কবি ফারুক মাহমুদের জন্মদিনে কাব্যশীলনের শুভেচ্ছা
ফারুক মাহমুদ একজন প্রেমিক কবি
‘নৈঃশব্দ্যের মুখরতা (মাঝে মাঝে) মন্দ কিছু নয়
জলের ঠোঁটের হাসি, মাঠে মাঠে সবুজ হাওয়া
ভালো নয়- কোন মুখে বলি
যার জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষা আমার’
বাঙালি কবিরা সাধারণত পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন বছরের ভেতর নিজের সত্তা হারাতে শুরু করেন। এসময়ে এসে ষাট- সত্তুর দশকের দিকে তাকেলে অনেকটা বোঝা যায় কিন্তু কবি ফারুক মাহমুদ ব্যতিক্রম। তিনি পঞ্চাশ বছর ধরে কাব্যচর্চা করে যাচ্ছেন যথেষ্ট কাব্যমনস্ক এবং সৃষ্টিশীলতার মধ্য দিয়ে।
‘কে লিখেছে? তারচেয়ে বেশি মুগ্ধ চিঠির ভাষায়
আলো চোখ অশ্রু গন্ধ সবকিছু অমূল্য সুন্দর।
রিক্ত উৎকণ্ঠায় ফেলে প্রকৃতির আড়াআড়ি ভাঁজে
সমুদ্র পেয়েছে প্রাণ, নদীরেখা উল্লাসমুখর…’
তিনি মুলত একজন প্রেমিক কবি। বাংলাদেশের সত্তরের প্রজন্মের চার-পাঁচজন অগ্রগণ্য কবির একজন ফারুক মাহমুদ। কবিজীবনের গোড়া থেকেই তিনি কবিতার প্রকরণ ও ছন্দ বিষয়ে খুব যত্নবান। এই শৃঙ্খলা তার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করেছে। তার কাব্যমেজাজ তৈরি হয়েছে গভীর জীবনদৃষ্টি ও কবিশোভন জীবনদর্শ ঘিরে। শুধু কি তাই, প্রেম-ভালোবাসা, নিঃসঙ্গতা, স্মৃতি, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কিংবা শূন্যতা নিয়েও লিখেছে প্রচুর। আজ এই প্রেমিক কবির জন্মদিন।
তিনি ১৯৫২ সালের ১৭ জুলাই কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে ফারুক মাহমুদ বিচিত্র পেশায় জড়ালেও এখন পুরোদস্তুর সাংবাদিক। তিনি দৈনিক আমার দেশ-এর সহকারী ও সাহিত্য সম্পাদক।
ফারুক সুমন এপর্যন্ত রচনা করেছেন ১৫টির মতো কাব্যগ্রন্থ। এর মধ্যে অন্যতম- পাথরের ফুল, অনন্ত বেলা থেকে আছি, অপূর্ণ তুমি আনন্দ বিষাদে, অন্ধকারে মুগ্ধ, হৃদয়ে প্রেমের দিন, রৌদ্র এবং জলের পিপাসা, মহাভারতের প্রেম, ও স্মৃতিমেঘ ও স্মৃতিরোদ প্রভৃতি। তিনি ২০০৯ সালে সুকুমার রায় সাহিত্য পদকে ভূষিত হন।