জগলুল হায়দার এর গুচ্ছছড়া

রিকশা ডাইলেমা

ফুটপাত আর রিকশা দেশে
আজো একই ডাইলেমা
আমরাও বেশ ভাগ হয়ে যাই
এসব ইস্যু পাইলে মা!

রুজি ছেড়ে তারা কোথাও
যাইতে পারে চাইলে মা-
হঠাৎ এমন গজব তাদের
যায় কি দেয়া তাইলে মা?

এসব নিয়া ভেবো না হয়
উন্নত দিন আইলে মা
লস কি এখন গরিব লোকে
খাইটা হালাল খাইলে মা?

মজা খাই

নানান রকম খাবার দেশে খাইতে মজা পাই তো
রোজ কতো কি খাদ্য সবাই সকাল বিকাল খাই তো।
কিছু খাবার খাচ্ছি কিনে কিছু আবার মাগনা
কিছু খাবার ভাগ করে খাই কিছুর মোটেও ভাগ না।

মায়ের হাতের আদর খাই আর বাপের গরম বকা তো
ভাইয়ের ধোঁকা খেয়েও মজা, মজায় কি আর ঠকাতো।
স্যারের হাতের গাট্টা খেয়েই ফলে ফলে ফলত
এই দুনিয়ায় তোমার আমার মানুষ হওয়া হল তো।

গীবতে সব হুমড়ি খাই আর মিথ্যাতে খুব রুচি তো
লজ্জার সব মাথা খাই তয় নয় তা খাওয়া উচিতও।
সিনেমা গান বই খাই আর বোধ খাই সব বিবেকে
ঘুষের খাবার সামনে এলে দূরসে ঠেলে দিবে কে?

বাসে কালো ধোঁয়া খাই আর ভিড়ের মাঝে ঠোয়া তো
চমক খেতাম বান্ধবী যেই এই হাতে হাত ছোঁয়াতো।
চলতি পথে জ্যাম খাই আর উন্নয়নেই টাসকি!
ঢাকার পথেই জল খেয়ে যাই আর খেতে মন চাস কি?

নবীর চোখের পানি

আরবজুড়ে আঁধার ছিলো বিশ্বজুড়ে ধাঁধা
মানবতা পুটলা করে ঘাড়েই ছিলো বাঁধা।
বুকের বিবেক লাশ করে সব পুড়তেছিলো চিতা
কন্যাশিশুর জ্যান্ত কবর দিচ্ছিলো তার পিতা।

সমাজজুড়ে হিংসা ছিলো প্রেম ছিলো না মোটে
সত্য কিতাব-বাণীর বসত আর ছিলো না ঠোঁটে।
গোত্রে গোত্রে লড়াই ছিলো রক্তে হোলি খেলা
অশ্লীলতায় ভরা ছিলো ভুলের ওকাজ মেলা।

সুদের বাজার গরম ছিলো মানুষ যেতো পিশে
দাসপ্রভুদের অত্যাচারে দাস পেতো না দিশে।
নারী নিছক পণ্য ছিলো লাগতো খালি ভোগে
তওহিদ ছিলো নির্বাসনে পুতুল পূজার রোগে।

ঠিক তখনই চাঁদের উদয় এমন তিমির রাতে
পূর্ণিমা যে নেমে এলো মা আমেনার হাতে।
সেই খবরই ছড়িয়ে গেলো মুহাম্মদের নামে
মরুর তারাও দেখতে তাকে সেই আকাশে থামে।

আসলো নবী হাসলো ধরা ভাসলো ভোরের আলো
হাজার বছর প্রতিক্ষাতে দূর হলো সব কালো।
সেই মুহাম্মদ সবার প্রিয় মরুদ্যানের পাখি
প্রাণে প্রাণে বেঁধে দিলেন শাহাদাতের রাখি।

কিন্তু কিছু শয়তানি কীট লাগলো তারই পিছে
আবু জাহেল আবু লাহাব নয় তো এসব মিছে।
আরো নানা স্বার্থ এসে যোগ দিলো সেই দলে
এতিম নবীর বুক পোড়ে আর চোখ ভেসে যায় জলে।

মক্কা তাকে দুঃখ দিলো তায়েফ দিলো দাগা
তবুও নবী বিলিয়ে গেলেন ভালোবাসার ভাগা।
কায়েম গেলো ভয় পেয়ে তাই ধরলো তাকে চেপে
আঘাত পেয়েও পাল্টা আঘাত দেননি তিনি ক্ষেপে।

মক্কা থাকা দায় হলো তাই ইয়াসরিবের পথে
ন্যায়ের মিছিল চললো শেষে দৃপ্ত দামাল রথে।
শান্তি দাতার আগমনে নূর মদিনা নাচে
নবীর আবেহায়াত নিয়ে তৃষিতজন বাঁচে।

মদিনাতে উম্মাহ হলো, সনদ হলো লেখা
ইহুদি আর খৃস্টানও পায় তাতেই পথের রেখা।
নবী হলেন রাষ্ট্রনায়ক সবার ভালোর তরে
যদিও তারা শেষকালে বেশ গাদ্দারিটাই করে।

কোরেশ কিন্তু হাল ছাড়েনি যুদ্ধ হলো বহু
বয়ে গেলো মরুর বুকে কত্ত মুমিন লহু।
খোদার বাণীর হার হলো না হারলো ওরাই শেষে
ফিরলো নবী মক্কাভূমি ফিরলো আপন দেশে।

হায় সে ফেরা! ইতিহাসে এমন কি আর আছে-
অস্ত্র ছাড়াই বিজয় হলো মক্কা নবীর কাছে।
শোধের বদল ছড়িয়ে গেলো নবীর ক্ষমার বাণী
মক্কা আহা! মক্কা আনে নবীর চোখে পানি।

One thought on “জগলুল হায়দার এর গুচ্ছছড়া

  • সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯ at ১:০০ পূর্বাহ্ণ
    Permalink

    কবিতাগুলো ভালোলাগলো।

    Reply

Leave a Reply to নজির আহমেদ Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *