গদ্য।। বিখ্যাত লেখকগণ বই লেখার সময় চিন্তা করেন স্থায়িত্ব নিয়ে।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী
মনে তো হয় পৃথিবীর বিখ্যাত লেখকগণ একটি বই লেখার সময় হয়তো চিন্তা করতেন বা করেন এর স্থায়িত্ব নিয়ে। তারা হয়তো ভাবতেন বা ভাবেন অন্তত এক শতাব্দী টিকে থাক একটি বই। আমরা সাধারণ লেখকরা চিন্তা করি একটি মেলার সময় পর্যন্ত। এ কারণেই এক মেলা শেষ হলেই সেই বইটি পুরোনো হয়ে যায় অর্থাৎ বাতিলের খাতায় উঠে যায়। কী বিস্ময়কর ব্যাপার! মেলাকে ধরার জন্য যত তাড়াহুড়ো, যত প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যায় তা অন্য দেশের লেখকদের মধ্যে আছে কি না জানি না। থাকার কথা নয়। কারণ, অন্য দেশে এত দীর্ঘ সময়ের মেলার খবর আমাদের অগোচরে। বই প্রকাশিত হলেই লেখকের কাজ শেষ হয়ে যায় না। তারা নামে ক্যামেইনে। মেলার সময় প্রতিটি দিন মেলায় গিয়ে ক্যামেইন করেন প্রচ্ছন্নভাবে বা প্রকাশ্যে। অদৃশ্য অস্থিরতায় লেখকদের আহার নিদ্রা হারাম। লেখকদের এ-রকম অস্থিরতা অন্য দেশে কি আছে? মনে হয় নেই। তারা ভালো লেখা নিয়ে চিন্তা করেন, পড়েন, প্রস্ততি নেন তারপর হয়তো লিখেন। সময়ের পিছনে দৌড়ে লেখা তৈরি করেন না।
এমন প্রতিযোগিতাকে কি অসুস্থ প্রতিযোগিতার কথা বলা যায়? এখানেও কি জিপিএ ৫-এর দৌড় প্রচ্ছন্নভাবে রয়েছে? যদি এমনিই হয় তাহলে আমরা কেন শিশুদের অসুস্থ প্রতিযোগিতার কথা বলি। কেন বলি অসুস্থ প্রতিযোগিতায় শিশুদের প্রকৃত মেধার বিকাশ ঘটছে না?
ভাবি, সত্যি কথা বলতে কী, উপসংহারে পৌঁছাতে পারি না।
বইমেলার পরই শুরু হবে ঈদসংখ্যার লেখার খসড়া তৈরির কাজ। লেখকের কোথায় অবসর? কথাসাহিত্যিকদের অবস্থা সত্যি ভয়ানক খারাপ। পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখতে হয়, প্রুফ দেখতে হয়, তারপর একটি লেখা তৈরি হয়।
‘যে দেশের যে বাও, নাও মাথাত দিয়া পাতলা বাও।’ এদেশের মানুষ হিসেবে মেনে তো নিতে হবে।