ছড়া

গুচ্ছ ছড়া হাফেজ আহমেদ

গ্রীষ্মকাল

নূপুর পায়ে দুপুর এলো
গ্রীষ্ম কালের বাতাসে
টিনের চালে তুলছে নাচন
কোন বাগানের পাতা সে

শুকনো পাতার নূপুর বাজে
ঝুম ঝুমা ঝুম সুরেতে
সেই সুরেতে ঘুম হারালো
কোন সে জগৎপুরেতে

তপ্ত রোদে ক্ষিপ্ত দুপুর
শরীর সারা ঘেমেছে
আকাশ বেয়ে রোদের সিঁড়ি
সবুজ পাতায় নেমেছে।

হঠাৎ করে সূর্য ঢেকে
মেঘ নামালো অন্ধকার
খোকার কথা ভেবে মা আজ
দু’হাত তোলে বন্দনার

শুরু হলো দমকা হাওয়া
গাছের ডালে তুলছে দোল
আকাশ ডাকে গুড়ুম গুড়ুম
ব্যাঙের মুখে ফুটছে বোল।

শুভ্র শরৎ

সকাল হাসে দূর্বাঘাসে
শিশির কণার ঝিলিকে
শুভ্র কেশে শরৎ এসে
রাঙিয়ে যায় লিলিকে।

মিষ্টি শরৎ সৃষ্টি করে
ঘাসের ডগায় মুক্তা’র
সাদা মেঘের ভেলায় উড়ে
মনের যত সুখ তাঁর।

জুঁই চামেলি শিউলি আর
কাশফুলেরা দোলে
সারস পাখির ডানায় চড়ে
শরৎ রানীর কোলে।

আমন ক্ষেতে কোমল হাসি
তালের গাছে তাল
ভরা নদীর শান্ত ধারায়
উড়ায় মাঝি পাল।

আকাশ জুড়ে ঘুড়ির মেলা
বইছে উঁচু নিচু
মেঘ বালিকার লুকোচুরি
রোদের পিঁছুপিঁছু।

হেমন্তকাল

হেমন্তের এই নবান্নতে মন্ত্র পড়ে কে সে?
পিঠাপুলির দেশে
সোনার ফসল মাথায় নিয়ে কে যায় হেসে হেসে?

এই ফসলে নতুন শাড়ি স্বপ্ন দেখে বধু
গিন্নি রাঁধে কদু
বিন্নি ধানের ফিরনি খেতে লাগে কি যে মধু!

সোনা রোদের আগমনে নীল কুয়াশার ছুটি
বকের ঠোঁটে পুটি
লাউ দুধুল ঝুলছে মাচায় ক্ষেতে মটরশুঁটি।

হিম বাতাসে ঝিম ধরেছে শিরশিরিয়ে শিরায়
বাত এসেছে গিরায়
দিনেদিনে বাড়ছে যে শীত কে তারে আর ফিরায়।

বিড়ির আগুন

শনশনে শীত কনকনে মন
টনটনে তাঁর দেহখান
কই মাছের এই জিন্দা প্রান
সকাল বিকেল আগুন পোহায়
রাতের বেলায় বিড়ির টান।

মাঘের শীতে বাঘ পালালো
বুড়োর বুকে ধুক্কুর
মারছে কাশি হুক্কুর
বুড়ি বলে বাপধন আমার
কই গেলিরে শুক্কুর?

বিড়ির আগুন পনপনিয়ে
লাগলো চনের ঘরেতে
মরলো বুড়ি ডরেতে
সব হারিয়ে একলা বুড়ো
ভুগছে কঠিন জ্বরেতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *