ঈদের কবিতা।। সৈয়দ রনো

রক্তের দাগ

বেদনার ভয়ার্ত উচ্ছাসে মাতাল সময় চোখ দু’টো পকেটে নিয়ে ঘুরি
দেখেও দেখি না চারপাশ শুনেও শুনি না কিছু
কান দুটো বন্ধক নিয়েছে সরকারী গুদাম
হাত দুটো নিস্তেজ করে রেখেছে উচ্চপদস্থ কিছু আমলা
নিরুপায় অসহায় আমি বিদ্যুতের তারে ঝুলন্ত বাদর মানুষ
বুদ্ধি আর বিবেকের বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিলামে কিনেছে সরকার
আমার বলতে আছে শুধু রক্ত মাংসের এই ছাপোষা শরীর
বলে রাখা ভালো এই শরীর কখনই আমার ছিলো না
বদল দিয়েছে সেদিন নির্বাত নিথর দেহে বিগলিত
উত্তেজনা আমায় কুড়ে কুড়ে খায় বোমারু শকুন আর
এন কাউন্টারের জলন্ত বারুদ আমি কখনো কখনো ভেসে বেড়াই
ফাগুনের রঙলাগা ঢুলু ঢুলু বাতাসে পান করি সরাবান তাহুরা
বাতাসে ভাসতে ভাসতে সপ্ত আকাশ ছুয়ে ঘুরে দাড়াই
ঠিক তখন দেখি মনোবলের চিড়ধরা কার্নিশে
কাল নাগিনীর বিষধর ছোবল যেখানে
ক্ষইয়ে পড়া নি:শ্বাসে জমাট বাঁধে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ।

ভাবের পদাবলী

কথার পৃষ্ঠে লাগিয়ে
কথা হরহামেশাই
ফেরেববাজি চলছে
স্বজনহারা কান্না বুকে
অন্ধকারে দাঁপিয়ে বেড়াই
কানা লুলা ইতরটা তাই বলছে
চতুর্দিকে তালি-বালি
ভাল্লাগে না ভালো কিছু
আমজনতা কষ্ট চেপে বলছে
সত্যবাদী গুমরে কাঁদে
উপরওয়ালার খবরদারি
সুযোগ বুঝে কান দুটো রোজ মলছে
সাহস নিয়ে বলবো কি আর
যখন দেখি সবই মেকি কিংবা ফাঁকি
পথের মাঝে পথ হারিয়ে
একলা পথে হাঁটতে গিয়ে
ভাঙ্গা বুকে খাচ্ছি ঝাঁকি
এসব দেখে কেশব বলে
ভাল্লাগে না এখন কিছু
মাথার মগজ হাতের মুঠোয়
কেমনে কোথায় রাখি
কোন মন্ত্রে কেমনে বুঝাই
বুঝেও যারা বুঝ মানে না
মিথ্যেবাদীর সাহস দেখে
অবাক হয়ে থাকি।

বুড়ি মা

বুড়ি মা মাথা হেলিয়ে কী যেনো ভাবছেন
ফ্যাকাশে মলিন সেই চির চেনা মুখ
বিড়বিড় করে মিলিয়ে নিলেন অজুত নিজুত
খানিকটা মাথা দুলিয়ে বললেন-
বুঝেছো বাপু, জটিল নিয়ম মেনেইতো
জীবনের জ্যামিতিক হিসেব নিকেশ
চার রঙ মিলেমিশে একাকার হলে
শুরু হয় পৃথিবীর তাবত রঙের খেলা
লেনাদেনা ভাংচুর এরপর কঠিন প্রণয়
বয়সের ভারে বুড়ি মা’র কপালের ভাঁজে
ফুটে উঠেছে সারল্য রেখা
সাগর কূলে আছড়ে পরা ঢেউয়ের
শুভ্র ফেনায় মাখামাখি চুলে হাত বুলিয়ে
বাঁকা চোখের চাহনীতে কী যেনো
বোঝাতে চাইলেন কিছুই বোঝা হয়নি সেদিন
প্রত্যুষেই ঘুম ভাংতে শোনা গেল
বুড়ি মা’র দরাজ কণ্ঠ
সময় হলেই সবাইকে মিলিয়ে নিতে হয়
জীবনের বেহিসেবের খেরুখাতা
সেদিন ভাবিনি মোটেও এখন বুড়ি মা আর নেই
স্মৃতির পটে মিশে আছে বুড়ি মা’র শান দেয়া কণ্ঠ
মানবিক আদর সোহাগ
বইলাওলা কাঠের খড়ম দিয়ে হাঁটা
নবান্নের ঘ্রাণমাখা বিস্তর উঠোন
বুড়ি মা প্রযুক্তির ধবধবে পায়ে
পরিয়েছিলো লাল আলতা
চেতনার ক্যানভাসে এঁকেছিলো
মানবতার নাকফুঁল
এখনো আধুনিকতার স্রোতে গা ভাসিয়ে ভাবি,
বুড়ি মা’র কথা
শয়নে স্বপনে দেখি চাঁদের বুকে লুকোচুরি খেলা
ছায়াঘেরা মায়াময় স্বপ্নীল নীল জোঁছনার
ক্যানভাসে আঁকি বুড়ি মা’র মুখচ্ছবি।

২ thoughts on “ঈদের কবিতা।। সৈয়দ রনো

  • এপ্রিল ১০, ২০২৩ at ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ
    Permalink

    Onek vslo sir

    Reply
  • এপ্রিল ১০, ২০২৩ at ১১:২২ পূর্বাহ্ণ
    Permalink

    ঈদ মোবারক বাংলা কবিতা।
    কবি : – পারভেজ মোশাররফ

    আকাশে বাতাসে ছুঁয়ে যাক মোদের খুশীর মোড়ক ,
    সবাইকে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা ” ঈদ মোবারক ” ।

    বিদেশে যারা আছি মোরা, আসেনা তো ঈদের খুশী ,
    তবু অভিনয়ে শুভেচ্ছা বিলিয়ে দেই অনুরাগে ভাসি ।

    প্রাণের হিল্লোল হৃদয়ের কল্লোল নিস্তেজ হয়ে ছুটে ,
    পশ্চিম আকাশে ঈদ নামে যবে বেদনার চাঁদ ওঠে ।

    প্রাণের বন্ধনে চাপিয়া ক্রন্দন বিলিয়ে দেই আয়েশ ,
    নয়ন নীরে একাকী মোরা রান্না করি সেমাই পায়েস ।

    দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে সুখ খুঁজি তবু পবনেতে ,
    জীবনের গ্লানি দূর করিতে টেনে যাই ঘানী ভুবনেতে ।

    আয়ু’টার দৈর্ঘ্য কেউ জানিনা তবু চলি অসীমে টানি ,
    বিসর্জন দিয়ে সুখ শান্তি বাঁচিয়া রাখি জীবন খানি ।

    রক্তের টানে প্রিয়জন ছলে তবু থাকি হাসি মুখে ,
    যত হেসে যাই স্বস্তি নাহি পাই সুখ আসে না বুকে ।

    তবু প্রিয়জনের মুখে হাসি ফুটাতে করে যাই অভিনয় ,
    খুশীর ঈদ যেন উভয়ের মাঝে সমান ভাগাভাগি হয় ।

    তোমাদের খুশী তো আমার খুশী খুশীতেই মাখামাখি ,
    দেখেনা তারা আড়ালে থাকে নীরে ভিজে দু’টি আঁখি ।

    সেমাই পায়েস শিরনি পোলাও লাগে যেন তোবারক ,
    সবার মুখে হাসি ফুটাতে বলে যাই শুধু ঈদ মোবারক ।

    সবাইকে আবারো ঈদের শুভেচ্ছা।

    Reply

Leave a Reply to Md parves mosarof Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *