শিল্প-সংস্কৃতি

কবি ও কথাসাহিত্যিক ইলিয়াস ফারুকী’র জন্মদিনে কাব্যশীলনের শুভেচ্ছা

ইলিয়াস ফারুকী। পারিবারিক নাম সৈয়দ ইলিয়াস আখতার ফারুকী। জন্ম ১৯৫৯ ইং সালের ১৯ শে জানুয়ারি। বেড়ে উঠা পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়ার শহর চাঁদপুরে। বাবা আখতার আলী ফারুকী ছিলেন বস্র ব‍্যবসায়ি। মা নূরজাহান ফারুকী একজন গৃহীনি। এগার ভাই বোনের মধ‍্যে তিনি চতুর্থ। প্রাথমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত চাঁদপুরে। পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে জগন্নাথ কলেজ থেকে ভুগোলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন। এবং অনেক পরে (২০০১) ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিপননে এম বি এ। ইলিয়াস ফারুকী ১৯৭০ ইং তে নিজের উদ্যোগ ছোট একটা আলমারিতে পঁচিশ / তিরিশটা বই নিয়ে গড়ে তোলেন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন “একতা সংঘ”। ইলিয়াস পারভেজ নামে কবিতা লেখা দিয়েই ১৯৭২ সাল থেকে লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৭৬ সাল থেকে লেখায় পুরোপুরি মনোযোগী হন। ১৯৭৯ সালে “উঠোন” নামে একটি ছোট কাগজের প্রকাশক হিসেবে কাজ করেন। উঠোন প্রকাশের তিন মাসের মাথায় তিনি নিজে “জিগীষা” নামে একটি ছোট কাগজ সম্পাদনা শুরু করেন। একই সময় তৎকালীন সময় সাইক্লোস্টাইল ছাপার মাধ‍্যমে কবিতা পত্র প্রকাশ করেন। চাঁদপুর কলেজের ছাত্রাবস্থায় ছাত্র ইউনিয়ন কতৃক আহবানকৃত কবিতা লেখা প্রতিযোগিতায় কবিতা লিখে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। রাজনৈতিক ভাবে বঙ্গবন্ধুর অনুসারী। ১৯৭৯ সালে জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের কার্যক্রমে এতোটাই ভুমিকা নেন যে সে সময় লেখালেখি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮২ ইং তে চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিন্তু একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে ছেদ পড়ে। বাধ‍্য হয়ে ১৯৮৪ ইং তে তিনি চাকুরী নিয়ে সিলেট চলে যান। এই সময় তিনি পেশাগত কারণেই কবি আশরাফ আহমদ ও কথা সাহিত্যিক নাসরিন জাহান দম্পতির সান্নিধ্যে আসেন। এই সাহিত‍্যিক দম্পতির সংস্পর্শে থাকায় সীমিত পরিসরেই লেখালেখির চর্চা আবারো শুরু হয়। ১৯৯১ সালে পুরোদমে লেখালেখিতে ফিরে আসেন এবং ইলিয়াস পারভেজ নামেই বিভিন্ন জাতীয় পত্র পত্রিকায় কবিতা ও ছোট গল্প লিখতে থাকেন। ততদিনে তিনি রাজনীতি থেকে সরে এসে পুরোপুরি পেশাগত জীবনে। ১৯৯২ ইং সালে পেশাগত জীবনে পদোন্নতি পেয়ে ব‍্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় লেখালেখির হার আবারো কমে যায় কিন্তু চর্চা অব‍্যাহত থাকে। এ সময় তিনি জাতীয় পত্র পত্রিকায় লেখা কমিয়ে বিভিন্ন ছোট কাগজে লিখতে থাকেন। ২০১৫ ইং শেষের দিকে তাঁর জীবনে নতুন ঘটনা ঘটে। এই সময় থেকে তিনি “ইলিয়াস ফারুকী” নামে লেখা শুরু করেন। এই সময় তাঁর লেখা গানে এবং কন্ঠ শিল্পী আলম মাহমুদের সুরে ছয়টি গান সম্বলিত “জিগীষা” নামে একটি গানের সি ডি বের হয়। এই সি ডিতে মাকে নিয়ে একটি গান “চলে গেছে মা আমার বহুদুরে/আসবে না আর সে কখনো ফিরে গানটি ব‍্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। ২০১৬ সালে “আরশি” নামে তাঁর প্রথম কবিতার বই বের হয়। ২০১৬ সালের পহেলা এপ্রিল সেগুন বাগিচার সাগর-রুনি হলে গানের সি ডি “জিগীষা” ও “আরশি”র প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ষোল সালের শেষের দিকেই তাঁকে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি করে গঠন করা হয় “জিগীষা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ।” ২০২০ ইং সাল থেকে ওয়েব ম‍্যাগাজিন “কাব‍্যশীলনের সাথে পরিচালক হিসেবে সংযুক্ত হন। বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে তাঁর তিনটি কবিতার বই ও পাঁচটি ছোট গল্পের বই বেরিয়েছে। আগামী বই মেলাতেও তাঁর একটি ছোট গল্পের বই প্রকাশের অপেক্ষায়। সাহিত‍্যে অবদানের জন‍্য তিনি এ পর্যন্ত ব্রিলিয়ান্ট সোসাইটি কতৃক ছোট গল্পে “কবি নজরুল ইসলাম সাহিত‍্য পুরস্কার-২০১৮” এবং সাহিত্য মঞ্চ, চাঁদপুর কতৃক সাহিত‍্য সংগঠক হিসেবে “মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন সাহিত্য পুরস্কার-২০২১” অর্জন করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *