নাবিলা নূপুর-এর কবিতা

যা কিছু প্রথম

তোমার প্রথম কাছে আশায় বুঝেছিলাম,
প্রেম কি।
তোমার প্রথম স্পর্শে বুঝেছিলাম,
অনুভূতি কি।
তোমার প্রথম আলিঙ্গন এ বুঝেছিলাম,
শিহরণ কি।
তোমার প্রথম চুম্বনের বুঝেছিলাম,
দেহের অসারতা কি।
তোমার প্রথম অভিমানে বুঝেছিলাম,
আবদার কি।
তোমার বুকে প্রথম মাথা রেখে
ভরা জোছনায় সাগর পাড়ে
বসে বুঝেছিলাম,
জীবন কি।
স্মৃতি কত জীবন্ত হয় তাইনা?
তোমারি প্রথম বিদায় যেদিন
আমার প্রেমময় ভুবন থেকে,
সেদিন বুঝেছিলাম বেঁচে থেকেও
মৃত্যু কি।

চেয়েছিলাম

একটা ঘর চেয়েছিলাম,
পথ দেখিয়েছিলে।
একটা শান্ত নদী চেয়েছিলাম,
সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ দিয়েছিলে।
ভালোবাসার লাল রং চেয়েছিলাম,
বেদনার নীল দিয়েছিলেন।
একটা গোলাপ চেয়েছিলাম,
কাটার আঘাত দিয়েছিলে।
একটা তারা ভরা
আকাশ চেয়েছিলাম,
অমাবস্যা দিয়েছিলে।
একটা স্বপ্ন চেয়েছিলাম,
বিনিদ্র করেছিলে।
পূর্নিমার চাঁদ চেয়েছিলাম,
তার কলঙ্ক দেখালে।
একটু প্রেম চেয়েছিলাম,
তুমি বেদনায় ভরে দিলে।

বৈশাখী প্রেম

অনেকদিন থেকেই একটা
চিঠি লেখার খুব ইচ্ছে আমার।
তাই খুঁজে বেড়াচ্ছি একটি ঠিকানা।
যে ঠিকানায় থাকবে একজন
তুমি নামক প্রাপক।
চিঠির সম্মোধন হবে ‘আমার তুমি’
লিখা থাকবে একটিই কথা,
শুধু তোমাকে চাই।
ইতিতে থাকবে ‘তোমার আমি’
কিন্তু একটা ঠিকানার বড্ড অভাব।
তাই অপেক্ষায় আছি,
কোন এক বৈশাখের।

বৈশাখী ঝড়ের হাওয়ায়
উড়িয়ে দেবো আমার চিঠি।
ঝড় মানেই ধ্বংসযজ্ঞ জানি
তবুও অভিলাষী মন,
কোন এক কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা পৌঁছে যাবে।
তোমাকে লেখা আমার চিঠি
থাকবে না আর বেনামী।

আমি নারী

আমি মায়াবিনি, আমি মায়াবতী।
আমি রমণীয়, আমি কুৎসিত।
আমি আধার, আমি জ্যোতি।
আমি লাজুক, আমিন নিলজ্জ।
আমি তমসা আমি ভরসা।
আমি সম্পদ আমি আপদ।
আমি কুহকিনী আমি সুহাসিনী।
আমি মুক্ত আমি বন্ধন।
আমি লাঞ্ছিতা আমি অদ্বিতীয়।
আমি পূর্ণিমা আমি অমাবস্যা।
আমি ঘৃণা আমি শ্রদ্ধা।
আমি সৃষ্টি, আমি ধ্বংস।
আমি কলঙ্কিনী আমি নিষ্পাপ।
আমি মিলন আমি বিচ্ছেদ।
আমি অভিশাপ আমি আশীর্বাদ।
আমি প্রশংসা আমি কুৎসা।
আমি কল্পনা আমি বাস্তব।
আমি হৃদয়হীনা আমি স্নেহময়ী।
আমি শ্লীল আমি অশ্লীল।
আমি প্রেরণা আমি বোঝা।
আমি নিষ্ঠুর আমি মমতাময়ী।
আমি অবাধ্য আমি বাধ্য।
আমি মায়া আমি ছায়া।
আমি কন্যা, জায়া, জননী।
আমি মহিয়সী
আম নারী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *