ পাড়ায় থাকবে না। লোকটা কি তা হলে জানতো আমাদের চারজনের কোডনেম ‘অলিখোপ’। বটগাছের ওখানে দুদিন রাতে ‘অলিখোপা’ বলে কে ডেকেছিল? এত সব যখন ভাবছি তখন বাসার সামনে পল্টুর কণ্ঠ শুনতে পেলাম। ঘর থেকে বেরিয়ে গেটের সামনে যেতেই দেখি খোকা আর অপুও আছে ।
কিরে ঘুমিয়েছিলি? অপু বলল।
হ্যাঁ, কিছুক্ষণ আগে উঠলাম।
চল ফুচকা খাই কালুর দোকানে।
এরকম একটা অফার ফিরিয়ে দেওয়া যায় না। তাই ওদের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে কালুর দোকানের দিকে যাই।
অপু তোর মনে আছে কিছু, কখন কিভাবে আমরা স্কুলের পেছনে এলাম? বললাম ।
নারে– কিছুই মনে পড়ে না। লোকটা কি আমাদের অজ্ঞান করেছিল কিছু খাইয়ে ? আমরা তো চিকেন বার্গার খেয়েছিলাম শুধু। আর তো কিছুই খাইনি। সেওতো আমাদের সঙ্গে বার্গার খেয়েছিল। অজ্ঞান হলে তো সেও হতো।
তৌফিক ফিরেছে জানিস? বললাম।
হ্যাঁ।
লোকটার কথাই সঠিক হল।
পল্টু হঠাৎ বলল, আচ্ছা আমরা বার্গার খাবার পর পানি খেয়েছিলাম তাই না?
হ্যাঁ।
ওই পানিতে কি ঘুমের ওষুধ-টযুধ মেশানো ছিল?
অপু চুপ হয়ে গেল।
আমার মনে হয় পানির কারণেই ঘুম এসেছিল। আর লোকটা আমাদেরকে তখনই এখানে রেখে চলে গিয়েছিল।
হতে পারে- আচ্ছা সে কি পানি খেয়েছিল মনে করে দেখতো? অপু বলল।
না খায়নি– খোকা বলল।
আমারও যদ্দুর মনে পড়ে সে পানি খায়নি। বললাম।
তাহলে ঠিকই আছে ওই পানিতেই ঘুমের ওষুধ মেশানো ছিল। অপু বলল।
লোকটা তা হলে কে? কেনই বা সে আমাদেরকে মুখ দেখাল না? বললাম ।
অপু বলল, আমি একজনকে সন্দেহ করছি– অবশ্য নাও হতে পারে। তবে কিছুদিন যাক তবে নিশ্চিত হতে পারব। এর ভেতর আমরা যেভাবেই হোক ইনজাম আর তৌফিকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করব।
ওরা কি কথা বলবে? পল্টু বলল।
বলবে না জানি। না বললেই বুঝতে পারব ওই লোকটা যা বলেছে তার পুরোটাই সত্যি।