জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯- এ মায়া দ্য লস্ট মাদার এর জয়জয়কার

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গতকাল সকালে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্ববৃহৎ স্বীকৃতি, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯’ প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। মোট ২৬টি ক্যাটাগরিতে ৩৩ জন শিল্পী এবং কলাকুশলীকে ২০১৯ সালের জন্য পুরস্কৃত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ পুরস্কার বিজয়ীদের মাঝে পদক, রেপ্লিকা, সম্মাননা চেক এবং সনদ বিতরণ করেন। শ্রেষ্ঠ অভিনেতা তারিক আনাম খান (আবার বসন্ত) এবং অভিনেত্রী হিসেবে প্রসুনেরাহ বিনতে কামাল (ন ডরাই) পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া, শ্রেষ্ঠ খল চরিত্রের জন্য জাহিদ হাসান (সাপলুডু) এবং শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে তানিম রহমান অংশু (ন ডরাই) পুরস্কার লাভ করেন এবং যৌথভাবে ‘ন ডরাই’ এবং ‘ফাগুন হাওয়ায়’ যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র মনোনীত হয়। মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা এবং কোহিনুর আক্তার সুচন্দা আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন।তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তথ্য সচিব খাজা মিয়া স্বাগত বক্তৃতা করেন। পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে আজীবন সম্মাননা বিজয়ী মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, চলচ্চিত্র শিল্পে সংশ্লিষ্ট অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ কলাকুশলীবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসসহ গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ প্রজ্ঞাপন জারি হয়-শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: নারী জীবন, শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: যা ছিল অন্ধকারে, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক: তানিম রহমান অংশু (ন ডরাই), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে: এম ফজলুর রহমান বাবু (ফাগুন হাওয়ায়), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে: নারগিস আক্তার (হোসনে আরা) (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী (যুগ্ম) নাইমুর রহমান আপন (কালো মেঘের ভেলা) ও আফরিন আক্তার (যদি একদিন), শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ইমন (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক: হাবিবুর রহমান (মনের মতো মানুষ পাইলাম না), শ্রেষ্ঠ গায়ক: মৃনাল কান্তি দাস (তুমি চাইয়া দেখো) (শাটল ট্রেন), শ্রেষ্ঠ গায়িকা (যুগ্ম): মমতাজ বেগম (বাড়ির ওই পূর্বধারে) (মায়া দ্য লস্ট মাদার) ও ফাতিমা-তুয-যাহরা ঐশী (মায়া, মায়া রে) (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।এছাড়াও, আরো যারা পুরস্কার পেয়েছেন তারা হচ্ছেন- শ্রেষ্ঠ গীতিকার (যুগ্ম): নির্মলেন্দু গুণ (ইস্টিশনে জন্ম আমার) (কালো মেঘের ভেলা) ও ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (কবি কামাল চৌধুরী) (চল হে বন্ধু চল) (মায়া দ্য লস্ট মাদার)। শ্রেষ্ঠ সুরকার (যুগ্ম): প্লাবন কোরেশী (আব্দুল কাদির) (বাড়ির ওই পূর্বধারে) ও সৈয়দ মো. তানভীর তারেক (আমার মায়ের আঁচল) (মায়া দ্য লস্ট মাদার)। শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: মাসুদ পথিক (মাসুদ রানা) (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মাহবুব উর রহমান (ন ডরাই), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: জাকির হোসেন রাজু (মনের মতো মানুষ পাইলাম না) এবং শ্রেষ্ঠ সম্পাদক : জুনায়েদ আহমদ হালিম (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক (যুগ্ম) এর পুরষ্কার পেয়েছেন মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বাসু ও মো. ফরিদ আহমেদ (মনের মতো মানুষ পাইলাম না), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: সুমন কুমার সরকার (ন ডরাই), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (ন ডরাই), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা: খোন্দকার সাজিয়া আফরিন (ফাগুন হাওয়ায়) এবং শ্রেষ্ঠ মেকআপ ম্যান: মো. রাজু (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্প বাণিজ্য ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক আইন পরিষদে ‘পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বিল ১৯৫৭’ উত্থাপন করেন এবং বিলটি ঐ বছরের ৩ এপ্রিল তারিখে পাস হয়। এ বিল পাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের ভিত্তি হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা গঠিত হয় এবং স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা’ বা বিএফডিসি’র কার্যক্রম শুরু হয়।বর্তমান সরকার ৩ এপ্রিলকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস ঘোষণা করেছে।১৯৭৬ সালের ৪ এপ্রিল প্রথম চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া হয়। ২০০৯ সালে প্রথম চালু করা হয় আজীবন সম্মাননা পুরস্কার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *