লেখালেখির পাশাপাশি দুলাল সামাজিক-রাজনৈতিক-ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন

মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধু
আমাদের অহংকার। সেই গৌরবোজ্জ্বল অহংকারের পতাকা সাহসের সাথে বহন করছেন কবি সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল। কারণ তিনি বাংলাদেশেকে তাঁর বুকের ভেতর নিবিড় ভাবে লালল করেন। গতকাল রাজধানীর শাহবাগস্থ পাঠক সমাবেশে এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
তারা আরো বলেন, দুলাল কবিতা লেখার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দুর্দিন-দুঃসময় থেকে গবেষণা করছেন। এখনো প্রবাসে থেকে বঙ্গবন্ধু খুনি নূর চৌধুরীকে একক ভাবে লড়াই করছেন, অনুসন্ধানী গ্রন্থ লিখছেন, কাজ করছেন কানাডায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে। সেই সাথে কবিতায় প্রতি নিয়ত পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে যাচ্ছেন।

সদ্য সমাপ্ত বইমেলায় তাঁর পাঁচটি নতুন বই ‘পাখিদের অবিবাহিত জীবন, কানাডায় মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ, মেইড ইন চায়না, মুক্তিযুদ্ধ-বঙ্গবন্ধুঃ কিশোরসমগ্র, তালগাছ দু’পায় দাঁড়িয়ে’ নিয়ে ‘সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলালের সাথে এক বিকেলের আড্ডা’ শীর্ষক এক মিলন মেলায় লেখক-প্রকাশক-পাঠকদেরএক মনোজ্ঞ আসর জমে উঠে।

উক্ত জমজমাট অনুষ্ঠানে শিহাব শাহরিয়ারের উপস্থাপনায় আলোচনা করেন কবি কামাল চৌধুরী, ফারুক মঈনউদ্দীন, আসাদ মান্নান, তুষার দাশ, জরিনা আখতার, সিরাজুল ইসলাম মুনির, তপন বাগচী, সাবিনা ইয়াসমিন, মুম রহমান, শিমুল সালাউদ্দিন, বাবলু রহামান, অনুভব আহমেদ, মুজতবা আহমেদ মুরশেদ, আফজাল হোসেন, পারভেজ হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কবির কবিতা আবৃত্তি করেন পাপিয়া খান, ফারজানা মীম, অমিত হাসান, উম্মে হাবীবা এবং খালি গলায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন গীতিকবি শহিলুল্লাহ ফরাজী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অংশ নেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, খান মাহবুব, মোস্তাফা সেলিম।

কবি কামাল চৌধুরী বলেন, দুলালের কবিতার পরিবর্তনটা আমি লক্ষ করেছি- তাঁর তিন মিনিটের কবিতা কাব্যগ্রন্থ থেকে। মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তাঁর কর্মও উল্লেখ করার মতো।দুলালকে আমার শুভেচ্ছা, অভিনন্দন।

কবি আসাদ মান্নান কবিরা কবিতা এবং সাহিত্যকর্ম নিয়ে বলেন, অভিবাসী হবার পর দুলালের কবিতার ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তিনি প্রতি নিয়ত নিজেকে ভাংছেন, পরীক্ষা-নীরিক্ষা করছেন। তাঁকে আমাদের আরো কাছে দরকার। দুলাল দ্রুত দেশে ফিরে আসবেন এটা প্রত্যাশা করি।

কবি জরিনা আখতার বলেন, দুলাল আমার দীর্ঘ দিনের প্রতিবেশী। তাঁকে কাছ থেকে দেখেছি, দূর থেকে দেখেছি। তিনি শুধু ভালো এবং পরিশ্রমী লেখকই নন; একজন ভালো মানুষও।

কথাশিল্পী ফারুক মঈনউদ্দীন বলেন, দুলাল দূর দেশে থাকলেও আমাদের সাথেই থাকেন সব সময় আছেন। তবে আমি কবি নই। কবিতার পাঠক হিসেব তার কবিতা পড়ে নতুন্ত্ব খুঁজে পাই। দুলালের কানাডায় যাবেন কেনো যাবেন, স্মৃতিগদ্য, কানাডায় খুনি নূর চৌধুরী, কানাডায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গ্রন্থগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ।

সাবিনা ইয়াসমিন মালা বলেন, অনুজ লেখকদের দুলাল ভাইয়ের দরদ, ভালোবাসা, স্নেহ অতুলনীয়। আমি দীর্ঘকাল থেকে তা পেয়েছি এবং লক্ষ করেছি। দূর দেশে গিয়ে তিনি আরো বেশি করে আমাদের অনুভব করেন, দেশকে নিবিড় করে জড়িয়ে রাখেন তাঁর কবিতায়, সাহিত্যকর্মে।

কবি সিরাজুল ইসলাম মুনির বলেন, দুলাল অত্যন্ত সাহসী মানুষ। তিনি লেখালেখির পাশাপাশি অনেক সামাজিক-রাজনৈতিক কাজ করেন, সাংবাদিকতা করেন। জীবনের হুমকি তুচ্ছ করে টরন্টোতে খুনি নূর চৌধুরীর বাসায় জুতো ঝুলিয়ে দিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে ফেইসবুক লাইভ করেন আবার অর্ধ শতাব্দী আগের কানাডায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন, করছেন এবং করবেন, তা দৃঢ় ভাবে বলা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *