খান মুহাম্মদ রুমেল-এর কবিতা

শীত আসছে

ভোর সকালে ঘুমভেঙে জড়িয়ে ধরে কার্তিক
হেমন্তের নীরব প্রস্থানে আসছে লাজুক শীত
পাতারা ভাঙছে আড়মোড়া অনায়াস আনমনে
শীতল ঘুমে যাবে সব নিয়ম মাফিক সৈন্য যেন!
তুমি কি থাকবে অপেক্ষায়-
আসবে কেউ জড়িয়ে নিতে ওম চাদরে।


আমার গাঁও


প্রতি শীতে জালালি কইতরে রোদ পোহায়
আমার ফেলে আসা সবুজ গাঁয়।
কেনু মিয়ার দোকানে ভাঁজা হয় পুরি গরম
রাতভর শিশিরে ভেজা পথগুলা হয় নরম!
ছুইট্টা যায় দুষ্টু শিশু মক্তবের দিকে চঞ্চল
ওম সকালে ঘুমায় কাঁথা মুড়ি দিয়া তাবত অঞ্চল।
ভোরের নিসঙ্গতা ভাঙে ভাত শালিকের দল
এমন সুন্দর মায়াভরা গাঁও কোথায় আছে বল!
মাঠে মাঠে দোলে সোনালি ফসলের হাসি
গাঁওখানি মোর শ্যামলে ঢাকা তারে ভালোবাসি।

ফেরার গান

শীত জর্জর কোনো একদিনে-
ফিরবো শ্যামল গাঁয়ে
স্নিগ্ধ আলোয় যেখানে অপেক্ষায়- মা।
মাখন নরম রোদে যেখানে খেলে- শিশির!
হিম জড়ানো বাতাস ডাকে কানে- আয় আয়।
ফিরতেই হবে সেই অমল সুন্দরে-
নাড়িপোঁতা মাটিতে সোঁদা গন্ধে।
নিস্তারহীন যাত্রার শেষ ঠিকানার নাম-
দত্তেরগাঁও!
চোখ জুড়ানো অপরূপ মায়ানগর ছেড়ে
হাজার গলির ধুলো মেখে মেখে
অবশেষে ফিরবোই একদিন- সেই আঙ্গিনায়!
যেখানে রোদের আল্পনায় শৈশব স্মৃতিরা ঘুমায়!

শীত জোছনা

– তুমি কি যাচ্ছো! শীলা?
– না! ফিরছি নতুন করে!
– তাহলে আমার ব্যথা কেন এতো?
– নতুন ফেরায় একটু যাতনা থাকে।
– শীত এসেই গেলো! তাই না?
– তবুও আমি আসিনি! এই তো?
– না, ঠিক তা না!
– দ্বিধা কিসের? বলো মন খুলে!
– শীত এলে তোমাকে খুব মিস করি!
– হেমন্তে করো না? বর্ষায়, শরতে?
– বারো মাসই করি, প্রতি পল!
– ওহ! তবে শুধু শীত বললে কেন?
– শীতে যে আমি ওমহীন নির্জীব!
– কিনে নাও একটা নকশীকাঁথা।
– তোমার সৌরভ জমা আছে তাতে?
– আমি সৌরভহীন!
– জোছনার মতো?
– মানে?
– জোছনায় সুবাস থাকে না তো!
– তাই? আমি কি অতো আর বুঝি?
– চিত্রকলা বুঝো, আর আমায় বুঝো না?
– তোমায় বুঝি, জোছনার সৌরভ বুঝি না।
– ওমা! তুমি না জোছনার সওয়ারি?
– সে আর হলো কই? তুমি শুধু ওম খোঁজো!
– আচ্ছা! তাই ?
– হুম! ঠিক তাই।
– ভালো থেকো শীলা, এই শীতে।
– ভালো থেকো শিশির, এই শীতে।
ঝরছে জোছনার জল
শীলার বুকে শিশির জমছে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *