সম্পা পাল-এর কবিতা

আমাদের কোনো আকাশ ছিল না

তুমি বড়ো বিপন্ন
এই যে আমি কথা বলছি তার কোনো শব্দ পাচ্ছোনা
অথচ উঁচুতে ওঠার সিঁড়ি খুঁজছো দৈনিক

কখনো শব্দের ধাক্কা, কখনো জীবন হারাবার সংশয়
বেঁচে থাকার কী দারুণ মানে…
তবে ভয় নেই এই সিঁড়িতেই আছে পূর্বসূরিদের রেখে যাওয়া নরকের গেট

অসুস্থ ফ্ল্যাটের নেমপ্লেটে বহুদিন হাত রাখিনি
জানিনা তোমার বাড়িটাও গভীর অসুখ থেকে সেরে উঠেছে কিনা

সৌজন্যবোধটা হয়নি বহুদিন
আসলে আমাদের কোনো আকাশ ছিল না
কিন্তু সমুদ্রের দিকে হেঁটে যাওয়ার অনেকটা রাস্তা ছিল

একটি জীবন

জিজ্ঞাসু মনে সজিবতা ধরে রেখেছি
শুধু জানতে চাই কবিতা কি আমার জন্য নয় !
তবু নদী পার হয়ে পাহাড় খুঁজি
পাহাড়ে নাকি একটা জীবন আছে !
আমার জানা ছিল না

একটি স্বপ্ন উড়ে গেছে কিছু বেনামি জীবনের উপর দিয়ে
যারা বাইশ নম্বর বাড়ি খুঁজতে গিয়ে হারিয়ে গেছে
তেইশ নম্বর বাড়ি যাদের আর খোঁজা হয়নি

হাতে কলমে সামলে নেওয়া এই একটি জীবন আমার আছে ,
হয়তো এই নিয়ে বেশ আছি

শেষ রাতের স্বপ্নে বৈশাখ

অঙ্ক সবসময় মেলে না
আমরা তবুও নতুন বাড়ির নেমপ্লেট খুজিঁ
এভাবেই জেনে যাই আমাদের এই টিকে থাকাটা কতটা জরুরী

বর্ষা থেকে বসন্ত হাতবদল হয় একটি জীবনের
কিশোর একদিন মিছিলে হাঁটে
গ্ৰামের অটো চালক মৈদুল ওই মিছিলেই হেরে গেছে

নন্দিনী সযত্নে এড়িয়ে গেছে এত কিছু
আসলে যক্ষপুরী এখনও কঠিন
বারো সেমির বৃষ্টি পারেনি সেই উঠোনকে শান্তি দিতে

তারপরও শেষ রাতের স্বপ্নে ফুটে ওঠে বৈশাখ

এগারো নং বাড়ির গেট

ভালোবাসতে পারিনি কারোকে
কারণ আমার আশেপাশে অনেক বৃদ্ধাশ্রম।
যাদের কোনো হৃৎপিণ্ড নেই
থাকলে পৃথিবীর দহন বেড়ে যেত কয়েকগুন

ভালোবাসতে পারিনি কারোকে
কারণ মিছিলে যাবার রুটম‍্যাপ আমার জানা ছিল না
অথচ সেই মিছিলের নায়ক একদিন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল
সে হয়তো ভুলে গেছে আমাদেরও গার্হস্থ্য বিপ্লব থাকে

ভালোবাসতে পারিনি কারোকে
কারণ আমার অনুভূতি স্বর্গ ছুঁতে পারেনি
আমিও হারিয়ে গেছি নদী ভাঙনের পর
তবু খুঁজে চলেছি এগারো নং বাড়ির গেট…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *