শিশুতোষ গল্প।। হাতি।। আসাদ চৌধুরী
সন্ধ্যার সময়। হাতি তার বাচ্চাটিকে নিয়ে সময় কাটাচ্ছে। হাতির বাচ্চাটি হঠাৎ করে গান গেয়ে উঠল।
বাবা তাকে থামিয়ে দিলেন। বললেন, ‘দয়া করে এবার থাম তো দেখি। বাবা খবরের কাগজ পড়ার সময় মন দিয়ে গান শুনতে পারে না।’
বাচ্চা হাতি অবাক হয়ে শুধায়, ‘কেন বাবা, কেন পারবেন না।’
বাবা হাতি জবাব দেয়, ‘কারণ বাবা একসঙ্গে দুই কাজ করতে পারে না, এমনকি চিন্তাও করতে পারে না। বেচারা গান গাওয়া বন্ধ করে। বাবা একটা চুরুট ধরান। চুরুটে টান দিতে দিতে খবরের কাগজ পড়তে থাকেন।
সময় গড়িয়ে যায় নিজের নিয়মে। কিছুক্ষণ পরে বাচ্চা হাতি আবার জিজ্ঞেস করে, ‘বাবা, তুমি কি এখনও একই চিন্তা করছ?’
বাবা হাতিটি বলে, ‘বিলকুল ঠিক। ঠিকই বলেছ।’
ছেলে হাতি বলে, ‘এবার তাহলে খবরের কাগজ বাদ দিয়ে নিজের বাম পায়ের জুতার ব্যাপারে মন দাও।’
বাবা হাতি বলে, ‘বাপু রে, খবরের কাগজের সংবাদ অনেক বেশি জরুরি, আর অনেক মজার মজার বিষয়ও রয়েছে। বাম পায়ের জুতার মধ্যে এসবের বালাই নেই। বুঝলে?’
‘হতেও পারে। তোমার চুরুটের ছাই থেকে কাগজটা এখনও পুড়তে শুরু করেনি, তবে তোমার বাম পায়ের জুতা থেকে ধোঁয়া উড়ছে।’
বাবা তড়াক করে লাফ দিয়ে ওঠেন, আর জলভরা বালতির মধ্যে পা ডোবান। ছেলেটা আবার আস্তে আস্তে নরম সুরে গান গাইতে শুরু করে।
নীতিবাক্য : সাদামাটা চোখে যা দেখা যায়, জ্ঞান সব সময় তার জায়গা নিতে পারে না।