কবিতা

জয়িতা চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতা

মায়াতে জড়ানো

স্বপ্নে পেতে রাখা রূপোলি শীতলপাটি

নূপুরের শব্দ আনে জ্বর
মায়া আঙুলে গাঁথা বর্ণমালার সুখে
আঁচলে ঢাকা প্রদীপ পুড়ছে অনর্গল
রাত থেকে ভোর হয় যায়
তিতিক্ষায় সাজানো নৈবেদ্যর পাশে
মাথার কাছ আঁধার করে দাঁড়ায় স্পর্শের জ্বর
গুছিয়ে তোলে জোনাকিদের মৃদু অনুপ্রাসে।

লুপ্ত নগরী

নিবিড় হয়ে আসা খোলা হাওয়ায়
তলিয়ে যাচ্ছে তোমার কাছে ফেরার পথ
প্রত্যন্ত সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে দুজন মুখোমুখি
স্হির বৃক্ষের চোখে বিকেল গড়ানো সন্ধ্যা মর্মর
লুপ্ত নগরী অবুঝ লালন পথে
খুঁটে তোলে, দুঃখ জলের মতন পাশাপাশি হাঁটা
শব্দের পুকুরে মুছে যায় রোদের মুখ
পাতালিক সৌন্দর্য নীল নগরের গায়ে ফুটিয়ে রাখে চোরকাঁটা।

এখানেই মায়াপথ, এখানেই সংসার

আকাশ থেকে ছেঁকে নিই তোমার সমীহ কণ্ঠস্বর
একই বিছানায়, তবু আড়াই লক্ষ মাইল দূরত্ব
‘তুমি’ শব্দ মাঝরাতে বিছানায় লাফিয়ে ওঠে
অনির্বচনীয় সন্ধ্যা, রোদ্দুর মিলিয়ে যায়
তোমার শরীরময় আবছা নীল আলো
নক্ষত্রভরা দুটো হাতের চেটো
ঘুমন্ত মুখের ওপর গড়িয়ে পড়ছে মায়াজল
মায়াপথে আঁকা দেবদারু দুটো চোখ
আমার ভীষণ ভালোবাসতে ইচ্ছে হয়,
অভিমানী পালক খসে পড়ে শীতের চরাচরে
আমরা ঘুম রচনা করি, মাঝে টেনে দিই
শুভরাত্রির অনন্ত বিস্তৃত নিরক্ষরেখা ‌।

চোখের আড়ালে

পড়ন্ত বিকেল ফেটে পড়ে নগরে বন্দরে
পলকামুখ জড়িয়ে রাখে অনামিকার ঈর্ষা
রহস্য ফুরিয়ে আসার আগেই স্বীকারোক্তি
খোঁজে আলোলিকা পথ
খোঁজে ভাঙা সম্পর্কের ছায়ায় থাকা কিসসা
সম্পর্কের ধুলো গোধূলিতে ভর করে
নিয়ে আসে নিঃস্ব ঘুমের ভুল
শান্ত দীর্ঘশ্বাস, বোষ্টুমি করতলে রাখে
রাখে ক্লান্ত তারার পাশে শব্দহীন কথার মুকুল
জমা কথাদের বালিয়াড়ি হয় মায়াদরজার ওপারে
নির্লিপ্ত জিজ্ঞাসা উঠোনে পোহায় রোদ
জন্ম মুহূর্তের আড়াল পথ, রেখে যায় কেউ পাহাড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *