খান মুহাম্মদ রুমেল এর কবিতা
গন্তব্য
গলায় ঘাড়ে লেগে থাকে
ওম কিছু কর্পূরের মতো
বেড়ালের মতো আমিও বড় ওম প্রিয়!
অনিবার্য পতনের মতো নেমে আসি
তোমার চোখে ঠোঁটে গলায় ঘাড়ে
ফেরাবে বলো আমাকে কিভাবে
উইপোকার আগুন যাত্রা থামাতে পারে কেউ?
তোমার ঠোঁটের বিষপানের পণ
ঘাড় গলা ছুঁয়ে দেয়ার শপথ…
অসম্ভব অভিলাষী বেপরোয়া মন
তীব্র আকাঙ্ক্ষায় খোঁজে তোমার পথ
মৃত্যুও আমায় পারবে না টলাতে
মীমাংসা তোমার হাতেই মেয়ে
তৃষ্ণা এতোই দুর্নিবার
তোমাকে রক্তিম রঙে রাঙাই বারেবার
আশার ঝর্ণা
চেয়েছি প্রসারিত ডানা, পাখা নয় ওড়ার
আজন্মের সাধ, তোমাকে জড়িয়ে ধরার!
ফেরাবে অথবা ফেরাবে না শূন্য
কলমের কবি, কখনো কখনো বন্য
এই যে আকাশ ফেরায় না পাহাড়
বৃষ্টির জোছনায় ভেজায় শতবার!
জলে জলে দলে দলে চলে
পাখিরা কার কথা বলে!
আঙিনার ভাঁটফুল বনের মায়া পোষে
তুমি দ্বিধার কাঁটায় জর্জর কোন রোষে!
বৃষ্টি হোক নদীর
শুভ্র হোক তীর
কেউ না জানুক তুমি জোছনার ফুল হও
হৃদয়ের গভীরে একাকিত্বে গেঁথে রও।
সম্পদ
আমার একটাই সম্পদ- মগজ!
ওটা বেচেই বেঁচে থাকি।
তবে জানিস কি-
মগজের প্রতিটি কোষে কার নাম বাজে?
কখনো সুরে কখনো বেসূরে
কখনো ছন্দে কখনো দ্বন্দ্বে
বেজে চলিস তুই সুমধুর।
আলো ধোয়া সেই জোছনার কসম করে বলছি
হীরের মতো জ্বলজ্বলে সেই সন্ধ্যার কসম করে বলছি
সেই ভীরু থরথরে দুটি দশকের কসম করে বলছি
একমাত্র সম্পদ মগজের স্বত্ব তোর
সকল দ্বিধা ভুলে শুধু দিবি একটা রাত্রি ভোর।
আছে তো কেবল
সম্মিলিতের যৌথ হাহাকার
তার অকারণ অপচয়ে
আর কেন বাড়াবি দুঃখের পাহাড়!
ভুল ঠিকানায় কড়া নেড়ে কেটেছে অনেক বেলা।
বসে আছি স্বপ্ন আগলে ঠাঁয়।
তোর প্রহর গুনে যায় দিন যায়…
তাড়া
শুধু মনেহয় সময় শেষ
কিসের এতো তাড়া আমার
সবুজ মাঠ রঙিণ ফড়িং
ধানের শীষে দোয়েলের শিস
সব ফেলে সামনে এসে দেখি
শূন্য মরিচীকা বাড়িয়েছে বেদনার ভার!
বাতাস আঁকড়ে বাঁচতে গেলে
সেখানেও গুমোট থমকে থাকা!
ছেলেবেলায় হাত দেখে বলেছিলেন
ট্রেনের কামরায় সেই জ্যোতিষি
- ছেলেটা আজীবন কাঙাল হবে !
পথের খোঁজে অন্তহীন পথেই রবে!
এতো বছর পরে বুঝি সত্য হলো সেই ইতিহাস।
আহা জীবন! মানুষ জীবন!