ফাহমিদা খান ঊর্মি’র কবিতা
– যদি বলে দিতাম ভালোবাসি
শেষ দেখার দিন যদি বলে দিতাম ‘ভালোবাসি’
তবে নখাগ্রে জমে থাকা প্রেম হয়তো বেঁচে যেতো।
গুম্ফার গান, পাহাড়ি পুরুষ বা হৃদয়ে টানানো দেবীচিত্র,
ডুয়ার্সের চা বাগান ভেদ করে উঁকি দেয়া সূর্য আমার হতো।
বা চোখ বন্ধ করলেই শুনতে পেতাম-
পদ্মার বুকে ছেড়ে যাওয়া স্টিমারের শব্দ।
যদি বলে দিতাম ভালোবাসি,
আমার ক্লান্তিমাখা চোখে ছোঁয়া হতো তোমার চোখ
অথবা বোতলে রাখা মানিপ্ল্যান্ট,
অমোঘ কুয়াশা বা ধূসর প্রহেলিকা আমার হতো।
যদি বলে দিতাম ভালোবাসি অতল নিষেধে ডুবতে ডুবতে
এলাচের দানার মতো সুগন্ধিমাখা ঠোঁট,
জুঁইফুলের মালা বা শত চুমু হয়তো আমার হতো।
-প্রেমিকার বুকে শ্বাস নিতে জানতে হয়
বুঝলে সুবর্ণ,
প্রেমিকার বুকে শ্বাস নিতে শিখতে হয়
জঙ্গলের ভেতর থাকা পাহাড়ের চূঁড়া বেয়ে উঠতে হয়।
কাঁধে আদর মেখে ডুবে যেতে হয় অতলে।
নোনতা স্বাদ, মেটে গন্ধ- সব আপন করে নিতে হয়
পুকুর ঘাটে ঝরে পড়া ছাতিমের ফুল
অতল প্রেমে বিছিয়ে দিতে হয় শান্ত প্রেমিকের মতো।
পিঠের উপর পড়ে থাকা বিনুনি ছুঁয়ে
ঠোঁটের প্রতিটা রেখার ভাষা পড়তে জানতে হয়।
-ম্রিয়মাণ
তীব্র শীতের রাতে লেপের ওম ছেড়ে
উঠি ধরফরিয়ে ঘরের ম্রিয়মাণ আলো
আমার চিন্তায় জমায় স্মৃতি!
সাদা ভাঁটফুল- নাকি, শীতকাটা ফোটে আমার দেহে?
অথচ এই রাত কাটানোর কথা ছিলো অন্তহীন মোহে।
আমি মাটিচাপা দেই নান্দীপাঠের শৃঙ্গার
যেমন অসমাপ্ত কবিতা ছুঁড়ে ফেলি হিরন্ময় শিশিরে,
এদিকে হিমশীতল খামখেয়ালিতে খালি পায়ে
চৌকাঠ পেরুই আমি একা।
যেমন মাঘের রাতে
দূর অশ্বত্থের ডালে ঘুমোয় নিঃসঙ্গ পেঁচা!!