প্রণব মজুমদারের কবিতা
কালের মহড়া
পৃথিবী আজও ঘুমিয়ে নেই, নেই সে নিশ্চল
এখনও বাতাস বয়, চাঁদ হাসে ঝিলিক দেয়
সূর্য উদয় হয় আবার ঢেকে যায়, ঝড় আসে
বৃষ্টিতে ভিজে যায় সময়ের ক্লান্তিহীন সড়ক
ভূমণ্ডলে থাবা দিয়েছে কঠিন জীবাণু মড়ক
সর্বাঞ্চলে চলছে জীবনের এক নতুন মহড়া
অটবী, বিটপী, মৃত্তিকায়, জল, সমুদ্র পর্বতে
আকাশেও নেই যন্ত্রযান, নেই প্রকম্পিত শব্দ
নীলিমার নির্মলতায় অজস্র পাখির সমাগম
জলের জীবনগুলো উচ্ছ্বাসে জেগেছে প্রাণে
খোলা তীরে হৃদয় ছন্দে মিলছে ওরা সভায়
বন ছেড়ে দল বেঁধে পশুরা হাঁটে লোকালয়ে
মানুষের নগ্ন স্পর্শ ছাড়া স্বচ্ছ হয়েছে উদক
প্রাণের জন্যে গৃহকোনে সেরা প্রাণীর বিচরণ
বদলে গেছে অন্তর্মুখি ঘরের রূপ, মানব পুরুষ
এ যেন কালের ব্যতিক্রম অভূতপূর্ব এক মহড়া !
যদি ফিরে আসি
যদি ফিরে আসি বাংলার এ ভূমে আবার
মমতা ভালোবাসায় খুলে দিও মন দুয়ার
পুণজন্ম হয় যেন সুন্দরতম এই বাংলায়
সেরা প্রাণের পশুত্ব যেন আমায় না পায়
যদি ফিরে আসি এই ভবে আবার
অকাতরে ভালোবাসা দিয়ো বারবার
সবুজ মাঠে ফসলের হাটে পথচলা
প্রকৃতির প্রতি না যেন হয় ছলাকলা
জীবন বয়ে যাবে শান্ত নদীর মতো
নয় হিংসা হানাহানি- যা আছে যত
আসবোই ভূবনে আবার ক্রান্তিকালের পরে
পঙ্কিল নয়, মমতায় পূণ্য আলোর পথ ধরে।
জলসঙ্গ
নদী কী মন বোঝে ?
জলকে সে বুকে রাখে
মায়াময় স্নেহে
জলকেলির দীর্ঘায়িত ক্ষণে মানুষের স্পর্শ
সে অনুভব করে না
বোঝে কী সেরা দ্বিপদী জীবের কষ্ট ?
বর্ষাও বোঝে না বেদনার পক্তিমালা
তবুও নিমজ্জিত হই স্বচ্ছ বারি অবগাহনে
আপন বলতে কেউ নেই
বৃষ্টি নেই, তটিনী নেই
দুঃখ মোচনে তাই সুখানুভবে
সোহাগ করো নিজেকেই
ভালোবাসি আমি আমাকেই ।
বাইরে বারণ
মেয়ে তুমি হয়েছো বড়
বাইরে যেতে আছে বারণ
বিপদ তোমার পিছ ছাড়ে না
সকাল, দুপুর, বিকেল, রাত
যায় শংকায় অষ্টপ্রহর।
ঘরে থাকবে? শান্তি কোথায় ?
চিৎকার শব্দে নেই আর ঘুম
রাত বিরাতে নানা হানা
মেয়ে তুমি হয়েছো বড়
তোমার সম্ভ্রম দেই পাহারা
ভূখণ্ডে ভোগের মাতম
সুবিধাবাদীর হানাহানি
চাটুকারের দম্ভোক্তি
লম্পটের নগ্ন থাবা
মেয়ে তুমি হয়েছো বড়
লোকালয়ে নওতো স্বাধীন
তবুও বলি শত্রুমুক্ত
উন্নয়নে ভাসছে দেশ
যতই বলো – নওতো স্বাধীন
আজ পরাধীন !
“শত্রুমুক্ত” হবে কি শেষের কবিতাটিতে?
ধন্যবাদ পাঠের জন্য ! বাংলা ফন্ট এলোমেলো হয়ে যায় অনেক সময়। শুদ্ধ হবে শত্রুমুক্ত ! লেখক হিসেবে ভুলের জন্য দুঃখিত।