সুলেখা আক্তার শান্তা’র কবিতা
বৃষ্টি
বৃষ্টি দেখে প্লাবিত
মন আমার মেতে ওঠে।
হঠাৎ দেখি আকাশে
কালো মেঘ ভারী হয়ে
ছেয়ে গেছে চারিদিক।
মেঘের গর্জন গগন থেকে
বৃষ্টির ভালোবাসায়
রঙ ছড়িয়েছে দিগন্তে।
রংধনুর সাত রং লেগেছে মনে।
আকাশ থেকে অবিরল ধারায়
রিমঝিম পড়ছে বৃষ্টি।
উদ্বেলিত মন আমার
বৃষ্টি দেখবো বলে
চায়ের পেয়ালা নিয়ে বসি বারান্দাতে।
গাছের পাতা এলোমেলো দুলছে বাতাসে।
প্লাবিত মন আমার বৃষ্টির উদারতায়
ভাসিয়ে নিয়ে যায় অনন্তে।
কচু পাতার ছাউনিতে
বৃষ্টিতে উদ্বেলিত বাতাসে
উড়ছে আমার শাড়ির আঁচল।
ভাসমান মন আমার
প্রসারিত হাত দুটি মেলে
চেয়ে থাকি আকাশ পানে।
বৃষ্টি দেখে মন আমার প্রভাসিত আনন্দে।
স্থগন
ব্যথার সাগরে ডুবে আমি।
চোখের অশ্রু আড়ালে মুছি।
তাই বলে, কোন বাথায় হরে যাইনি।
জয়ী হয়েছি সব পরাজয়কে হারিয়ে।
মাথা নত করিনি কোন কাজে।
জীবনে চলার পথে ঘাত—প্রতিঘাত তো আসবেই।
তাই বলে কি ঠুনকো আঘাতে হেরে যাব।
তা তো হতে দেইনি কখনো আমি।
জয় আসবে দুরন্ত গতিতে
শঙ্কুলতা ঝড়ঝঞ্জা সব বাধা—বিঘ্ন ভেঙ্গে চলি যদি।
অপেক্ষা
বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে।
চুল দিলাম ছেড়ে আমি।
ভেবেছিলাম ফুল নিয়ে আসবে তুমি
চুলে দিবো ফুল আমি।
অপেক্ষা প্রহরে ও প্রহরে।
দিন যে আমার যায় চলে।
সবাই বলে শাড়িতে তোমায় লাগছে ভারি।
আমি বলি মনের মানুষ সোনার তরী।
আসবে নাকি এখনি।
হঠাৎ এক দমকা বাতাসে।
কানের কাছে এক পাখি এসে।
খিল খিলিয়ে হেসে বলে।
নতুন বার্তা নিয়ে আসবে সে।
ফুল বলে, ভালোবাসবে সে।
ভালোবাসার ফুল নিয়ে আসবে।
দূর অজানা দূর দেশে থেকে,
পাড়ি দিয়ে আসবে সে।
এই শহর
ঝুট ঝামেলার জীবন ছেড়ে
উড়াল দিলাম আকাশে।
দায় দায়িত্ব নিব না কারো
তাই চললাম শূন্য পথে।
ফিরব না আর যানজটের
রুদ্ধশ্বাসের এই শহরে।
তাই বলে কোন কাজ থেমে যাবে
হুড়াহুড়ি এই শহরে।
অবিরাম ভোগান্তি চলতেই
থাকবে এর দুর্গতি।
থাকবে না আর যতই করো যানজটের
বিকল্প সব পদ্ধতি।
চলতেই থাকবে চলতেই থাকবে
যানজটের গতি বৃদ্ধি।
নিরাশ হয়ে যতই বলি থাকবো না
আর এই শহরে।
বাড়ছে মানুষ বাড়ছে গাড়ি
সব কিছুতেই বাড়াবাড়ি।
মানুষ চলার রাস্তা নাই
চলবে কোথায় গাড়ি।
মানুষ বলে এই শহরে আছে
রুজি রোজগারের সব গতি।
তাই গেলাম থেকে
ভোগান্তির এই শহরে।
যেখানে যেই ঘুরে আসি
এই শহরে বারে বারে।
যানজটের এই শহরকে
ভালোবাসি আমরা যে।