গুচ্ছ কবিতা সায়ন্তিকা বসু
শোনিত ধরা
জ্বলে অন্তর চিত্ত জীবন লেলিহানে
রক্তিম চাঁদোয়া নির্লিপ সায়াহ্নে
জ্বলে উঠে প্রচন্ড হলুদ উদগ্রীব,
জিঘাংসা ভরা অন্তিম উত্তাপে,
কম্পিত হৃদস্পন্দন আলোড়নে উদ্বেল,
ঘৃনিত মানবতার আস্ফালন উদ্বেগে;
লালা ক্ষরিত হৃদপিন্ড নিয়ত
পচিত নৃশংসতায় নির্মম,
পাশবিক অবনমনে তিক্ত রক্ত,
সিক্ত পাকস্থলির অসীম
খুদা গ্রাসে নেয় নম্রতার মখমল,
আচড়কৃত দগ্ধ তন্বী তীব্র দন্তরোষ,
পচন চর্বিত দেহ সানিত ব্যোম
এ বাহিত প্রতাপ বেগ,
হাহাকার রোল এ মত্ত
আবহ সঙ্গিত এ কাফন
এ কাফনে আবৃত-
ঘন শোনিত ধরা দেহে!
আহ্লাদী মৃত্যু
দেখেছো খুব কাছ থেকে মৃত্যু কে
কখনো কি নিয়েছো মৃত্যুর চেনা ঘ্রাণ,
যেখানে বেঁচে থাকে প্রাণের অন্তরআত্মা
যেখানে সাধেনা বাঁধ ঐশ্বর্যের পরিত্রান।
কখনো কি পেরেছো জানতে মৃত্যুর অহমিকা
কখনো কি দেখেছো টেনে প্রাণের যবনিকা,
কখনো কি পেতেছ কান ইহলোকের হিমেল স্রোতে
কখনো কি ভেবেছ কিছু নীরবে-নিভৃতে !
জীবনের আত্মীয়তার বোঝা নিয়ে
মৃত্যু যখন দরজায় নাড়ে কড়া ,
জীবনের যত চাওয়া পাওয়া হাসি-কান্নার হিসাব
জীবনের ব্যালান্সশিট সরিয়ে রেখে দিতেই হয় সাড়া।
জীবনের প্রতিটি দুঃস্বপ্নের রাতগুলি তখন
ঘেরা থাকে ভালবাসা ভরা মধুর বন্ধনে,
আর তখনই নির্বাক সত্য এসে জানান দেয়
জীবন খাতার প্রতিটি পাতায় ছিল ভয়ার্ত স্বপ্নঘোরে মননে।
রাত্রির বুকে জোনাকির ঝাড়লন্ঠন জ্বালিয়ে
যখন মৃত্যু ফুলশয্যার বিছানা গড়ে ,
নক্ষত্র সমারোহে প্রস্তুত ফুলের মালাসমূহ
ভালবেশে কেবলই বৃষ্টি হয়ে শরীর জড়িয়ে ধরে।
এক পলক দীর্ঘশ্বাস জমাট বুক
যখন হবে স্তব্ধ জীবনের বাস্তব কঠোর সঙ্গীতআসরে
তখন আমি অবাধেই আসতে দেবো
প্রেমরূপি মৃত্যুকে আমার প্রেমভরা নবদ্বারে।
স্বপ্নেরা জেগে রয়
প্রত্যহ রাতে জেগে রয় স্বপ্নেরা
নির্লিপ্ত অক্ষ্মীজঠরের সন্ধানে,
খুঁজে বেড়ায় উৎসৃঙ্খালা, চঞ্চলতা উদ্দামতা
গতিশীলতাই পূর্ণ সে স্বত্ত্বা যা তৃপ্ত উজ্জীবনের আলোকে,
খুঁজে বেড়ায় সেই তন্বী যা দগ্ধ নই,
কোনো শঠতার দাবদাহে।
প্রত্যহ রাত্রে স্বপ্নেরা জেগে রয়,
জেগে রয় কোনো ঘৃণা, ক্লেষ হীন,
অস্থিমজ্জার সন্ধানে।
খুঁজে বেড়ায় সেই হৃদস্পন্দন,
যা বদ্ধ নয় কোনো প্রতারণার বায়ু দূষণে।
প্রত্যহ রাত্রে জেগে রয় স্বপ্নেরা
মুক্ত প্রতিবদ্ধতা হীন চেতনার খোঁজে
জেগে রয় কোনো বিহঙ্গের
ইচ্ছে ডানার আস্ফালনের অপেক্ষায় মুক্তির সফলতার সন্ধানে।