ছোটগল্প।। দেয়াল।। রাশিদা বেগম

শীতকালীন ছুটি। ইউনিভার্সিটি বন্ধ। এই সুযোগে শাওন কক্সবাজার চলে যায়। হোটেল সী আলীফে উঠে সে। কক্ষ নং ৬০৩। রুম গুছিয়ে ফ্রেশ হয়ে বাইরে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নেয়। বিকাল চারটা বাজে। সী- ভিউ দেখার উত্তম সময়। এ সময় জনসমাগমও হয় বেশি। দরজায় লক দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতেই দেখে মিডল এজের এক মহিলা। তার পাশের রুমেই উঠেছে। তিনিও সাজগোজ করে বাইরে যাচ্ছেন। শাওন চোখ ফেরাতে পারে না। লাইট গোলাপি রঙের কাতান শাড়ি পরেছে সে। মাথার চুলগুলো ঝরনাধারার মতো কোমর পর্যন্ত স্বাধীনভাবে পড়ে আছে। হাঁটায় হাঁটায় সমুদ্রের জলরাশির মতো বারবার দুলে উঠছে তার অবাধ্য সিল্কিচুলগুলো।
তার মুখ দেখার জন্য শাওন দ্রুত পা ফেলে। একটু সামনে গিয়ে ফিরে তাকায়। কবিতার মতো কোমল ত্বক ভারি মসৃণ। গৌরবর্ণ তার গায়ের রং। চোখদুটো মায়ায় ভরা। বড়ো বড়ো চোখে মাশকারার আঁচড়। মাশকারার ভারে আনত চোখদুটো যেন তাকে কাছে যাওয়ার নিমন্ত্রণ করছে। কী তার রূপের মহিমা! সে ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে উঠে। সে অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ে। বন্ধুত্বের প্রস্তাব দেবে কি? তিনি কি সহজভাবে নেবেন? কেমন তার মন মেজাজ সেতো জানে না। এত ভেবে কিছু হবে না। তার অদম্য ইচ্ছাকে চাপা সে দিতে পারবে না। মনেমনে সে সাহস সঞ্চয় করে। মহিলার পায়ে পায়ে চলতে থাকে। সাহস করে বলে, ‘এক্সকিউজ মি।’
মহিলা এবার দৃষ্টি দেয় তার দিকে। সে বলে, ‘আমার পাশেই উঠেছেন। তাই না?’
‘আপনি কত নম্বরে উঠেছেন?’
‘ছয়শত তিন।’
‘ও আচ্ছা।’
‘কতদিন আছেন?’
‘একসপ্তাহ থাকব। আপনি?’
‘চারদিন থাকার ইচ্ছা। ভালো লাগলে বেশিও থাকতে পারি।’
‘কোথায় থেকে এসেছেন?’
‘ঢাকা থেকে।’
মহিলা বিস্ময় প্রকাশ করে বলে, ‘তাই! আমিও ঢাকা থেকে।’
‘আপনার নাম?’
‘জেনিফার’
‘আমি শাওন। থার্ডইয়ারে পড়ছি। আপনি কী করেন?’
‘প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে আছি।’
‘কোথায় যাচ্ছেন?’
‘সুগন্ধা সী-বীচে।’
কথা বলতে বলতে তারা সী-বীচে চলে আসে। শত শত মানুষের ভিড়। জেনিফার প্রথমেই ব্যস্ত হয়ে উঠে ছবি তোলার জন্য। মোবাইলটা শাওনের হাতে দিয়ে বলে, ‘কয়েকটি ছবি তুলে দিন।’
বালিতে বসে, দাঁড়িয়ে, পানিতে ভিজে নানাভঙ্গিতে সে অনেক ছবি তোলে। তারপর শাওনকে ডেকে দুজনে সেলফি তোলে। জেনিফারের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে শাওন সার্থক হয়ে উঠে। শাওন নিজের মোবাইলেও ছবি নেয়। জেনিফার ক্লোজ হয়ে দাঁড়ায়। তার বাহু, কাঁধ লেগে থাকে তার শরীরে। শাওনের মনে বসন্তের বাতাস দোল খেয়ে যায়।
ভালোলাগার একটি জোরালো অনুভূতি তার হৃদয়ের সূক্ষ্মতন্ত্রীতে নড়ে উঠে। জেনিফার তাকে জিজ্ঞেস করে, ‘ভিজবেন? আসুন ভিজি।’
এমন সুখকর প্রস্তাব প্রত্যাখানের সাধ্য কোথায় শাওনের? স্বাচ্ছন্দে গ্রহণ করে সে। একটি ছোট বালকের কাছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখে তারা পানিতে ভেজে। পাশাপাশি দুজন দাঁড়িয়ে আছে। শরীরের অর্ধেক পানিতে ডুবিয়ে হাত পেতে আছে। এক একটা ঢেউ এসে তাদের উপর আছড়ে পড়ে। ঢেউয়ের গর্জনে তারা একে অপরের উপর পড়ে। আবার নিজেদের সামলে নেয়। দুরন্ত, অশান্ত ঢেউয়ের তর্জন, গর্জন তাদের দুজনের মনেও গর্জে উঠে। জেনিফারের হাজব্যান্ড দুবছর আগে মারা গেছে। আজ একজন পুরুষের সান্নিধ্য তার মনে প্রবলভাবে ঝড় তোলে।
শাওন দীর্ঘদেহী। সুঠাম দেহ তার। উজ্জ্বল গায়ের রং। চোখে মুখে তার সততার ছাপ। দেখতে ইনসেন্ট লাগে তাকে। একটু বেশি চটপটে, চতুর ছেলে শাওন। তার প্রতি জেনিফার দুর্বল হয়ে পড়ে।
জেনিফারের আসকারা পেয়ে শাওনের দুষ্টুমি প্রকট হয়। সে পানি ছিটায় তার গায়ে। হাত ধরে সামনে এগোয়। কিন্তু তার একটি বাজে স্বভাব হলো সে বহু মেয়ের সাথে সম্পর্ক করেছে। বিয়ে করার জন্য কারো সাথে মিশে না। এটা তার একটা খেলা।
বাতাস আজ খুব প্রবল। ঢেউ তাই জোরেসোরে আসে। জেনিফার সে ঢেউয়ের ধাক্কায় নিজেকে ঠিক রাখতে পারে না। সে কিছুটা ভেতরে চলে যায়। তা শাওনের দৃষ্টি এড়ায় না। ব্যতিব্যস্ত হয়ে শাওন তাকে জড়িয়ে ধরে। ঢেউয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে উঠে আসে। ভিজে দেহ তাদের। তবু ভয়ে ভীত দুজন এভাবেই হোটেলে চলে যায়।
রাতে শাওনের ঘুম হয় না। তার চোখে ভেসে উঠে সমুদ্রের ঢেউ। সে ঢেউ জেনিফারকে কেমন বেসামাল করে তুলেছিল। ভেজা শরীরে তাকে সুন্দর লাগছিল। কী সুন্দর তার দেহগঠন। বয়স তাকে একটুও টলাতে পারেনি। শাওনকে সে পাগল করে দিয়েছে। তার সাথে তার খুব কথা বলতে ইচ্ছে করে। মনটা কেমন উসখুস করতে থাকে। নম্বর নেই তার কাছে। সে তার দরজায় গিয়ে নক করে। জেনিফার দরজা খুলে বলে, ‘ভেতরে আসুন।’
শাওন জানে এ নিতান্তই ভদ্রতা। এমন রাতে গেলে কেউ দেখলে মান যাবে। সে বলে, ‘না। আসব না। নম্বরটা দিন। কথা ছিলো।’
নম্বরটা এনেই সে ফোন করে।অপরপ্রান্ত থেকে জেনিফারের কণ্ঠ ভেসে আসে। সে বলে, ‘বলছি।’
‘ঘুম আসছে না।’
‘আমার ও একই অবস্থা।’
‘আপনার কথাই বার বার ভাবছি।’
‘আপনার কেন এমন হচ্ছে?’
‘আপনাকেই মনে করছি।’
‘কী সাংঘাতিক মনের গতি! সমুদ্র নয় পরস্পরকে খুঁজছি আমরা। আজ যদি আপনার কিছু হয়ে যেতো?’
‘ভয় পেয়ে গেছি আমি।’
‘অথচ ঢাকা থেকে একা এসেছেন।’
‘শখ করে নয়। দুবছর হলো হাজব্যান্ড মারা গেছে। তাই।’
‘সরি।’
‘ঘুমান। রাত হয়েছে।’
‘ওকে বাই’
বাকি রাতটুকু জেনিফারের ঘুম হয়নি।সে গভীর সমুদ্রে তলিয়ে যেতে পারতো।শাওন তাকে বাঁচালো। কী পরম মমতায় তাকে জড়িয়ে ধরেছিল। তাকে তার ভালো লাগতে শুরু করে। সে বুঝেছে যে মানুষের জীবনে একজন সঙ্গী দরকার হয়। শাওন না থাকলে সমুদ্র দেখার আনন্দটাও বিরস লাগতো। তার সঙ্গ তার খুব ভালো লাগছে। রাতে সমুদ্রের রূপ মন কেড়ে নেয়। কাল সে শাওনকে নিয়ে সেই রূপ প্রত্যক্ষ করবে। অশেষ মুগ্ধতা নিয়ে তারা উপভোগ করবে রাতের সমুূ্দ্র ও তার ঢেউ।
সকালবেলা শাওন রেস্টুরেন্ট থেকে দুজনের জন্য নাস্তা নিয়ে আসে। জেনিফারকে নিজ রুমে এনে তারা খেতে থাকে। খেতে খেতে তারা গল্প করে। জেনিফার বলে, ‘আজ রাতে আমরা সমুদ্র দেখব।’
‘আমিও ভাবছিলাম এটা।’
‘তাহলে রাত আটটায় যাব আমরা’
‘শিউর।’
জেনিফার পানির জন্য হাত বাড়ায়। শাওন গ্লাসটি তার মুখের কাছে ধরে। জেনিফার তাকায় তার দিকে। সে পানিটুকু খেয়ে ফেলার ইঙ্গিত করে। সে খেয়ে শাওনের হাত ধরে গ্লাসটি নামিয়ে দেয়। তার কোমল হাতের স্পর্শ তাকে অস্থির করে তোলে। কিছু সময় সেই অনুভূতি তাকে স্তব্ধ করে রাখে।জেনিফার বোঝে তার চেহারা একটু অস্বাভাবিক লাগছে। সে বলে, ‘রুমে যাই। পরে কথা হবে।’
রাত আটটায় তারা লাবণী সী-বীচে যায়। দুজন পাশাপাশি দাঁড়ায়। চোখ তাদের সমুূ্দ্রে। জোরে বাতাস বইছে। উড়ছে জেনিফারের চুল। একগোছা চুল চোখেমুখে এলোপাথাড়ি নড়ে উঠছে। উড়ছে শাড়ির আঁচল। শাওন মাঝেমধ্যে তাকে দেখে নেয়। কিন্তু মনোযোগ তাদের সমুদ্রে।
সমুদ্রের মাঝামাঝি লম্বালম্বিভাবে বিশাল ঢেউ আট-দশ ফিট উপরে উঠছে, তারপর দুপাশে ভেঙে পড়ছে। ভেঙে পড়ার এই রূপ সবাইকে আহত করে। স্বল্প সময়ের জন্য তারা কোথায় যেন হারিয়ে যায়। মনেহয় সমুদ্র বরাবর লাইট জ্বলছে। শাওন আবেগ ধরে রাখতে পারে না। তার কণ্ঠে শোনা যায় হু হু আনন্দ চিৎকার। জেনিফার বলে উঠে, ‘ওয়াও! কী দেখছি আমি? চারপাশে অন্ধকার আর মাঝখানে লাইটিং। খুব ভালো লাগছে আমার।শাওনের হাত টেনে বলে, ‘ইচ্ছে করছে ঢেউয়ের ভেতর হারিয়ে যেতে।’
‘তারপর কোথায় পাব তোমায়?’
‘দুজনই হারাব।’
‘না। এ কাজ হতে দেবো না।’
‘ইশ্ কী আশ্চর্য রূপ! শুধু দেখে যেতে ইচ্ছে করে।’
‘চলো দুজন এখানে ঘর বাঁধি।’
‘মন্দ হয় না। ভালোলাগার, ভালো থাকার এমন উৎস আর কোথায় পাবে?’
‘আমি, তুমি আর সমুদ্র হলে ভালো কাটবে আমাদের। তাই না?’
‘হ্যাঁ। একদম।’
‘মিথ্যে আশ্বাস নাতো?’
‘আরে না। তুমি চাইলে এখনই বিয়ে করব।’
‘এখানে নয়। ঢাকা গিয়েই আমরা বিয়ে করব।’
‘শিউর।’
শাওন তার হাত দুটি ধরে সামনে এগোয়। যে পর্যন্ত পানি এসে তাদের পা ছুঁয়ে যায় সেখানে দুজন দাঁড়ায়। পনেরো মিনিট ঠাণ্ডা পানিতে তারা দাঁড়িয়ে থাকে। শাওন দেখে ঢেউয়ের উচ্ছ্বলতা,শক্তিমত্তা। কখনও ভাবে জেনিফার এমন ঢঙ করছে তার সাথে। জেনিফার বলে, ‘অনেক দেখেছ। এবার চলো।’
কিন্তু জেনিফার পা তুলতে পারছে না। ভিজে বালিতে জুতা আটকে গেছে। শাওন তার জুতা টেনে উঠায়। তার পায়ে পরিয়ে দেয়। তারপর তারা হনহন করে হোটেলে চলে যায়।
রাতে জেনিফার ফোন করে শাওনকে। তার মাথা ব্যথা করছে, সে যেন যায়।শাওন দেরি না করে রুমে যায়। কাছে বসে জিজ্ঞেস করে, ‘ব্যথা কি খুব বেশি?’
‘হ্যাঁ।’
‘এমন আগেও হয়েছে?’
‘প্রায়ই হয়। মাথা টিপে দাও।’
শাওন দীর্ঘ সময় তার মাথা, কপাল টিপে দেয়। তারপর তার ঘুম ঘুম ভাব হয়। শাওন বলে আসব?’
‘একটু বসো।’
‘কেউ দেখলে মাইন্ড করবে।’
‘করবে না।’
শাওন তবু নিশ্চিন্ত হতে পারে না। জেনিফার ঘুমিয়ে পড়লে সে সন্তর্পণে দরজা মিশিয়ে চলে আসে রুমে।
পরেরদিন সকালে তার ফোন আসে।তার মায়ের ফোন। সে জিজ্ঞেস করে, ‘কেমন আছ, মা? বাড়ির কী খবর?’
‘তুমি কোথায়, শাওন?’
‘কক্সবাজার এসেছি।’
‘বাড়ি চলে এসো। তোমার বাবা বেশি অসুস্থ। শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। তোমাকে আসতে বলেছে।’
‘ঠিক আছে মা। রাতের গাড়িতেই আসছি। রাখো।’
তার ঢাকা যাবার কথা জেনিফারকে বলে। শুনে সে আকাশ থেকে পড়ে। ক’টা দিন থাকলে ভালো লাগতো।শাওন চলে গেলে ভালো লাগার বদলে বিষণ্নতা ঘিরে ধরবে। তাই সে বলে, ‘তাহলে আমিও চলে যাব। টিকেট নিয়ে এসো। সৌদিয়ার টিকেট কাটবে।’
‘ঠিক আছে।’
রাত দশটায় বাস ছাড়ে। ঢাকা পৌঁছাতে ছয়টা বাজবে। জেনিফারকে পৌঁছে দিয়ে রওয়ানা হবে কালিগঞ্জ।
রাতে তারা বাস জার্নি করে। সারারাত জেনিফার শাওনের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমায়। শাওনও জড়িয়ে থাকে তার সাথে। বাবার অসুখের কথাও মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে। কিছু যদি হয়ে যায় বাবার! এমনভাবে তাকে যেতে বললো কেন?
সকালে বাস পৌঁছালে জেনিফারকে বাসায় পৌঁছে দেয়। জেনিফার বলে, ‘বাবার শারীরিক অবস্থা কী হয় জানাবে।’
‘জানাব। আসি।’
‘টেক কেয়ার।
‘সি এগেইন’।
সকাল দশটায় শাওন বাড়ি পৌঁছায়। তার বাবার সাথেই প্রথম দেখা করে।বাবার হাত টেনে ধরে বলে, ‘কেমন আছ, বাবা? কেমন লাগছে?’
‘ভালো লাগে না। শ্বাস নিতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তুমি আমার একমাত্র ছেলে।সংসারটাকে আগলে রেখো।’
‘এভাবে বলছ কেন? তোমার কিছু হবে না।’
‘আমার ইচ্ছা তোমার বউ দেখার। তোমার মা মেয়ে ঠিক করেছে। বিয়ে করে ফেল।’
‘আচ্ছা বাবা তাই হবে। আর কথা বলো না। কষ্ট হচ্ছে।’
বাবার ইচ্ছা পূরণে রাজি হয়ে গেল।জেনিফারের কথাটা মাকে বলে দেখবে? মা যদি কষ্ট পায়? তারচেয়ে ভালো নিজের ইচ্ছার মৃত্যু ঘটুক।
গ্রামের সাদামাটা মেয়ের সাথে তার বিয়ে হয়ে গেল। সে বদরুন্নেসায় অর্থনীতিতে অনার্স প্রথমবর্ষে পড়ে।দেখতে মোটামুটি। আগেও তাকে দেখেছে। বেশ শান্ত, ভদ্র। এ কারণেই তার মায়ের পছন্দ। বাবারও ইচ্ছা পূরণ হলো।
জেনিফার একের পর এক ফোন দিয়ে যাচ্ছে। ফোন বন্ধ দেখায়। সে ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়ে। বিয়ের তিনদিন পর শাওন তাকে ফোন করে। জেনিফার ফোন ধরে স্বস্তি ফিরে পায়। সে বলে, ‘ভীষণ চিন্তায় ছিলাম। ফোন বন্ধ কেন?’
শাওন ভাবে চিন্তা তো আরও বাড়বে। গোপনই করবে কীভাবে। ধরা পড়ে যাবে। মেয়েরা পুরুষের ভালোবাসায় ঘাটতি থাকলে বুঝতে পারে। তবে তার সাথে সে মিথ্যা বলতে পারবে না। সে বলে, ‘বাবার শরীর খুব খারাপ। একটি কথা তোমায় বলা দরকার। কিন্তু সাহস পাচ্ছি না।’
‘থামলে কেন বলো।’
‘বাবার ইচ্ছা বিয়ে করি এবং তার পছন্দের মেয়ের সাথে। বিশ্বাস করো মেয়েটিকে আমার ভালো লাগে না। তবু পরশু বিয়ে হয়ে গেছে।’
অপর প্রান্ত থেকে জেনিফারের কথা আর আসে না। কান্নার শব্দ শুনতে পায় শাওন। সে বলে, ‘বিয়ে একটি সামাজিক ব্যাপার। সেটুকুই রক্ষা করব। আমি তোমারই আছি তোমারই থাকব।
এবার জেনিফারের বুকভাঙ্গা কান্নার শব্দ ভেসে আসে। তীব্র চিৎকার ধরে রাখতে পারে না। ফোন ছেড়ে শুয়ে পড়ে বেডে। কাঁদতে কাঁদতে অলসভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে। চোখে তন্দ্রা ভাব। শাওন আর তার মাঝে সে দেখতে পায় এক কালোছায়া।

One thought on “ছোটগল্প।। দেয়াল।। রাশিদা বেগম

  • ডিসেম্বর ৩১, ২০২০ at ১২:৩৯ অপরাহ্ণ
    Permalink

    একটি দুর্দান্ত চমৎকার ছোটগল্প আপনি উপহার দিয়েছেন। লেখিকাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *