মামুন সুলতান- এর কবিতা
দখল
তোমার অন্তরে বুঝি এতটুকু গুহা নেই
যেখানে লাল অক্ষরে লেখা যাবে আমার নাম
গুহার দেয়ালে বুঝি এইটুকু শূন্যতা নেই
যেখানে ঝুলানো যাবে ছোট্ট এই নামলিপি
আজকাল সবকিছুই দখলে চলে গেছে
চাঁদের জোনাকি থেকে সমুদ্র ঢেউ
বাজারের কোলাহল অলিগলি বিপণীবিতান
দখলে নিয়েছে আজ তোমার হৃদয় ভাবনা
তোমার হৃদয়ে আমি
এতকাল চলমান স্রোত হয়ে ভেসেছি
সেই স্রোতে ভাসে আজ হানাদার প্রেমিক প্রবীর
তুমিও খুব শিখে গেছো এ যুগের ভাষা
চোখের চশম খুলে হয়ে গেছো হাইহিল অভিজাত নারী
বুকের ভেতরে তাই গেঁথে গেছে প্রেমের পেরেক
তোমার হৃদয়ে আমি নেই
পেরেকে বিক্ষত হলো নিদাগ মনের সরপুঁটি দেহ
এক্ষণে বুঝেছি হায় দখল হয়েছে তোমারও মন।
সশস্ত্র সালাম
রাতে যেখানে ঘুমাই নিরাপদ নিদ্রায় শুয়ে থাকি
কারো হানায় ভাঙে না তন্দ্রাচ্ছন্ন কাঁচাঘুম
হানাদার হায়েনার বুটের তলায় পিষ্ট হয় না-
নির্মিত স্বপ্নের শত বছরের সুখ।
রক্তিম নদী পেরিয়ে আমরা বিজয় পেয়েছি
নির্ঘুম রাতের ভয় এখন পুষ্পিত মহাকানন
স্বতন্ত্র পতাকা নিয়ে দুনিয়া মাতিয়ে চলি
আমাদের পরিচয় দুর্বিনীত দুনিয়ায় ওড়ে।
আমাদের রক্তরঙ শিল্পমানে সুউচ্চ চূঁড়ায়
এই রক্তে এঁকে চলি আমাদের বিজয়স্তম্ভ
সশস্ত্র সালাম দিই বিজয়ীবীরের আত্মায়
আনন্দ নদীর বুকে আমরা ভাসি মহাহিল্লোলে।
একবিকেল উচ্ছ্বাস দিয়ো
অনন্ত উচ্ছ্বাস চেয়ে আকাশের দিকে হাত বাড়াই
একপাহাড় নীল দিয়ে আকাশ ঘুমিয়ে যায়
নীরবতা ভেঙে তাকে ডাক দিলে
রাতের তারা জ্বালিয়ে আরও নীরব হয় আকাশ
রক্তিম সূর্যে আকাশ আবার জেগে ওঠে
আপন রঙে পৃথিবী রঙিন হয়ে যায়
সবুজেরা গাছে গাছে নীলেরা গহীন দূরে
শাদারা মাছের মতো নদীতে ঢেউয়ে ঢেউয়ে…
যে যার মতো সুন্দর যেমন তোমার চোখ
কী প্রসন্ন পদ্যাংশ তোমার চোখের দ্যুতি
কাজল খোয়াব হয়ে ধরা দেয় আমার বুকে
ওখানে উপচিয়ে পড়ে আমার সোনালি উচ্ছ্বাস
তোমার চোখের সামনে আমি হাত পেতে আছি
আকাশের মত তুমি নীল দিয়ো না ভরে
উচ্ছ্বাস মেখে কেবল একটা বিকেল দিয়ো
যেখানে সবুজ ঘাসে কেটে যাবে-
আমার অবসাদময় স্যাঁতসেঁতে অস্থির অয়োময়।