সাকিব শাকিল এর কবিতা

১.
বিবাদের ঘনকালো মেঘ।

উড়ন্ত ডানা গলে পড়লে ক্ষুদ্র হয়ে আসে জীবিকার আকাশ।
আর সুক্ষ সুতো পুড়ে পুড়ে শেষ হয় জীবনের আয়ু।
জীবন সেতো করাতকলে খণ্ডিত হওয়া সবুজ বৃক্ষের চিৎকার
যার ভেতর দিয়ে বয়ে চলে সময়ের দুরন্ত ঘোড়া।
প্রতিষ্ঠানিক ঘোড়া দেখতে পায় না নিজস্ব প্রতিবিম্ব
অথচ মননের ভিটেমাটি জুড়ে শিল্প খেলা করে
আর হৃদয়ের আঙিনা থেকে নিত্য উড়ে যায় তার
মুক্তির কবুতর।
বোধের ডানায় উড়িয়ে দেয় সে নিজস্ব মতের শ্লোগান।
অথচ আমাদের আকাশ জুড়ে—
বোধের বিপরীতে মিশে থাকে বিবাদের ঘনকালো মেঘ।

২.
হাওয়াবদল পথের ঠিকানা

স্মৃতির পথে রেখে দিয়ে সবুজ খামের চিঠি
পড়ন্ত দুপুর চলে যায় আহ্লাদের দরজায়।
শব্দগুলো একাকার পড়ে থাকে নিস্তব্ধতার উঠানে।
নিঃসঙ্গতার ভেতরে জন্ম নেয় মরমের গান;
মরমের হাতে রচিত হয় যে বন্দনা
তার তো জানা নেই হাওয়াবদল পথের ঠিকানা।
শুধু ভুল নামে ডাক আসে
আর অতিথি জলে ভরে যায় প্রতিবেশি যমুনা।
এভাবে দিনের অন্ধকারে রঙহীন হয়ে যায় পরিচিত পথ
সারি সারি বৃক্ষ তবু আঁকড়ে ধরে ভেঙে যাওয়া মাটির শরীর।
তবু কঠোর কুঠার কেটে ফেলে বৃক্ষের আয়ু
রহস্যই থেকে যায়—
শরীরের কোন ভাজে ঢুকে গেলে জানা যায় অলিক আয়াত?

৩.
আবরণে বিশ্বাসি নই সখি

আবরণে বিশ্বাসি নই সখি
তবু আড়াল হতে ভাল লাগে ভীষণ।
প্রতিষ্ঠিত জ্ঞানে আমি নির্বোধ বালক
ছন্দবিজ্ঞান ও জানা নেই তেমন;
জানিনা ছলাকলা, রমণের ঐতিহাসিক কৌশল।
তবে আমার পূর্বপুরুষ দারুণ কৃষক
লাঙলের ফলা দিয়ে মাটি চুষে
পৃথিবীকে দিয়েছে সবুজের উপহার।
যারা আয়ত্ত্ব করেছিলো প্রজাপতি ও পায়ড়া উড়ানোর কৌশল।
তাইতো সকল ঈমান এনেছি প্রকাশে ও স্পর্শে।
তাদের হৃদয় খুঁড়ে আবিস্কার করেছি সৃষ্টির শিলালিপি।
যেখানে লেখা আছে,
আবরণে নয় উন্মোচনেই প্রজাপতি উড়ে যায় বুকের কপাট থেকে।

৪.
একদিন মৃত্যুকে ভালবেসে

একদিন মৃত্যুকে ভালবেসে,
নিজেরই ভেতরে ফিরে যাবো নিজের হয়ে।
বহুকাল দেখে দেখে মহাকালে দাঁড়াবো- আমাকে আমার করে।
তবু একদিন সারাদিন পড়ে রবে খড়ের বিচুলি ;
ভেজা ধানসব পড়ে রবে মৌসুমি উঠানে
কত ডাক শোনার আগেই শেষ হয়ে যায়;
কত স্মৃতি লুকায় মুখ তফনের আঙিনায়
শতশত কাক মান করে ডাকবেনা কা কা…
নাড়ার ফরিঙ স্থায়ী হয় আমনের বুকে
একা পাতা দোলেনা হাওয়ার দোলাতেও।
একদিন কোনোপাখি রাখবেনা মুখ তার হৃদয়ের ক্ষুধায়।

আমিতো জানি ভবিতব্য অন্ধকারের সমস্ত রুদ্ধদ্বার;
সবুজ বৃক্ষ ছেড়ে যে পাখির উড়াল
তাদের সখ্যতা শুধু আকাশের সাথে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *