কবিতা।। জাহিদুল হক।। ফেব্রুয়ারি কবিতা উৎসব সংখ্যা

তোমাকে আবার ভালোবাসি কেন

পুনরাবৃত্তির ও কিছু সুখ-মোহ আছে, তা নাহ’লে
আসি কেন? তা নাহ’লে তোমার পুরোনো হাতে হাত
রাখি কেন? নতুনত্ববোধ মানুষ্য সমাজে কিছু
আফিম ছড়ায় বলে মানুষের এগোয়, গুহা থেকে
স্কাইেস্ক্রপারের দিকে, মেঘ থেকে বিদ্যুৎ দিকে

রুমী থেকে মাস্ননভীর -দিকে অর্থাৎ এগিয়ে যেতে
কিছু ব্যথা মানুষকে জন্মসূত্রে খুব ঠেলে দিচ্ছে
মানুষ এগুচ্ছে আর মানুষেরা খুব দুঃখ পাচ্ছে।

এই হ’লো নতুনত্ববোধ ব্যথাবোধ! কিন্তু মানুষেরা

যেই মাএ গন্তব্যে পৌছালো মুহূর্তেই খুলে গেল
ফেলে আসা সেই ঘরবাড়ি, সেই তুমি, ঘরকনা

সেই পিছুটান: তোমার কন্ঠর থেকে অবিকল সেই
গান সোনালী শস্যের মতো জন্মাচ্ছে আবার!
এই যে পুনরাবৃত্তি, নিরর্থক নয় এতটুকু,
তা নাহ’লে আসি কেন, তোমাকে আবার ভালোবাসি কেন?
সেইতো পুরনো হাত, তবু সেই হাতে হাত
রাখার তৃপ্তির জন্য নিজের ভেতর সংগোপনে
জন্মাচ্ছিল কেবল এই হ’লো শুধু জন্মাবার সুখ।

খুনােখুনি করে হৃদয়েরা

সারারাত বৃষ্টি ও বাতাস গাছগাছালিরা আর আকাশের অন্ধকার
ঔজ্জ্বল্যের ঘন নীলিমার সাথে মিশিয়েছি আমার স্বপ্নকে।
দুঃখকে সাজিয়ে নিয়ে ঘর কি বাহির, মনুষ্যের শুদ্ধ ভাষা দিয়ে
অন্য কোনাে তীব্র ভাষা– যা’ অচেনা তাকে স্পর্শ করে
সারারাত তােমার স্মৃতিতে যুদ্ধ, তােমার গন্ধরে ছুঁয়ে
ছুঁয়ে কী যে কষ্ট-কষ্টের অতীত কোনাে চোটে
কী রকম বলাে এই অপরূপতায় ব্যথা ওঠে !

সারারাত মানবজন্মের এটা কী রকম রাত?
বৃষ্টি ও বাতাস ও বৃক্ষতরুশ্রেণী স্বপ্নের করাত দিয়ে
স্বপ্ন কাটে বৃক্ষসারি কাটে আমার শুশ্রুষা কাটে
কুটিল নিয়তি জুড়ে মুখশ্রী গরিমাকে সংকটে
উন্মােচিত করে তবে সে দেখে আমার ধসগুলাে।
ভােরের আজানগুলাে অন্তস্তলে অলৌকিক ধুলাের
কিংবা সুর লেপে দিলে, গির্জায় জ্বালালে শাদাবাতি
মানুষেরা খুব খুব দূর থেকে আসে সারা রাতই!

অতীতেরা অধুনায়, অধুনা অদ্ভুত ভবিষ্যতে জন্মমৃত্যু,
প্রেম, ঘৃণা অব্যাখ্যাতে সময়ের স্রোতে লুটোপুটি
করে শুধু খুনােখুনি করে হৃদয়েরা;
বৃষ্টি ও বাতাস, তুমি, স্মৃতি– যেন কী তীব্র অপেরা!

তুমি চ’লে গেলে

এই সন্ধ্যায় আরাে কিছু ক্ষণ থাকো,
গুল্মলতায় গুল্ম যেমন থাকে;
শাহবাগ জড়ে দ্যাখাে ঝর্ণার নাচ
নিয়নের বুকে যেন ভালােবাসা অাঁকে।
তারপরও যাবে, চ’লে যাবে, চলে যাবে,
আমি থেকে যাবে তােমার সারভি হ’য়ে;
তােমার কি খুব তাড়া আছে? তবে যাও-
আমিও তো যাবাে বেদনার কনভয়ে।

জীবন তাহলে নেহাৎই ভাঙন শুধু
জন্মেছি ব’লে ভাঙনের ক্রীতদাস,
তা না’হলে তুমি অন্তত কিছ, ক্ষণ
থাকতে তাে পাশে, থাকতাে না সন্ত্রাস।

তুমি চ’লে গেলে, আমিও তাে চ’লে যাই
ভাঙনের মাঠে, যেখানে তেপান্তর;
তুমি চ’লে গেলে পাতা ঝরে, পাতা ঝরে,
তুমি চলে গেলে সহসা উঠবে ঝড়।
তুমি চলে গেলে দীপ নেভে উৎসবে
শামুকের মতাে স্বপ্ন গুটিয়ে থাকে,
তুমি চলে গেলে শিকারীর গলি নামে
হদয়ের কাছে রুপালি হাঁসের ঝাঁকে;
তারপরও যাবে? তাহ’লে কী থাকে তবে?
ঝর্ণার মতাে ঝর্ণার আশেপাশে।
তুমি চ’লে গেলে তােমাকে খুঁজতে থাকি
এই জীবনের শত শত সন্ত্রাসে।

One thought on “কবিতা।। জাহিদুল হক।। ফেব্রুয়ারি কবিতা উৎসব সংখ্যা

  • ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২১ at ২:৪৭ পূর্বাহ্ণ
    Permalink

    কবিতাগুলোর শিরোনাম বোল্ড করে দিন,
    প্রিয় এডমিন!

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *