খান মুহাম্মদ রুমেল-এর কবিতা

নদী নেবে?

মেঘ রঙ মেয়ে একটা নদী নেবে?
পাহাড়সম নয়
ধীর গতির ছলাৎ ঢেউ খেলে যেখানে।
রূপালি আলোর ঝলক
তোমার নাকের নোলক বলে বিভ্রম জাগানো জল।
যে নদীর স্রোতের আওয়াজ
তোমার হাসির মতো
রেশমি চুড়ি রিমঝিম।
যেখানে মাছরাঙা অপেক্ষায়
তোমার আমার যুগল পদছাপের।
তেমন একটি নদী তোমাকে দিতে চাই।
দুহাত বাড়িয়ে আছি-
একটু এগোও নারী।

স্বপ্নের হারিয়ে যাওয়া

মুখচোরা কিশোর রোজ দাঁড়িয়ে থাকতো বড় রাস্তার মুখে,
চৌমাথায়।
কি একটা পারফিউম মাখতে
খোলা নর্দমার নিত্য দুর্গন্ধ ছাপিয়ে
অনুভূতিতে আঘাত হানতো সৌরভ।
কতো নিশিদিন উদাসী বিকেল,
কেটে গেছে বৃষ্টি ধোয়া সন্ধ্যা
আর্ত মনে কখনো জেগেছে
চাঁদ ছোঁয়ার বাসনা।
কিছুই দেয়নি ধরা, পৃথিবী হয়নি বসুন্ধরা।
শুধু সৌরভের স্মৃতি বুকে
মুখচোরা কিশোর এখন গৃহহারা!
তুমিও তো পাওনি কিছুই;
কেবল স্বপ্নগুলো হারানো ছাড়া!

নষ্ট উৎসব

এই নষ্ট জামানায় উল্লাস ভরে চর্চা হয় নষ্টতার
বিগত নষ্টামি সব ভুল গিয়ে মেতে ওঠা তোয়াজে!
লাথি খাওয়া কুকুরেরা কুঁইকুঁই করে পায়ের কাছে
সকলেই খুব আরাম প্রিয়!
সামনে ঝুলে মায়াবী পর্দা, চোখগুলো লোভাতুর!
নিয়েছিলো কেড়ে একদিন স্বপ্ন দেখার সাহস
হায়েনার দল ভুলেছে সবই, স্মৃতি ক্ষমাহীন।
ক্ষত বুকে হেঁটে বেড়ায় কতিপয় স্বাপ্নিক
মিথ্যার বেসাতি ভাঙবে একদিন, দুর্দম।
মাথা নোয়ানো কুর্নিশে এসো সেদিন
ঠাই দেবো তরুছায়ায়, কথা দিলাম!

নিঃসঙ্গ তালা

প্রতি সাঝে একা একা তালা খোলার কর্তব্য
ক্লান্ত লাগে কি তোমার খুব, কখনো?
তারচেয়ে কড়া নাড়ে যদি কেউ
অথবা,
সঙ্গী হয় চাবির গোছার আলগোছে!
জড়িয়ে থাকে যদি, কাঁপা কাঁপা সুখে
গোধূলি আলোর মায়ায় টানে যদি বুকে-
সেই সব অঙ্কুরিত মূর্হুত ফিরিয়ে দেয়া মানে পাপ
অদেখা ঈশ্বর- লেখে ঠিক বেঠিকের হিসেব
তার খাতায়ও জমা হবে প্রত্যাখ্যানের দহন
তারচেয়ে পুরুষকে তুলে নাও আগুন স্পর্শে
ঠিক বেঠিক, শুদ্ধ অশুদ্ধ মিশে যাক
সব ঠোঁটে ঠোঁটে, বুকে বুকে পিঠে!
যাকে বলো ঈশ্বর, অথবা কিছুই না
সে তো মিশে মিশে থাকে হৃদয়ের উত্তাপে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *