কল্পবিজ্ঞান কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব এক
- কল্পবিজ্ঞান কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব এক
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব দুই
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব তিন
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।পর্ব চার
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব পাঁচ
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব ছয়
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব সাত
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।। পর্ব আট
- সায়েন্স ফিকশন কিশোর উপন্যাস।। পয়েন্ট থ্রি টু সিক্স এফ এক্স।। আহমেদ রিয়াজ।।শেষ পর্ব
১.
পুরো মাঠে একটা চক্কর দিল আসিফ। তারপর একটা নিরিবিলি জায়গায় এসে বসল। রোবট মেলা চলছে। অনেক ধরনের রোবট উঠেছে মেলায়। চিন্তা-ভাবনা করে রোবট কিনতে হবে। চিন্তা করার জন্যই নিরিবিলি জায়গাটা বেছে নিয়েছে ও।
হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন চেঁচিয়ে ওঠল, ‘এখানে বসে আছো কেন? আলসে মানুষ কোথাকার!’ পরিচিত কেউ? ঘুরে পিছনে তাকাল আসিফ। না। অচেনা কেউ একজন। তবে রোবট। জবাব দেয়ার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু জবাব না দিলে আবারও একই প্রশ্ন করবে।
এখনকার রোবটগুলোর ধরনই এমন। জবাব না পাওয়া পর্যন্ত প্রশ্ন করতেই থাকে। একই প্রশ্ন বার বার শুনতে কার ভালো লাগে?
নিতান্ত অনিচ্ছায় জবাব দিল আসিফ, ‘বসে বসে ভাবছি।’
‘ভাবতে হয় ছুটতে ছুটতে। তোমাদের নিউরনগুলো ওভাবেই তৈরি। যত ছুটবে, তত ভাবনার জট ছুটবে।’
‘আমরা বসে বসেই ভাবি।’
‘মেলায় এসেছ একটা রোবট নিয়ে বাসায় চলে যাবে। ব্যস। এত ভাবাভাবির কী আছে?’
‘সেটা আমার ব্যাপার। তুমি কে হে বাপু?’
‘আমি পয়েন্ট এইট নাইন টু জিরো জিরো এইট।’
‘হুম।’ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল আসিফ। রোবটের এই মডেলটার সঙ্গে ওর পরিচয় আছে। পয়েন্ট এইট নাইন মডেলের রোবটরা ঝগড়ায় পারদর্শী। ওদের সেভাবেই বানানো হয়েছে। মাঝে মাঝে পড়শিদের সঙ্গে অনেকেরই ঝগড়া লেগে থাকে। সারাবছর ধরে চলে সে ঝগড়া। কত রকম বিষয় আছে ঝগড়ার!
তোমার রোবটটা বেশি জোরে শব্দ করে।
মনে হয় ওর সাইলেন্সারে ঝামেলা হয়েছে। ঠিক আছে সাইলেন্সার ঠিক করে ফেলব।
এতদিন ঠিক করোনি কেন?
তোমার রোবট আমার বাড়ির কার্নিসে কেন ঝুলে আছে?
ওর কার্নিসে ঝুলতে ইচ্ছে করছে তাই ঝুলেছে।
তোমার রোবট তোমার বাড়ির কার্নিসে ঝুলবে। আমার বাড়ির কার্নিসে কেন?
তোমার বাড়ির কার্নিসটা ওর পছন্দের।
তোমরা যেমন তোমাদের কেনা রোবটটাও তেমন। পরের জিনিসে…
কী বললে? তবে রে…
আয়! সাহস থাকলে আয়। দেখাচ্ছি মজা।
তোমাদের রোবট বিড়াল আমাদের জানালা দিয়ে ঘরে ঢুকেছে।
ঢুকতেই পারে।
আমাদের দুটো মাছ শুঁকেছে।
শুঁকতেই পারে। মুখ তো আর দেয়নি।
মুখ না দিক, নাক তো দিয়েছে? তোমরা কেন পরের মাছে নাক দেওয়া রোবট এনেছ, জানি না বুঝি?
জানলে তো ভালোই। আবার জিজ্ঞেস করছ কেন?
জিজ্ঞেস করে কি অন্যায় করেছি। এটা ভদ্রতা। আমি তো তোমার মতো অভদ্র নই।
কী অভদ্র পড়শি আমার!
কী! আমি অভদ্র? আর তুমি? তোমাদের রোবট কুকুর ষাঁড়ের মতো ডাকে কেন?
ওটা ওর ইচ্ছে। গণ্ডারের মতো ডাকলে বুঝি খুশি হতে? তুমি যেমন…
কী! আমি গণ্ডারের মতো ডাকি? তবে রে…
ইত্যাদি ইত্যদি। ঝগড়ার বিষয়ের কি আর অভাব আছে?
আবার কথা বলল পয়েন্ট এইট নাইন টু জিরো জিরো এইট। ‘এখনও তো তোমার
পরিচয়টাই দাওনি। নাকি পরিচয় দিতে চাও না? কেন চাও না? নিশ্চয়ই তুমি অপরাধী।
অপরাধীরাই পরিচয় গোপন করে। নইলে এতক্ষণে নিশ্চয়ই তুমি তোমার পরিচয় দিয়ে
ফেলতে। তোমাকে…’
পুরোটা শেষ করতে পারল না পয়েন্ট এইট নাইন টু জিরো জিরো এইট। তার আগেই আরেকটা রোবট হাজির হয়ে গেল। ঠাণ্ডা স্বর বেরুলো ওটা থেকে, ‘এটা মেলার মাঠ। ঝগড়া করার জায়গা নয়। বার্ষিক ঝগড়া উৎসবে যোগ দিলেই পারো!’
আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল আসিফ। বার্ষিক ঝগড়া উৎসব। তা-ও আবার রোবট আর মানুষ মিলে। কী হাস্যকর বিষয়। মানুষের বিনোদনও বদলে দিয়েছে রোবটগুলো। মনে হচ্ছে ঠাণ্ডা স্বরের রোবটটা হর্তাকর্তা টাইপের। ঝগড়াটে রোবট থেকে আর কোনো শব্দ বেরুল না। ধুপ ধাপ পা ফেলে চলে গেল অন্য দিকে। এবার ঠাণ্ডা স্বরের রোবটের দিকে তাকাল আসিফ। জানতে চাইল,
‘তুমি আবার কে হে?’
আসিফের কথার জবাব দিল না রোবটটা। উল্টো জানতে চাইলে, ‘তোমাদের বাসায় একশ বারো ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কোনো রোবট নেই। বিষয়টা কি তুমি জানো?’
‘জানি। এজন্য সরকারের রোবট মন্ত্রণালয় থেকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে।’
‘দিনে চারবার করে মেসেজও পাঠাচ্ছে একটা রোবট নেওয়ার জন্য। ঠিক?’
অবাক হয়ে রোবটের দিকে তাকাল আসিফ। ‘তুমি এত কিছু জানলে কী করে?’
‘দুনিয়ায় এখন কি আর কোনো কিছু গোপন থাকে?’
কথাটা শুনেই আসিফের বুকটা ধুক করে ওঠল। আবারও ঠাণ্ডা স্বর বেরুল সামনে দাঁড়ানো রোবট থেকে, ‘কি ঠিক বলেছি না?’
কিন্তু জবাব দিল না আসিফ। এখন জবাব দিতে গেলেই বিপদ। ওর স্বরনালী এখন অস্বাভাবিক ভাবে কাঁপছে। কথা বলতে গেলে কাঁপাস্বরে শব্দ বেরুবে। আর তাতেই রোবটটা অনেককিছু বুঝে যাবে। কিন্তু অনেক কিছুই গোপন রাখতে চায় আসিফ।