শিল্প-সংস্কৃতি

কবি ও গবেষক মজিদ মাহমুদ-এর ৫৬তম জন্মদিনে কাব্যশীলনের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন

কবি মজিদ মাহমুদ ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ এপ্রিল পাবনা জেলার চরগড়গড়ি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবা কেরামত আলী বিশ্বাস, মা সানোয়ারা বেগম। তিনি গোপালচন্দ্র ইনস্টিটিউট (জিসিআই) পাবনা, রাধানগর মজুমদার একাডেমি (আরএমএ) পাবনা, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ এবং ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা-সাহিত্যে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর। তাঁর লেখালেখির বাইরে সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা ও সমাজ সেবামূলক স্বাধীন পেশার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তিনি দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, সকালের খবর ও অর্থনীতি প্রতিদিন-কর্মরত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ ও ইউনিভার্সিটি অব অলটার্নেটিভ ডেভেলপমেন্ট-এ শিক্ষকতা করেছেন। সংগঠক হিসেবেও মজিদ মাহমুদের রয়েছে বিপুল সফলতা। তিনি ১৯৮৬ সালে পাবনায় ‘বন্দে আলী স্মরণ পরিষদ’ নামে একটি সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং তাঁর জন্মস্থান চরগড়গড়িতে শিশুদের জন্য একটি মডেল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া ওই প্রত্যন্ত গ্রামে তিনি আধুনিক মানের একটি গ্রন্থাগার গড়ে তুলেছেন। পাবনা সদর উপজেলার চরের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে প্রয়াত বাবার নামে গড়ে তুলেছেন কেরামত আলী উচ্চ বিদ্যালয়। ওসাকা নামে বেসরকারী একটি সংস্থারও তিনি প্রতিষ্ঠাতা। যে প্রতিষ্ঠানে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মজিদ মাহমুদ জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, রাইটার্স ক্লাব ও বাংলা একাডেমির সন্মানিত সদস্য। তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ (কিশোর কবিতা) ‘বৌটুবানী ফুলের দেশে’ প্রকাশ হয় ১৯৮৫ সালে। এছাড়া কাব্যগ্রন্থ মাহফুজামঙ্গল (১৯৮৯), গোষ্ঠের দিকে (১৯৯৫), বল উপাখ্যান (১৯৯৮), বৃক্ষ ভালোবাসার কবিতা (২০০০), নির্বাচিত কবিতা (২০০৫), কাঁটা চামচ নির্বাচিত কবিতা (২০০৫), ধাত্রী ক্লিনিকের জন্ম (২০০৬), অনুবিশ্বের কবিতা (২০০০৭), শ্রেষ্ঠ কবিতা (২০০৬), দেওয়ান-ই-মজিদ (২০১০), সিংহ ও গর্দভের কবিতা (২০১৩), সন্ত কবীরের ১০০ দোঁহা (২০১৪), কবিতামালা (২০১৫), গ্রামকুট (২০১৬) , কবীরের শত দোঁহা ও রবীন্দ্রনাথ (২০১৬), কাটাপড়া মানুষ (২০১৬), লঙ্কাবিযাত্রা (২০১৬) ও কাব্যসমুচ্চয় (২০১৯)। বর্ণমালায় বাংলা ভাষা(২০২০) গবেষণাগ্রন্থ: তৃতীয় বিশ্বের মুখপাত্র (১৯৯৬), রবীন্দ্র্রনাথ ও ভারতবর্ষ (২০১২) প্রবন্ধগ্রন্থ : কেন কবি কেন কবি নয় (২০০৩), নজরুলের মানুষ ধর্ম (২০০৪), ভাষার আধিপত্য ও বিবিধ প্রবন্ধ (২০০৫), উত্তর-উপনিবেশ সাহিত্য ও অন্যান্য (২০০৭), সাহিত্য চিন্তা ও বিকল্প ভাবনা (২০১০), নির্বাচিত প্রবন্ধ (২০১৪), ক্ষণচিন্তা (২০১৬), নতুন সাহিত্য চেতনা (২০১৮)। কথাসাহিত্য মাকড়শা ও রজনীগন্ধ্যা (১৯৮৬), সম্পর্ক (২০১৮), মেমোরিয়াল ক্লাব (২০২০)। সম্পাদনাগ্রন্থ : আশির দশক কবি ও কবিতা (১৯৯১), জামরুল হাসান বেগ স্মারক গ্রন্থ (২০০৩), রবীন্দ্রনাথের ভ্রমণ সাহিত্য (২০১০), মধুসূদন দত্তের শ্রেষ্ঠ কবিতা পুরস্কার সাহিত্যকর্মে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য মজিদ মাহমুদ এ পর্যন্ত অনেক পুরস্কার ও সন্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-কবি বন্দে আলী মিয়া সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৮; কবি মকবুল হোসেন স্মৃতি পুরস্কার ১৯৯৯; কবি মঞ্জুষদাশ স্মৃতি পুরস্কার ২০০৪; কবি মজিবুর রহমান বিশ্বাস স্মৃতি পুরস্কার ২০০৫; রবীন্দ্র-নজরুল সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬; জাতীয় প্রেস ক্লাব পুরস্কার ২০০৮; বেঙ্গলি কমিউনিটি সন্মাননা পুরস্কার, দিল্লি ২০১০; বেঙ্গলি রাইটার্স সন্মাননা, লন্ডন ২০১০; ‘কারুভাষ’ বিনয় মজুমদার সাহিত্য পুরস্কার ২০১১; অরণি সাহিত্য পুরস্কার ২০১১; পদক্ষেপ সাহিত্য পুরস্কার ২০১৩; সৌহার্দ ৭০ কোলকাতা পুরস্কার; অনরিদ্ধ ৮০ কোলকাতা পুরস্কার; হলদিয়া কবিতা উৎসব পুরস্কার- পশ্চিমবঙ্গ; ঈশ্বরদী জনকল্যাণ সমিতি সন্মাননা; শেরে বাংলা স্মৃতি পুরস্কার; নজরুল-গবেষণা পুরস্কার ও কথাসাহিত্যে বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার-২০২০।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *