আলিমন নেছা মনি’র কবিতা
আমাদের গল্পগুলি
আমাদের গল্পগুলো রাতের পোশাক খুলে গোড়ালির নৃত্য হয়ে দাঁড়ায়
আমরা হাত রাখি- পরস্পরের উল্টোদিক,
বিষমবাহুর কোন বরাবর একটি দৈঘ্য
মধ্যবিত্ত অভাবের যতিচিহ্ন কপালের ঘাম মুছে দেয়।
বুক জুড়ে নামে অন্ধকার-
জোনাকিরা আলো জ্বেলে উড়াউড়ি করে
বাঁশপাতার ছাউনি ঘরে,
মাটির পিদিম জ্বলে টুইটুই নির্বিকারে
যেখানে ভালোবাসার রঙ ফিকে হতে হতে তামাটে হয়ে যায়।
তবুও আমরা ঘর বাঁধি আশায়
মন সাজানো ফুলের বাগানে ভ্রমরের গান শুনি
উড়ে যেতে দিই হলুদ প্রজাপতি—
যাতে ডানার চোখে আমাদের গল্পগুলি সজীবতা পায়।
কিন্তুু আমাদের স্বপ্নগুলি ঘুরে বেড়ায়
শূন্য দশমিক নামক গ্যালারীর ভেজা শ্যাওলাতে
যেখানে একেকটি শব্দ প্রত্যেকটি বিরহের সঙ্গীত শোনায়।
বর্ষণমুখর সন্ধ্যা
একটি বর্ষণমুখর সন্ধ্যা—
যখন গাছের পাতাদের ভেদ করে ঝরছিলো
পৃথিবীর মায়াকে উপেক্ষা করে-
তখন আমি ভাবছিলাম মোহনীয় সৌন্দর্যের কথা।
ঝরে পড়ার এতো সুর
এতো ভালোবাসাতে আমার ছায়া বিষন্ন ভগ্নহৃদয়
এগিয়ে চলেছে স্মৃতির টানে ক্রমবর্ধমান
যাকে খন্ডিত করেছিলো অতীত,
আর বর্তমানে সেই খুঁজছে হাজার হাজার গ্লানির অপমান।
চারিদিকে বাজনার আসর, গান গায় বৃষ্টিভেজা কাক
উড়ে যায় জোড়া ধানশালিক,
বাতাসে বাড়ে আমার দীর্ঘশ্বাসের স্পন্দন।
এ কঠিণ নাভিশ্বাসে ঝরে হাহাকার, ঝরে নরকের আগুন
যাকে ধারণ করেছে মাটির স্থুল করোটি, মাতৃভূমির জঠরে,
প্লাবিত করছে সাগর, প্লাবিত করছে হিমালয়।
আর আমি মূকবধির বলেই অনুবাদ করছি পোড়া জখম
পরিভাষায় রুপান্তরিত করতে চেয়েছি অমানুষের হৃদয়।
তোমাকেই ভালোবেসে
তোমাকেই ভালোবেসে বারংবার হাতে একেঁছি আলপনা!
গায়ে মেখেছি তিথি নবমীর আলো,
যার নীচে পুরুনো বৃক্ষের মতো শরীর দাঁড়িয়ে থাকে মৃতপ্রায়।
হাজার বছর ধরে ওরা দাঁড়িয়ে আছে, কোন পাহাড় যজ্ঞের সাধনায়,
নেহাৎ ভদ্ররলোক! কোন ষোড়শ শতকের পূর্নাঙ্গ যৌবনমতী নদীর কোলেপিঠের ঢেউ,
আছড়ে পড়ে নাবালিকা বঁধুর পায়।
বঁধুটির হাতের ছটি আঙুল, এঁকেবেঁকে আঁচর কাটে
বালুরাশির গর্ভে,
বির্দীন জলের মূর্ছনায় প্রতিটি দাগ,
শঙ্খচিলের ডানায় ভর করে নীলাকাশে হারিয়ে যায়।
আর আমার হাতের আলপনা ধুয়ে রক্ত পড়ে
কৈর্বত ঝর্নার মুখে
যে দিকে তাকাই, চোখে পড়ে শোক, সব শোকাবহ পরিনাম লালচে হয়ে দাড়ায় গোধূলির আভায়।
এ প্রহসন তোমাকে হারানোর শোক
এ রক্ত তোমাকে ভালোবাসার ক্ষত
এ আলপনা তোমাকে ভালোবাসার ভয়াবহতা।
তবুও আমার অবুঝ মন কড়া নাড়ে বিবেকের দাড়গোড়ায়।
তুমি ফিরবে, মেলানস্টিট, সল্টলেক বাতিঘরের উন্মুখ দরজায়,
হয়তো কোন সাধু সন্যাসীর বেশে ধ্যানমৌন
আর আমার তৃতীয় চোখ অপেক্ষা করছে তোমাকে দেখার আশায়।
পড়েছি। খুবই সুন্দর লেখা।
খুব ভাল লাগলো। আশা করি আরো এমন অনেক কবিতা পাবো সামনে। শুভ কামনা।